প্রতিদিনই একইভাবে শূন্য হাতে ফেরায় নদীতে যেতে জেলেদের যেনো এখন অনীহা। বছরের এ সময় নদীতে জেলেরা মহোৎসবে ইলিশ ধরবেন, ঝুঁড়ি ভরে মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরবেন।
রোববার (২২ জুলাই) বিকেলে কমলনগরের মেঘনাপাড়ে গিয়ে দেখা গেছে নদীতে কোনো মাছ ধরার নৌকা নেই। মেঘনায় নেই জেলেদের মাছ ধরার ব্যস্ততা। ঘাটে নেই সরগরম। অলস সময় পার করছেন জেলে, আড়াতদার ও মাছ বিক্রেতারা। ইলিশ ধরার এ সময়ে উপজেলার মাতাব্বরহাট মাছঘাটে শত শত নৌকা নোঙর করা থাকতো। ইলিশ ধরা না পড়ায় ঘাটে সারি-সারি নৌকার দেখা মেলেনি। মাত্র দুটো নৌকা নদীতে মাছ শিকারে যাবে প্রস্তুতি নিচ্ছিলো।
সোমবার (২৩ জুলাই) সকালে খবর নিয়ে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট, রামগতি ও রায়পুর উপজেলাতেও ইলিশের আকাল। কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন গ্রামের বাসিন্দা ইউছুফ মাঝি (৪০)। নদীতে মাছ শিকার করা তার একমাত্র পেশা। মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। তার সঙ্গে আরও চার জেলে একই নৌকায় মাছ শিকার করেন। রোববার সকাল থেকে ৮ ঘণ্টা চেষ্টা করে তারা পাঁচটি ইলিশ ধরতে পেরেছেন। পাঁচটি ইলিশ ধরতে তাদেরকে চার বার নদীতে জাল ফেলতে হয়েছে। তাদের জালে ধরা পড়া ওই ইলিশগুলো বিক্রি করেছেন দুই হাজার টাকায়। সারাদিন খেটে দুই হাজার টাকার মাছ ধরতে তাদের জ্বালানি খরচ হয়েছে এক হাজার টাকা। দিন শেষে এক একজনের উপার্জন মাত্র দেড়-দুইশো টাকা। এমনও জেলে আছেন সারাদিন খেটেও একটি ইলিশ নিয়ে ফিরতে পারেন না। নদীতে ইলিশ নেই। জেলেরা খালি হাতে ফিরেন। এসব কারণে শিকারে যেতে জেলেদের অনীহা।
ইউছুফ মাঝি বাংলানিউজকে জানান, ঋণ নিয়ে নৌকা-জাল করেছি। মৌসুমের প্রায় অর্ধেক সময় পার হচ্ছে কিন্তু কাঙ্খিত ইলিশের দেখা মেলেনি। এভাবে চলতে থাকলে না খেয়ে থাকতে হবে। এদিকে ঋণের টাকা শোধ করতে পারছিনা।
ইউছুফের মতো লক্ষ্মীপুরের মেঘনার হাজার হাজার জেলে মহাজনের দাদনে মাছ শিকার করেন। ঋণের জালে তারা বন্দি। ইলিশ ধরা না পড়ায় চলছে না তাদের সংসার, মিটছে না দেনা। এমন পরিস্থিতিতে তাদের মুখে হাসি নেই। ফলে তারা হতাশ।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৮
এসআর/এএটি