ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শেষ হলো সরকারের শেষ বাজেট অধিবেশন 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩২ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৮
শেষ হলো সরকারের শেষ বাজেট অধিবেশন 

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলের নেতা বেগম রওশন এরশাদের বক্তব্যের মধ্যদিয়ে শেষ হলো বর্তমান সরকারের শেষ বাজেট অধিবেশন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার টানা দশম বছরের মতো জাতীয় বাজেট ঘোষণা করে এই সংসদ অধিবেশনে। 

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনকারী এই দেশের আর কোনো রাজনৈতিক দল টানা এক দশক জুড়ে সংসদে নেতৃত্ব দেয়নি। যেটা শুধুই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অর্জন।

গত ৭ জুন অধিবেশনে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।  

এর মাধ্যমে তিনি দেশের একমাত্র অর্থমন্ত্রী হিসাবে টানা এক দশক বাজেট পেশের রেকর্ড গড়েছেন। তবে মোটের হিসাবে তিনি ১২তম বাজেট পেশ করে সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের সমকÿ হলেন। এবারের বাজেটের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। বাজেটের উপর আলোচনা শেষে তা ২৮ জুন পাস হয়।
 
বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) দশম জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এ অধিবেশন ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বিরোধী দল গঠনমূলক ভুমিকা রেখেছেন। গণতান্ত্রিক চর্চায় যেভাবে সংসদ চলার কথা ছিল ঠিক সেভাবেই চলেছে। অতীতে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হতো কটূক্তি আর অশালীন বক্তব্যর কারণে। এবারের সংসদে এ ধরনের অশালীন ঘটনা বা কথা-বার্তা হয়নি। সবকিছু অনেক গঠনমূলকভাবে আলাপ-আলোচনা হয়েছে।
 
অন্যদিকে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ বর্তমান সংসদকে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী বলে মন্তব্য করেন। পাশাপাশি তিনি মাদক, স্বাস্থ্য, রাজধানীর যানজট ও কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে বক্তব্য রাখেন।  

এদিকে সমাপনী বক্তব্যে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায়। প্রতিটি অগ্রযাত্রায় নির্দিষ্ট মাত্রা নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে আমরা আজ বেরিয়ে এসেছি। একটি দেশকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে- যেমন সরকারের ধারাবাহিকতা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও নেতৃত্ব।
 
সংসদ সচিবালয় জানিয়েছে, এবারের বাজেট অধিবেশনে মোট কার্যদিবস ছিল ২৫টি। সম্পূরক বাজেটসহ মোট বাজেটে আলোচনায় ২২৩ জন এমপি অংশ নেন। আলোচনায় সময় ব্যয় হয় ৫৫ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট। বাজেট পাস ছাড়াও এ অধিবেশনে ১৪টি বিল পাস হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল সংবিধান (সপ্তদশ সংশোধন) বিল ২০১৮। বর্তমান সরকারের আমলে এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সংসদ অধিবেশনে ১৫৭টি বিল পাস হয়।  

আইন প্রণয়ন সম্পর্কিত কাজ সম্পাদনের পাশাপাশি কার্যপ্রণালী বিধির ৭১ বিধিতে ১৮০টি নোটিশ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১২টি নোটিশ গ্রহণ করা হয়। নোটিশগুলোর মধ্যে ৭টি সংসদের বৈঠকে আলোচিত হয়েছে। অন্যদিকে ৭১ বিধিতে দুই মিনিটের আলোচিত নোটিশের সংখ্যা ছিল ৩৮টি।  

সংসদ সচিবালয় জানায়, প্রধানমন্ত্রীর উত্তর দেওয়ার জন্য সর্বমোট ১৬৫টি প্রশ্ন পাওয়া যায়। এর মধ্যে তিনি ৬৭টি প্রশ্নের উত্তর দেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের উত্তর দেওয়ার জন্য পাওয়া যায় ২৮৮১টি প্রশ্ন। এর মধ্যে মন্ত্রী উত্তর দিয়েছেন ২০১৯টি প্রশ্নের। এছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরা সমসমায়িক গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন।  

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি বিএনপি-জামায়াতকে ছাড়াই এই সংসদ যাত্রা শুরু করে। সংসদে বিরোধীদল জাতীয় পার্টির অবস্থান নিয়ে বিতর্ক থাকলেও বিগত বছরগুলোর মতো শেষ বছরের বাজেট অধিবেশনেও তাদের সবর উপস্থিতি দেখা গেছে। এর আগে ১২ এপ্রিল শেষ হওয়া সংসদের ২০তম অধিবেশনেও বিরোধীদলীয় সদস্যদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৮
এসএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।