ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

সিসিকে ভোট উৎসবে থাকছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৮
সিসিকে ভোট উৎসবে থাকছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা সিসিক নির্বাচনকে ঘিরে পোস্টারে ছেয়ে গেছে নগর। ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট: আর মাত্র দু’দিন পর (৩০ জুলাই) সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) ভোট উৎসব। ভোট উৎসবকে ঘিরে নগরে বিরাজ করছে অন্যরকম আমেজ। 

ভোটাররা যাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পারেন, সেজন্য নির্বাচন কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।  
 
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তারর নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

কমিশনের সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করছে মাঠ প্রশাসন।  
 
নির্বাচনকে ঘিরে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নেওয়া হচ্ছে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, সেজন্য নগরের ১৩৪টি ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় জোরদার করছে মাঠ প্রশাসন।  
 
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, ব্যাটালিয়ন আনসার ও আনসার-ভিডিপি’র কয়েক হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবে নগরের কেন্দ্রগুলোতে। সিলেটের বাইরে থেকেও আনা হচ্ছে অতিরিক্ত ফোর্স।  

সিটি করপোরেশনের নগরের ২৭টি ওয়ার্ডে র‌্যাবের ২৭টি ও পুলিশের ২৭টি টিম থাকবে। পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্সের পাশাপাশি মোবাইল টিম ও ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে টিম দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া স্ট্যান্ডবাই পার্টিও মোতায়েন থাকবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।  
 
নগরের ২৭টি ওয়ার্ডে অর্ধশত বিচারিক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। এর মধ্যে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন ১৫ জন। ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। এর বাইরেও নির্বাচনের দিন নির্বাচন কমিশনের ১০টিরও বেশি ভিজিল্যান্স টিম মাঠে থাকবে বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি নির্বাচনে তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা প্রলয় কুমার সাহা।  

তিনি বলেন, একজন করে উপ-পরিদর্শকের (এসআই) নেতৃত্বে সাতজন পুলিশ সদস্য, একজন করে ব্যাটালিয়ন আনসার, একজন করে অঙ্গীভূত আনসারের প্লাটুন কমান্ডার (পিসি), একজন করে সহকারী প্লাটুন কমান্ডার (এপিসি) ও ১২ জন করে আনসার (তার মধ্যে পুরুষ সাতজন ও নারী পাঁচজন) অর্থাৎ মোট ২২ জন করে ফোর্স প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে চাওয়া হয়েছে। সে হিসেবে প্রায় তিন হাজার ফোর্স মোতায়েন চেয়েছে কমিশন।  
 
জেলা  ও পুলিশ প্রশাসন সূত্র জানায়, বিচারিক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একজন এসআইয়ের নেতৃত্বে তিনজন করে পুলিশের ফোর্স থাকবে। প্রতি কেন্দ্রে থাকবে ১৫ থেকে ২২ জন পুলিশ সদস্য, আমর্ড পুলিশ, ব্যাটালিয়ন আনসার ও আনসার-ভিডিপি সদস্যরা। তিনটি ওয়ার্ডের দায়িত্বে একজন করে জুডিশিয়াল ম্যাজেস্ট্রেটের নেতৃত্বে টিম থাকবে।  
 
এছাড়া বিজিবি’র তরফ থেকে ১৬ জন এবং র‌্যাব থেকে নয়জন ম্যাজিস্ট্রেট চাওয়া হয়েছে। তারা ২৮ জুলাই থেকে মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা গেছে।  
 
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মাঈন উদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা নয়জন ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে চিঠি দিয়েছি জেলা প্রশাসনে। নির্বাচনে ৩১৭ জন র‌্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবে। নয়জন অফিসারের নেতৃত্বে আটজন করে ২৭টি টহল টিম বের হবে শনিবার থেকে। এর বাইরে সিও’র নেতৃত্বে একটি টিম থাকবে। আলাদা আরেকটি টিম থাকবে রিজার্ভ হিসেবে। নির্বাচন মনিটরিং সেল থাকবে র‌্যাব-৯ সদর দপ্তরে।  
 
বিজিবি সিলেট সদর দপ্তরের জেনারেল স্টাফ অফিসার মেজর জিয়াউল হুসাইন বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনে ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। সেই সঙ্গে রিজার্ভ থাকবে আরো চার প্লাটুন। এছাড়া বিজিবি থেকে ম্যাজিস্ট্রেট চাওয়া হয়েছে ১৬ জন।  
 
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নাছির উল্লাহ খান বাংলানিউজকে বলেন, সিটি নির্বাচনে জেলা প্রশাসনের ২৫ জন ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবেন। এরই মধ্যে একজন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ও নয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাজ করছেন। এছাড়া বিজিবি ১৬ জন এবং র‌্যাব নয়জন ম্যাজিস্ট্রেট চেয়েছে। তারা শনিবার (২৮ জুলাই) থেকে মাঠে কাজ করবেন। এছাড়া আরো ১৫ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন থাকবেন ভোটের মাঠে।  
 
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার পরিতোষ ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে সশস্ত্র পুলিশ, নারী পুলিশ ও আনসারসহ কমপক্ষে ১৫ জনের একেকটি ফোর্স মোতায়েন রাখা হবে। প্রতি তিন কেন্দ্রে একটি করে মোট ৪৫টি মোবাইল টিম, ১৫টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, অতিরিক্ত স্ট্যান্ডবাই স্ট্রাইকিং ফোর্স রাখা হবে আরো ১০টি। এছাড়া প্রতি দুই ওয়ার্ডে এক প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। ২৭টি ওয়ার্ডকে নয় ভাগে বিভক্ত করে নয়জন এডিসি আইনশৃঙ্খলায় দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের তদারকি করবেন পুলিশের ডিসিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।  
 
আগামী ৩০ জুলাই সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২৭টি ওয়ার্ডে ১৩৪টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এসব কেন্দ্রের মধ্যে ৮০টি কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) হিসেবে নির্ধারণ করেছে পুলিশ। নির্বাচনে মেয়র পদে ছয়জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬২ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১২৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২৭টি ওয়ার্ডে ৯২৬টি ভোট কক্ষে তিন লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন প্রার্থী ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবেন।  
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮১২ ঘন্টা, জুলাই ২৮, ২০১৮
এনইউ/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।