এমন তথ্য পাওয়া গেছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে। ফলে ঢাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই প্রধান সড়কসহ বিভিন্ন গলিতে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ সূত্র জানায়, উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সড়কে সারা বছর ১ লাখ ৭৯ হাজার ৫৭৫ টন ধুলাবালি সড়কে জমা হয়। এসব কারণে দুর্ভোগে পড়ছেন নগরবাসী। খোলা ট্রাকে বালু পরিবহল, সড়কের পাশে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখা, সড়ক খোঁড়াখুড়ি ও যেখানে-সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণের কারণে প্রতিনিয়তই সড়কে বালু জমা হচ্ছে। খোলা ট্রাক সারা ঢাকা শহরে বালু ছড়াচ্ছে। বিশেষ করে গাবতলী, মিরপুর এলাকায় এসব ট্রাকের কারণে মোটা বালি বেশি পারিমাণে পাওয়া যাচ্ছে।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ সূত্র জানায়, নগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা মূলত বালুর কারণেই অকেজো হচ্ছে। আগে সবার ধারণা ছিলো পলিথিন অথবা কাগজের বর্জ্যে নগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থা অকেজো হয়। কিন্তু এই ধারণা ভুল। সম্প্রতি ড্রেন ও সড়কের ময়লা ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করিয়েছে ডিএনসিসি। এতে দেখা গেছে ড্রেনের সব ময়লাই মূলত বালু। রাস্তার ময়লায় ৯৭ শতাংশ বালু পাওয়া গেছে, অন্যদিকে ড্রেনের ময়লায় ৮৬ শতাংশ বালু পাওয়া গেছে। ড্রেনের ময়লায় ৮৬ শতাংশ বালুর পাশাপাশি ৯ শতাংশ প্লাস্টিকও আছে।
প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এম এ রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, সড়কের ময়লা ল্যাবরেটরিতে টেস্ট করিয়েছি। সেখানে আমরা সড়কের ময়লার ৯৭ শতাংশ পাচ্ছি বালু। আবার রাস্তার ধুলা ড্রেনে যায় কি-না সেটা সেই বিষয়ে ড্রেনের ময়লাও ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করিয়েছিলাম। সেখানে ড্রেনের ময়লায় ৮৬ শতাংশ বালু এবং প্লাস্টিক ৯ শতাংশ পাওয়া গেছে। আমাদের সাধারণভাবে ধারণা ছিলো, ড্রেন বন্ধের মূল কারণ পলিথিন ও প্লাস্টিক। এটা প্রকৃতপক্ষে ভুল ধারণা। ল্যাবরেটরি টেস্ট ও আমাদের সাধারণ ধারণায় পাচ্ছি ড্রেন চকিংয়ের (বন্ধ) মূল ‘ক্রিমিনাল’ এখন বালু। ঢাকা শহরে যে পরিমাণে বালু জমা হয় সঠিকভাবে অপসারণ না করা গেলে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখা সম্ভব হবে না।
নগরীরে জমে থাকা ধুলাবালু নিয়ে একটি সার্ভে করেছে ডিএনসিসি। সার্ভেতে দেখা গেছে, ২০১৮ সালের ৫ মার্চ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দু’টি সড়ক রোড সুইপার দিয়ে পরিষ্কার করা হয়েছে। এরমধ্যে একটি সার্ক ফোয়ারা থেকে বিজয় স্বরণি হয়ে জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার পর্যন্ত মোট ৯ কিলোমিটার সড়কে সুইপ ট্র্যাক ৩৬ কিলোমিটার। এরমধ্যে ১৮ কিলোমিটার পরিষ্কার করা হয়েছে। ঢাকায় ফোরলেন সড়কের চারটি সুইপিং ট্র্যাক থাকে। আইল্যান্ডের দুই পাশ এবং দুই পাশের দু’টি ফুটপাত। সড়কের মাঝখানে সাধারণ বালু কম জমা থাকে। কাকলী থেকে নতুন বাজার-গুলশান অ্যাভিনিউ-তেজগাঁও-লিংক রোডের মোট দৈর্ঘ্য ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার। এই সড়কে মোট সুইপিং ট্র্যাক ৩০ কিলোমিটার।
দু’টি সড়কে ৮৩ দিনে ৩৯৩ ঘণ্টা পরিষ্কার করা হয়েছে। ফলে মোট সুইপিং ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৭৯ কিলোমিটার। ৮৩ দিনে ওই সুইপিং ট্র্যাকে জমা হয়েছে ৩২১ টন বালু। এসব বালু ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা করছে ‘বিকল’। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই নগরীর অনেক সড়কে হাঁটুপানি জমছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৬ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৮
এমআইএস/আরআর