ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দ্বিতীয় পদ্মাসেতুতে ঋণ দিতে প্রস্তাবের আশায় এডিবি

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০১ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৮
দ্বিতীয় পদ্মাসেতুতে ঋণ দিতে প্রস্তাবের আশায় এডিবি

ঢাকা: পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া অংশে দ্বিতীয় পদ্মাসেতু নির্মাণে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এমনকি ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজও শুরু হয়েছে। এরপরেই নেওয়া হবে মূল প্রকল্প। সরকার উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা নিয়ে এই মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চাই। কারণ পদ্মাসেতুর থেকেও দ্বিতীয় পদ্মাসেতু প্রকল্পে ব্যয় অনেক বেশি।

প্রস্তাবিত দ্বিতীয় পদ্মাসেতুর দৈর্ঘ্য হবে ৬ দশমিক ১০ কিলোমিটার। সেতুতে রেললাইনও থাকবে।

এই মেগা প্রকল্পে ঋণ দিতে চায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। তবে এই প্রকল্পে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আসেনি বলে জানিয়েছে এডিবি। এখন দ্বিতীয় পদ্মাসেতুতে ঋণ দিতে সরকারের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবের আশায় রয়েছে এডিবি।

বাংলানিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে সংস্থাটির ঢাকা অফিস। এডিবি সূত্র জানায়, দ্বিতীয় পদ্মাসেতু অনেক ব্যয়বহুল হবে। এখানে কো-ফাইন্যান্সিং করবে এডিবি। কয়েকটি উন্নয়ন সহযোগী এক হয়ে দ্বিতীয় পদ্মাসেতু বাস্তবায়ন করতে চায় এডিবি।  

এডিবি’র ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা দ্বিতীয় পদ্মাসেতুতে ঋণ দিতে প্রস্তুত আছি। তবে তার আগে সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আসতে হবে। সেই প্রস্তাব এখনও আসেনি। আমরা চায় শুধু এডিবি নয় এই সেতু বাস্তবায়নে আরও উন্নয়ন সহযোগী যুক্ত হোক। কয়েকটি উন্নয়ন সহযোগী যুক্ত হলে দ্বিতীয় সেতুর কাজ বাস্তবায়ন সহজ হবে।

এর আগে কথিত দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে পদ্মাসেতু প্রকল্পে ঋণ বাতিল করেছিল বিশ্বব্যাংক। দুর্নীতির এই অভিযোগ নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েন শেষে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এ অবকাঠামো প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি বাতিল হয়ে যায়। ফলে দ্বিতীয় পদ্মাসেতুতে ঋণ নিতে ‘ধীরে চলো’ নীতি অনুসরণ করেছে সরকার, যাতে পদ্মাসেতুর মতো একই পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়। ঋণের ধরনসহ নানা দিক বিবেচনা করেই দ্বিতীয় পদ্মাসেতু প্রকল্পে ঋণ নেবে সরকার।

এডিবি ঋণ ও দ্বিতীয় পদ্মাসেতু প্রসঙ্গে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান বাংলানিউজকে বলেন, দ্বিতীয় পদ্মাসেতু হবে পাটুরিয়া-গোয়ালন্দে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। তবে ঋণ নেব না দেশীয় অর্থে এটা বাস্তবায়ন করবো বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবা হচ্ছে। আমাদের সবাই নানা প্রকল্পে ঋণ দিতে চায়। কারণ বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা বেড়েছে। তবে ঋণ নেওয়ার আগে আমরা সব সময় সাবধানতা অবলম্বন করবো। কেউ ঋণের প্রস্তাব দিলেই ঝাঁপিয়ে পড়া ঠিক হবে না।

মাওয়া-জাজিরা পয়েন্টে দেশের বৃহৎ পদ্মা বহুমুখী সেতুর কাজ এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যেই ৫৬ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

অন্যদিকে পাটুরিয়া-গোয়ালন্দে দ্বিতীয় পদ্মাসেতু নির্মিত হলে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও রাজবাড়ীর সড়ক যোগাযোগের দূরত্ব কমে যাবে। গোপালগঞ্জ, যশোর ও মাদারীপুর জেলার অংশবিশেষের দূরত্বও কমবে।

প্রাথমিকভাবে এক বছর আগে ফিজিবিলিটি স্টাডি প্রকল্পে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ১৩ হাজার ১২২ কোটি। এই ব্যয় দিয়ে দ্বিতীয় সেতুর কাজ শুরু করতে চায় সরকার। যেমন পদ্মাসেতু প্রকল্প ২০০৭ সালে ১০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে কয়েক ধাপে বেড়ে এখন এই প্রকল্পের ব্যয়  ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা 

এডিবি বলছে দ্বিতীয় পদ্মাসেতু প্রকল্পে সব মিলিয়ে ৫ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। প্রতি ডলার সমান ৮০ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। সরকারের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পেলে এই প্রকল্পে ‘লিড ডোনার’ বা প্রধান ঋণদাতা হতে প্রস্তুত রয়েছে এডিবি।

বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৮
এমআইএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad