ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দূরপাল্লার বাস নিয়ে চলছে লুকোচুরি খেলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০১৮
দূরপাল্লার বাস নিয়ে চলছে লুকোচুরি খেলা গাবতলী বাস টার্মিনাল

ঢাকা: রাজধানী থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার বাস চলাচলে চলছে অঘোষিত ধর্মঘট। এ নিয়ে মালিক ও শ্রমিক পক্ষ পরস্পরকে দোষারোপ করে দায় এড়িয়ে লুকোচুরি খেলছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন দূরপাল্লার বাসের যাত্রীরা।

শনিবার (০৪ আগস্ট) গাবতলী, কল্যাণপুর বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা স্থবির হয়ে পড়েছে দূরপাল্লার বাস চলাচল। তবে দিনে না চললেও রাতে কিছু কিছু দুরপাল্লার বাস ছেড়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।

গত রোববার (২৯ জুলাই) ঢাকায় বাসচাপায় দুই কলেজশিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর থেকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বেশকিছু গাড়ি ভাঙচুর হয়। আন্দোলনের পঞ্চম দিন বৃহস্পতিবার সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়ে তাদের ঘরে ফেরার প্রত্যাশা দেয়া হয়। পরদিন শুক্রবার  (০৩ আগস্ট)  থেকে সারাদেশে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন মালিক-শ্রমিকরা।

গাবতলী এলাকায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবহন শ্রমিক বাংলানিউজকে বলেন, বাস বন্ধ রাখার নির্দেশ অনেক উপর থেকে আসছে জানি। তবে কে এই নির্দেশ দিয়েছে বা কত উপর থেকে আসছে তা জানি না। আমাদের মালিকরা বাস চালাতে নিষেধ করেছে, আমরা চালাচ্ছি না।

রাস্তায় শিক্ষার্থীদের অবরোধ ও বাস ভাঙচুরের ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই পরিবহন শ্রমিক বলেন, একজন ড্রাইভার কখনও ইচ্ছা করে মানুষ মারে না। একটা দুর্ঘটনার পেছনে অনেক কারণ থাকে। আর দূরপাল্লার বাসের ড্রাইভারদের লাইসেন্স আছে। যে কারণে রাস্তায় আন্দোলনরত ছাত্ররা আটকালেও লাইসেন্স দেখিয়ে আমরা চলে যেতে পারি। ছাত্ররা বাস ভাঙে না। যারা রাস্তায় বাস ভাঙছে রাস্তায় তাদের আমরা চিনি; ওরা ছাত্র না, অন্য কেউ।

এদিকে বাস ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে শ্রমিকরা রাস্তায় নামতে চাইছেন না। কারণ, তাদেরও জীবনের মায়া আছে। একটা বাস পুড়িয়ে দিলে তাদের কর্মসংস্থানে অসুবিধা হয়। রাতের বেলায় আন্দোলন থাকে না বলে রাতে অল্পকিছু বাস টার্মিনাল ছেড়ে যাচ্ছে। যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতেই কিছু বাস ছাড়া হচ্ছে।

একই মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক ফেডারেশনের মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমরা নির্দেশ দেইনি। শ্রমিকদের ইচ্ছাতেই বাস বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে বাস হয়তো ছাড়তে চাইবে না তারা। কারণ, রাস্তায় আন্দোলনের নামে বাস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে। এতে সবচেয়ে ক্ষতির শিকার হয় শ্রমিকরাই।
 
এদিকে বাস চলছে না জেনেও হয়ত যাওয়া যাবে এই আশায় বাস টার্মিনালে সকালে এসেছিলেন অনেক যাত্রী। খুলনা যাওয়ার উদ্দেশে গাবতলীতে এসেছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী রফিক। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমার এখন বাড়িতে যাওয়াটা খুব জরুরি। একটু আগে খবর পেয়েছি আমার বাচ্চাটা অনেক অসুস্থ। এদিকে সকালের ট্রেনও তো চলে গেছে। ভেবেছিলাম দুই-একটা লোকাল গাড়ি চললেও ভেঙে ভেঙে খুলনা যেতে পারবো। এখন জানতে পারলাম রাতে হয়তো যাওয়া যাবে। কিছু করার নেই, ফিরে যাচ্ছি!

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০১৮
এমএএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।