তিনি বলেছেন, ঢাকা শহরে শিল্প-কারখানা যেমন বাড়ছে, তেমনই বাড়ছে মানুষের আগমন। ইতোমধ্যে আমরা ঢাকার আশপাশে ছোট ছোট শহর গড়ে তুলে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছি।
শনিবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর প্রগতি সরণির বাড্ডা নর্থ ইউলুপ (মেরুল বাড্ডা) উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমন ব্যবস্থা করা হবে যাতে প্রতিদিনই বাইরে থেকে মানুষ ঢাকার কর্মস্থলে এসে কাজ শেষে ফিরে যেতে পারেন। ঢাকার চারপাশের চারটি নদীকে ঘিরে আমরা নৌপরিবহন ব্যবস্থা চালু করবো। নদীগুলোতে যেসব ব্রিজের কারণে নৌচলাচল করতে পারে না, সেসব ব্রিজ পরিবর্তন করে নৌচলাচলের উপযোগী করার পরিকল্পনা নিচ্ছি।
‘ঢাকার খালগুলোকেও নদ-নদীগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। রাজধানীর পান্থপথে বড় খাল ছিল, এখন সেখানে বক্স কালভার্ট রয়েছে ভব্যিষতে এটা সরিয়ে খাল উন্মুক্ত করে এলিভেটেড এক্সপ্রেস করে দেবো। ’
শেখ হাসিনা বলেন, সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আমরা আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তুলবো। রাজশাহী ও বরিশাল বিমানবন্দরেরও উন্নত করবো। আর কক্সবাজারে সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন বিমানবন্দর নির্মাণ করা হবে।
‘জাতির পিতা স্বপ্ন দেখেছিলেন, বাংলাদেশ হবে সুইজারল্যান্ড অব দ্য ইস্ট’ তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ’
আরো পড়ুন>>
** খুললো মেরুল বাড্ডা ইউলুপ
আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে জনগণকে আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জনগণকে এইটুকু বলবো, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন, দেশের উন্নয়ন হয়েছে। নৌকায় ভোট দিলেই দেশের উন্নয়ন হয়। আগামীতেও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকা মার্কায় ভোট চাই।
‘আমাদের লক্ষ্য দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। বাংলাদেশে কাজ করতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। হাতির ঝিল করতে গিয়ে ৬৮টি মামলার মুখোমুখি হতে হয়। দেশীয় সম্পদ ব্যবহার করে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজটি করেছে সেনাবাহিনী। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ’
সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের বিস্ময়। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। আমাদের প্রবৃদ্ধি বর্তমানে ৭.৭৮ শতাংশ। দারিদ্র্যের হার ২২ শতাংশে নেমে এসেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৮ হাজার ৩৫৩ মেগাওয়াট। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়ে ১৭৫২ ডলারে উন্নীত হয়েছে।
‘আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি। পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। এ অগ্রযাত্রা কেউ ব্যাহত করতে পারবে না। উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে আমি সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি’
তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো-ইনশাআল্লাহ।
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্থানীয় সংসদ সদস্য এ কে এম রহমত উল্লাহ, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, প্রকল্প পরিচালক মেজর জেনারেল আবু সাইদ মো. মাসুদ উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউলুপ পরিদর্শন করেন। পরে তা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ইউলুপটি খুলে দেওয়ায় রাজধানীর রামপুরা, বনশ্রী, আফতাবনগর, শাহাজাদপুর ও বাড্ডা এলাকার যানজট অনেকাংশই কমে যাবে।
ফলে হাতিরঝিল থেকে সহজেই রামপুরা-বনশ্রী হয়ে মালিবাগের দিকে যাওয়া যাবে। অন্যদিকে এসব এলাকা থেকে বের হয়ে হাতিরঝিল হয়ে কারওয়ানবাজার এলাকায় যেতে পারবেন যাত্রীরা।
হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে রামপুরা ও বাড্ডা প্রান্তে দুটি ইউলুপ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বাড্ডা প্রান্তের মেরুল বাড্ডায় ২১৪ মিটার দীর্ঘ এবং ৭ দশমিক ৭ মিটার প্রস্থ ইউলুপটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩৩ কোটি টাকা।
রামপুরা-বনশ্রী এলাকার যানজট নিরসনে ২০১৬ সালের শুরুতে এ ইউলুপ নির্মাণের কাজ শুরু করে সেনাবাহিনী।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৮
এমইউএম/এমএ