ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রথমবার বরিশাল সিটি নির্বাচনে আগ্রহ নারীদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০০ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৮
প্রথমবার বরিশাল সিটি নির্বাচনে আগ্রহ নারীদের বাঁ থেকে বিলকিস জাহান শিরিন, আফরোজা খানম নাসরিন  ও মনীষা চক্রবর্তী।

বরিশাল: প্রথমবারের মতো বরিশাল সিটি করপোরেশন(বিসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগ্রহ জানিয়েছেন একাধিক নারী প্রার্থী। যদিও প্রার্থীরা নারী হিসেবে নয় নিজ নিজ দলের কর্মী হিসেবে এ প্রার্থিতা দাবি করেছেন বলে জানিয়েছেন।

আর শেষ পর্যন্ত তারা নির্বাচনী মাঠে থাকলে বিশেষ চমক বিরাজ করবে বলে আশা করছেন নগরবাসী।

সাধারণ নগরবাসীর হিসাব মতে অনেকেই নির্বাচনের আগে মেয়র-কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন।

তবে শেষ পর্যন্ত মুখের কথায় মাঠ চাঙ্গা রাখলেও নির্বাচনী মাঠে আর তাদের দেখা মেলে না। আবার অনেকে তো অতিথি পাখির মতো নির্বাচনের আগে আসেন অর্থের বিনিমিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে নির্বাচনী মাঠ চাঙ্গা করে ঘুরে বেড়ান। তবে তাদের বেশিরভাগকেই খালি হাতে ফিরে যেতে হয়, জনগণের ভোটের অভাবে। কিন্তু এবারেই মেয়র পদে একাধিক নারী প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। যারা প্রার্থী হয়ে মাঠে থাকলে ঘটে যেতে পারে যেকোনো পরিবর্তন। কারণ বরিশালে মোট ভোটারের অর্ধেকই নারী ভোটার।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৩০ জুলাই নির্ধারণ করা হয়েছে বিসিসি নির্বাচনের তারিখ। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ওইদিন ব্যালট যুদ্ধের মধ্য দিয়ে মসনদে বসবেন ‘নগরপিতা’। এবারের সিটি নির্বাচনে এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক দলের ব্যানারে থাকা তিন নারীর মেয়র প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ জানিয়েছেন। এরমধ্যে সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির নেত্রী ও বরিশাল জেলা সমাজতান্ত্রিক দলের সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী। তবে এর বাহিরে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানের নাম শোনা গেলেও তার প্রার্থিতা হওয়ার বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো ঘোষণা দেননি তিনি।

কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন বাংলানিউজকে বলেন, নারী-পুরুষ বিষয়টি আসলে বড় কথা নয় কথা হচ্ছে দলের প্রার্থী। যখন আমি ধানের শীষের প্রার্থী কাজ করবো তখন আমাকে সেই চিন্তা করতে হবে। আমি নারী হিসেবে নয় আমি দলের কর্মী হিসেবে এই মনোনায়ন চাচ্ছি।  

তিনি বলেন,  যেহেতু পৌরসভা থেকে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এ পর্যন্ত কোনো নারীই প্রার্থী হয়নি। সেক্ষেত্রে এটা আলাদা গুরুত্ব বহন করে। বরিশালে অর্ধেক নারী ভোটার সেক্ষেত্রে নারী প্রার্থী হিসেবে একটি অগ্রাধিকার থাকবেই। নারী ও তরুণরা কি চায়, সাধারণ মানুষ কি চায় সেই ভাবনা থেকেই আমি এই শহরকে এগিয়ে নিতে চাই।

বরিশাল জেলা সমাজতান্ত্রিক দলের সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, প্রার্থী হিসেবে নারী বা তরুণ এগুলো সেকেন্ডারি আলোচনা। আমি যেটা মনে করি, প্রত্যেকের নিজের যোগ্যতা, কর্মকাণ্ড, জনগণের কাছে দৃশ্যমানতা এগুলো দিয়ে বিচারের মাপকাঠি হওয়া উচিত। প্রার্থী হতে নারী বা তরুণ এগুলো বিষয় নয়। আমরা মানুষের কাতারে দাঁড়িয়ে বিপদে-আপদে তাদের পাশে থাকি। সাধারণ মানুষের জন্য আমরা কাজ করছি করবো। আর জনগণই বিচার করবেন খারাপ-ভালোর।

নারীবান্ধব নগরীর বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা যেটা মনে করি আধুনিক বরিশাল সিটি করপোরেশনে নারীবান্ধব নগরীর যে সুযোগ-সুবিধা থাকার কথা ছিলো। বরিশালে সেই জায়গাটা প্রায় শূন্য। সাধারণ একটা পাবলিক টয়লেট যেটা নারীরা ব্যবহার করবে সে ব্যবস্থা এই নগরীতে নেই। কর্মজীবী হোস্টেল, ডে-কেয়ার সেন্টার এগুলোর কথা তো বাদই দিলাম। বরিশালে সম্প্রতি সময়ে যারা মেয়র হয়ে কাজ করেছেন নারীবান্ধব নগরী তৈরির চিন্তা আমরা একেবারেই দেখিনি। আমরা নির্বাচিত হলে শিশু ও নারীবান্ধন নগরীর জন্য যে কর্মকাণ্ড করা প্রয়োজন তা করা হবে।  

মহানগর ছাত্রদলের নেত্রী আফরোজা খানম নাসরিন বাংলানিউজকে বলেন, সাধারণ মানুষের আস্থার স্থান থেকেই মেয়রপ্রার্থী হতে চাই। দল যদি মনোনায়ন দেয় তবে আমি প্রার্থী হিসেবে আশাবাদী। নারী ও তরুণ যেটাই বলুন না কেন যখন সাধারণ মানুষের কাছে থাকি তখন তারাই উৎসাহ দেয়।

বরিশালের ৩০টি ওয়ার্ডে মোট ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১২৭টি এবং ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ৭১ হাজার ৯৫৯জন।

​বাংলা‌দেশ সময়: ০৮৫৫ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৮
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।