ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বৃষ্টি থেকে বাঁচতে নানা কৌশল

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৮
বৃষ্টি থেকে বাঁচতে নানা কৌশল মাথায় পলিথিন দিয়ে বৃষ্টি থেকে বাঁচার চেষ্টা। ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: বুকে শার্টের সঙ্গে ঝুলছে চশমাটা। মাথায় ছোট এক ধরনের পলিথিনের ব্যাগ। যা দিয়ে বৃষ্টির পানি থেকে মাথা বাঁচাবার চেষ্টা। কিন্তু পলিথিন চুয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে অল্প সময়ের মধ্যেই পুরো শরীর জুবুথুবু অবস্থা।

পাশেই স্কার্ফ মাথায় বোরখা পরিহিত এক নারীকে দেখা যায় বৃষ্টির পানিতে ভিজে একাকার। ছাতা সঙ্গে না থাকায় রক্ষা পাননি বৃষ্টির পানি থেকে।

 

বৃষ্টির কবল থেকে রক্ষা পেতে নানান জন নানা কৌশল অবলম্বন করেন। কিন্তু তাৎক্ষণিকের সেই কৌশলগুলো তেমন একটা কাজ দেয় না।  
 
মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কখনও জোরে কখনও ধীরে আবার কখনও টিপ টিপ করে সারাবেলা ঝরেই চলছে বৃষ্টি।
 
গেল কয়েকদিন আগেও বৃষ্টির দেখা ছিলো না। বাড়তি তাপমাত্রার পারদে জনজীবনে হাঁফফাঁস অবস্থা বিরাজ করছিলো। বাইরে বের হলেই প্রচণ্ড গরমের কারণে মানুষের গা চুয়ে ঘাম ঝরতো।  
বৃষ্টি হওয়ায় জনজীবনে স্বস্তি ফিরে এলেও অস্বস্তি কিন্তু পিছু ছাড়ছে না। বরং বেড়েই চলছে। ভোরের ভাল আকাশ দেখে মানুষ কাজের জন্য বাইরে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাস্তার দূরত্ব বুঝে অনেকেই আগেই কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন।
 
 মাথায় রুমাল বেঁধে বৃষ্টি থেকে বাঁচার চেষ্টা।  ছবি: বাংলানিউজআবার অনেকেই বৃষ্টি পড়তে দেখে বাসা থেকে ছাতা নিয়ে বের হচ্ছেন। কিন্তু পথিমধ্যে কেউই রক্ষা পাচ্ছেন না। জোরালো বৃষ্টির কবলে পড়ে কমবেশি তাদের ভিজতেই হচ্ছে।
 
প্রস্তুতি না থাকায় মাথায় রুমাল বেঁধে বৃষ্টির কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার দৃশ্যও নজরে পড়লো। কিন্তু রুমাল চেপে বৃষ্টির হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব নয় তা তো সবারই জানা। তবু মনের সান্ত্বনা বলতে পারেন –এমনটাই বাংলানিউজকে বললেন কর্মজীবী তৌহিদুল আলম ও শাহিন রেজা।
 
হাসানুল, শাকিব, হাসানসহ কয়েকজন ছাত্র বাংলানিউজকে জানায়, স্কুলে আসার সময় বৃষ্টি ছিলো না। কিন্তু ফিরতি পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বৃষ্টি। তাই বলে ছুটি হওয়ার পর স্কুলে আর কতক্ষণ অপেক্ষা করা যায়। বাসায় ফিরে দুপুরে খাবার খেতে হবে। এরপর যে যার মত প্রাইভেট পড়তে যাবে। আবার কারো কারো শিক্ষক বাসায় আসবেন পড়াতে। এ অবস্থায় স্কুলে বসে থাকার জো নেই। তাই বৃষ্টির পানি মাথায় নিয়েই যে যার মত বাসার দিকে রওনা দেয়।
 
বাম থেকে বৃষ্টিতে ভিজেই বাড়ি ফিরছে শিক্ষার্থীরা ও রিকশায় পলিথিন দিয়ে যাচ্ছে যাত্রী।  ছবি: বাংলানিউজআরেকজনকে বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা হয়ে মোটরসাইকেলে করে বৃষ্টির পানি মাড়িয়ে গন্তব্যে ছুটতে দেখা গেলো। আবার অনেকেই জীবিকার তাগিদে রিকশার সামনে পলিথিন টানিয়ে অথবা মাথায় ছাতা ধরে শহরের একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্তে ছুটে চলেছেন।
 
তবে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া বৃষ্টির মধ্যে খুব কম মানুষই ঘর থেকে বের হয়েছেন বলে এসব ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। কিন্তু দিনব্যাপী বৃষ্টির কারণে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষগুলো।
 
কেননা চুলো জ্বালাতে ঘরের বাইরে বের হতে বাধ্য তারা। পকেটে টাকা না উঠলে বাড়ির চুলো জ্বলবে না। ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে তাদের উপোষ থাকতে হবে–এমনটাই জানালেন রিকশাচালক বাদশা মিয়া, আলম হোসেন, জব্বার আলী।
 
বিকেলে বগুড়া আবহাওয়া অফিসের টেলিপ্রিন্টার অপারেটর (টিপিও) শাফিউল কাফি বাংলানিউজকে জানান, সোমবার (২৩ জুলাই) বিকেল ৩টা থেকে মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৬ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এসময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১১৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৮
এমবিএইচ/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad