ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শনিবার ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে ঈশ্বরদী-পাবনা রুটে

উপজেলা করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১২ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৮
শনিবার ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে ঈশ্বরদী-পাবনা রুটে ট্রেন। প্রতীকী ছবি

ঈশ্বরদী (পাবনা): দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে পাবনাবাসীর স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর পাবনায় রেললাইন স্থাপন হওয়ায় পাবনাবাসীর মধ্যে আনন্দ-উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ দাবি পূরণ করায় পাবনার বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

শনিবার (১৪ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নতুন রেললাইনের উদ্বোধন করবেন।  

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসাদুল হক বাংলানিউজকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাবনার পুলিশ লাইন মাঠে জনসভার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে পাবনায় রেলপথ ও ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন।

 

তিনি আরও জানান, ঈশ্বরদীর মাঝগ্রাম হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৭৮ কিলোমিটার নতুন রেললাইনের মধ্যে ২৫ কিলোমিটার ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুত। বাকি ৫৩ কিলোমিটার দ্বিতীয় ধাপে শেষ হবে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে প্রকৌশলী-২ আরিফ আহম্মেদ জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফলক উন্মোচন করে উদ্বোধনের পর ট্রেনটি ‘পাবনা এক্সপ্রেস’ নামে পাবনা- রাজশাহীর পথে চলবে। উদ্বোধনের দিন ইঞ্জিনসহ ছয়টি বগি নিয়ে পাবনা থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত চলাচল করবে। পরবর্তীতে পাবনা-রাজশাহীর মধ্যে চলাচল করবে।

তিনি আরও জানান, প্রতিদিন ঈশ্বরদী-পাবনা-রাজশাহীর রেল পথে ৪২৩ যাত্রীধারণ ক্ষমতার এ ট্রেনে থাকবে এসি সিগ্ধা, চেয়ার কোচ, ননএসি ও শোভন।  

ঈশ্বরদী থেকে প্রতিদিন ট্রেনটি ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে পাবনা পৌঁছাবে ৬টা ৪৫ মিনিটে। এরপর পাবনা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ৭টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে রাজশাহী পৌঁছাবে সকাল ৯টা ৩০মিনিটে।

পরে রাজশাহী থেকে পাবনার উদ্দেশে ছেড়ে আসবে বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে। পাবনা পৌঁছাবে সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে। এরপর ট্রেনটি পাবনা থেকে রাত ৭টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে ঈশ্বরদী পৌঁছাবে রাত ৯টায়।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পাবনার পাকশী বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯১৪ সালে পদ্মা নদীর উপর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ চালু হলে সেই সময়ে দাবি উঠে ঈশ্বরদী থেকে পাবনা পর্যন্ত একটি লিংক রেললাইনের। সেই সময় ব্রিটিশরা এ দাবি পূরণে প্রতিশ্রুতিও দেন। তবে সেই প্রতিশ্রুতি আর পরে বাস্তবায়ন হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঈশ্বরদী-পাবনা রেললাইনের জমি অধিগ্রহন শুরু করলেও ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল পাবনাবাসীকে। সেই প্রতিশ্রুতি পুরণ হতে চলেছে।

২০১০ সালের ৫ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নিবার্হী কমিটির বৈঠকে এ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৯৮২ কোটি ৮৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা।

২০১৩ সালে ২ ফেব্রুয়ারি পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) নাজমুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, এই রেলপথ চালু হলে উত্তরাঞ্চলের আর্থ-সামাজিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন হবে, ব্যবসা বাণিজ্যে গুণগত পরিবর্তন ঘটবে। কম সময়ে কম খরচে যাতায়াত করবে এ অঞ্চলের জনগণ।  

পাবনা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ভাষা সৈনিক শামসুর রহমান শরীফ ডিলু বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘদিনের যে স্বপ্ন, পাবনায় ট্রেন চলবে, তা বাস্তবায়ন হতে চলেছে। এ অসম্পন্ন কাজটি সম্পন্ন করলেন জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি কথা দিয়েছিলেন, প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের আকাঙ্খা পূরণ করলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৮
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।