ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জালিয়াতি ঠেকাতে ই-পাসপোর্টের চুক্তি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৮
জালিয়াতি ঠেকাতে ই-পাসপোর্টের চুক্তি বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যে ই-পাসপোর্ট ও অটোমেটেড বর্ডার কন্ট্রোল ব্যবস্থাপনা বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষর। ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল

ঢাকা: ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপায়নের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশে চালু হতে যাচ্ছে ই-পাসপোর্ট প্রক্রিয়া। ঘরে বসেই ইন্টারনেটে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করে অল্প সময়ে পাওয়া যাবে কাঙ্ক্ষিত পাসপোর্ট। এজন্য www.passport.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যে ই-পাসপোর্ট ও অটোমেটেড বর্ডার কন্ট্রোল ব্যবস্থাপনা বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। জার্মানির ভেরিডোস কোম্পানির সঙ্গে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর জিটুজি’র ভিত্তিতে টার্ন কী পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করা হবে।

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাসুদ রেজওয়ান ও ভেরিডোস কোম্পানির সিইও কুনস এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

আন্তর্জাতিক পরিসরে মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে হাতে লেখা পাসপোর্টের বদলে ২০১০ সালে সশস্ত্র বাহীনির সহায়তায় প্রবর্তিত হয়েছিল মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট। কিন্তু মেশিন রিডেবল পাসপোর্টেও জালিয়াতি করা হচ্ছে বিধায় ইমিগ্রেশন ব্যবস্থাপনাকে আরও নির্ভুল, সহজতর, সময়-সাশ্রয়ী ও স্বাচ্ছন্দময় করতে বিশ্বের ১১৮টি দেশ ইতোমধ্যে ই-পাসপোর্ট এনেছে।

ই-পাসপোর্টের সকল তথ্য, স্বাক্ষর, ছবি, চোখের কর্ণিয়া এবং ফিঙ্গার প্রিন্ট সিল্ড অবস্থায় সুরক্ষিত থাকে বিধায় তা কোনোভাবেই পরিবর্তন বা জাল করা সম্ভব না। এই পাসপোর্টের মাধ্যমে হয়রানিমূলকভাবে দেশ ভ্রমণ সম্ভব হবে না। কেননা এই প্রক্রিয়ার কারণে ইমিগ্রেশনের ভোগান্তি শূন্যের কোঠায় ঠেকবে বলেও জানিয়েছে অধিদফতরটি। আবার অটোমেটেড মেশিন নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় জাল পাসপোর্টের কোনো স্থান নেই।

এ সময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন জার্মানির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নেইলস অ্যানেন, সরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমদ চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ের ব্যক্তি এবং সংসদ সদস্যরা।

চুক্তি স্বাক্ষর শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নে থেমে নেই আমরা। এ পর্যন্ত দুই কোটিরও বেশি মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) বাংলাদেশি নাগরিকদের দেওয়া হয়েছে এবং ১১ লাখেরও বেশি মেশিন রিডেবল ভিসা বিদেশিদের দেওয়া হয়েছে। তবে এমআরপি পাসপোর্ট এখন বন্ধ হয়ে যাবে না। ই-পাসপোর্ট সম্পূর্ণভাবে চালু হওয়ার আগ পর্যন্ত এমআরপি চালু থাকবে।

জার্মানির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নেইলস অ্যানেন বলেন, স্বাধীনতার পর খুব অল্প সময়ে বাংলাদেশ অগ্রগতি অর্জন করছে। এই চুক্তির মাধ্যমে জার্মানি কোম্পানির সহায়তায় বাংলাদেশ তার চ্যালেঞ্জের পক্ষে আরও এগিয়ে যাচ্ছে। জার্মানির ভেরিডোস কোম্পানির বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা এর আগেও আছে। আমরা বাংলাদেশিদের এ কাজে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলতে সাহায্য করবো।

জিটুজি প্রকল্পের আওতায় যে বিষয়গুলো রয়েছে তা হলো- জার্মানির ভেরিডোস কোম্পানি তিন কোটি ই-পাসপোর্ট বুকলেট সরবরাহ করবে। ঢাকার উত্তরায় বুকলেটের জন্য একটি অ্যাসেম্বলি কারখানা স্থাপন করা হবে। তাতে বুকলেটের খরচ অর্ধেকেরও কম হবে।

একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ডাটা সেন্টার ও একটি ডিজাস্টার রিকভারি সেন্টার এবং অত্যাধুনিক পার্সোনালাইজেশন সেন্টার নির্মাণ করা হবে। পার্সোনালাইজেশন সেন্টারে আটটি প্রিন্টিং মেশিন থাকবে এবং যার মাধ্যমে প্রতিদিন প্রতি শিফটে ৩০ হাজারেরও বেশি পাসপোর্ট প্রিন্ট করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশে ৭২টি পাসপোর্ট অফিস, বিদেশে ৮০টি মিশন, ৭২টি এসবি/ডিএসবি অফিস, ২২টি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টসহ সকল অফিসে প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট, সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও নেটওয়ার্ক দেওয়া হবে। এই প্রকল্পের আওতায় ১০০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জার্মানিতে দুই সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

প্রকল্পটির মূল্য চার হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। ভেরিডসের সঙ্গে চুক্তি মূল্য তিন হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা। কাস্টম ডিউটি, ভ্যাট ও এআইটি এক হাজার ২৪ কোটি টাকা এবং প্রকল্পটির ব্যয় ২০৭ কোটি টাকা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৮
এমএএম/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।