এ অবস্থায় বিপুল এ যাত্রীর বোঝা টানতে হিমশিম খাচ্ছে ইঞ্জিন। এতো ভিড়ে ট্রেনের ভেতরে যখন জায়গা নেই, তখন সিটের ফাঁকে বগির দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করছেন যাত্রীরা।
যাত্রী হয়তো জানেন না বা অসাবধানতায় টান ফেলছেন চেইনে। আর যাত্রীদের এই অজ্ঞাতসার বোকামিতে প্রায়ই থেমে যাচ্ছে ট্রেন। ঈদযাত্রায় প্রায়ই ঘটছে এমন ঘটনা।
শুক্রবার (১৫ জুন) বিমানবন্দর স্টেশনে এমন ঘটনা ঘটলো পারাবত এক্সপ্রেসে। কমলাপুর থেকে ১৪ বগির সিলেটগামী যাত্রীবোঝাই ট্রেনটি ঠিক সময়েই ছেড়ে আসে। সকাল ৭টা ৫ মিনিটে বিমানবন্দর স্টেশনে ঢোকে। কিন্তু মিনিট পাঁচেক পরে চালক বারবার চেষ্টা করেও ছুটতে পারছিলেন না। পরে উদঘাটন করলেন এসিপি সিস্টেমে ঝামেলা হচ্ছে। এই সিস্টেমের মাধ্যমেই বগির ভেতরে থাকা চেইন টেনে ট্রেন থামানো হয়। চেইনে টান পড়লেই ইঞ্জিনে বাতাসের চাপ কমে যায়, ফলে গাড়ি এগোতে পারে না।
পারাবতের সহকারী চালক শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, অধিক যাত্রীর কারণেই এমন হয়েছে। কেউ তো আর ইচ্ছা করে এই কাজ করে না। অজ্ঞাতসারে এমন করেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, আমরা যখন বিষটি টের পেলাম ততক্ষণে গলদঘর্ম হতে হয়েছে। কেননা প্রতিটি বগিতেই একই কাজ হয়েছে। আমরা একটি ঠিক করে পরেরটায় গিয়ে দেখি আবার আগেটায় একই কাজ করেছেন কেউ। আর একটিতে চেইন টানলে পুরো ট্রেনেই চেইন পুলে প্রভাব পড়ে। পরবর্তীতে প্রতিটি বগি আলাদা করে এই জ্যাম ছোটানো হয়েছে।
এই জ্যাম ছাড়ানো আর জ্যাম লাগা চলতে থাকে প্রায় দেড় ঘণ্টা। ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে আবার চলতে শুরু করে পারাবত। আর এই দেড়ঘণ্টার যাত্রাবিরতি খুব সুখকর হয়নি যাত্রীদের জন্য।
চেইন টানায় যখন অযথা যাত্রাবিরতি, তখন পারাবতের ভেতর যাত্রীতে কানায় কানায় পূর্ণ। বাতাস ঢোকার ফুসরতও নেই। আর এই থমকে যাওয়া ট্রেনের বগিগুলো তখন অনেকটা বয়লারে পরিণত হয়। এতো গরম যে অনেককে গায়ের জামা খুলে ফেলতে দেখা গেছে।
শফিকুল ইসলাম বলেন, এটা কোনো সমস্যা না। কিন্তু অযথা যাত্রীরা এটা টানছেন। কিংবা অসাবধানতায় চাপ পড়ছে। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণেই এটা অনেক সময় হচ্ছে। ফলে যাত্রীদেরই ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বিপর্যয় হয় শিডিউলের।
এদিকে বিমানবন্দর স্টেশন লোকে লোকারণ্য। প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের দাঁড়ানোর জায়গা পর্যন্ত নেই। তখন অনেকেকেই রেল লাইনের উপরে বসে পড়েন। আর ট্রেন ঢুকলেই পড়েন সটকে।
কমলাপুর থেকেই যাত্রীবোঝাই করে আসছে ট্রেনগুলো। কিন্তু ভেতরে থাকা যাত্রীরাই দরজা খুলছেন না। ফলে বিমানবন্দর থেকে অনেকেই উঠতে পারছেন না। ক্ষুব্ধ যাত্রীদের অনেকে ইট দিয়ে জানালার কাচ ভাঙতেও দেখা গেছে। ভেতরে থাকাদের কেউ কেউ ভয়ে দু'একটা জানালা খুলে দিচ্ছেন, সেখান দিয়েই উঠছেন অনকে। দু'একটা দরজা খোলা হচ্ছে পুলিশ, অ্যাটেনডেন্টদের চেষ্টায়।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৮ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৮
ইইউডি/এএ