ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

তবুও থামছে না ইয়াবার আগ্রাসন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫২ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০১৮
তবুও থামছে না ইয়াবার আগ্রাসন ইয়াবা/ফাইল ছবি

কক্সবাজার: ‘চল যাই যুদ্ধে মাদকের বিরুদ্ধে’ এ স্লোগানকে প্রতিপাদ্য ধরে গত মাসের ৪ মে থেকে সারাদেশে চলছে মাদক বিরোধী সাড়াশি অভিযান। একমাসের অভিযানে এ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে প্রাণ হারিয়েছেন ১২০ জনের বেশি মাদককারবারী। 

খোদ ইয়াবার স্বর্গরাজ্য কক্সবাজার জেলায় ‘কথিত’ বন্দুকযুদ্ধে ৬ জন নিহত হয়েছেন। আটক হয়েছেন অর্ধশত পাচারকারী।

আত্মগোপনে চলে গেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত পাচারকারীদের অধিকাংশই।  

কিন্তু প্রশাসনের এতো কঠোর মনোভাব দমাতে পারেনি পাচারকারীদের। প্রতিদিনই কোনো না কোনো পয়েন্ট থেকে ইয়াবাসহ পাচারকারী বা পরিত্যক্ত ইয়াবা উদ্ধার করছে র‌্যাব-পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ড।  

এদিকে গত ২০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত ৭০ জনের বেশি ইয়াবাপাচারকারীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। উদ্ধার করেছে প্রায় ৫ লাখ  ইয়াবা।  

চলমান বন্দুকযুদ্ধে কক্সবাজারে ৬ জন নিহত হয়েছেন। তারা হলেন, শহরের শীর্ষ ইয়াবা কারবারী মো. হাসান (৩৪), মহেশখালীর মোস্তাক আহমদ (৩৫), টেকনাফের সাবরাংয়ের শীর্ষ ইয়াবা গডফাদার আকতার কামাল ও টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর একরামুল হক, নেত্রকোনার শীর্ষ মাদক কারবারী মুজিবুর রহমান এবং চকরিয়ার দা বাহিনীর প্রধান শাহাজাহান।  

বন্দুকযুদ্ধ, চিরুনি অভিযান, প্রশাসনের হার্ডলাইন তারপরও থামছে না ইয়াবার আগ্রাসান।  

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দেওয়া তথ্য মতে, ১ জুন টেকনাফের বরইতলী খাল থেকে ৪০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। একইদিন  রাত ১০টায় সদর উপজেলার ইসলামবাদ ইউপির ফকিরাবাজার থেকে দেড় হাজার ইয়াবাসহ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে (২৪) আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। এর আগে ২৬ মে শহরের কলাতলীতে ২ হাজার  ইয়াবাসহ নেছার আহমদ (৫০) নামে এক পাচারকারীকে আটক করে র‌্যাব। ২৫ মে ১২শ ইয়াবাসহ তিন পাচারকারীকে আটক করে পুলিশ। একইদিন পেকুয়ায় ইয়াবাসহ এক মাদক পাচারকারীকে আটক করে পুলিশ।  

২৪ মে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৬ হাজার ইয়াবাসহ ঈগল পরিবহনের চালক আবদুল আজিজ শেখ (৪৭) ও সুপারভাইজর সোহেল রানাকে (২৭) আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। তার আগের দিন মেরিনড্রাইভ সড়কের টেকনাফের হাবিরছড়া এলাকা থেকে আড়াই লাখ ইয়াবা উদ্ধার করে পুলিশ। একইদিন শহরের কলাতলীর সার্ফিং চত্বর থেকে ১ লাখ ৮ হাজার ইয়াবাসহ ২ জন আটক করেছে র‌্যাব।  

২২ মে টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এলাকা থেকে ৩০ হাজার ইয়াবাসহ আলী উল্লাহকে আটক করে মাদকদ্রব্য অধিদফতরের গোয়েন্দারা। একইদিন শহরের বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে আলী জোহরকে ২ হাজার ইয়াবাসহ আটক করে মাদকদ্রব্য এবং ২০ মে লিংকরোড় থেকে ৬ হাজার ইয়াবাসহ মো. রিফাতকে আটক করে র‌্যাব।

  
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রণজিত কুমার বড়ুয়া বলেন, গত একমাসে সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করেছি। ৪০ জন পাচারকারীকে আটক করেছি। এরমধ্যে ২৫ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হওয়ার পর টেকনাফের চিহ্নিত পাচারকারীরা ভারত, মায়ানমার, সৌদিয়া আরব ও মালেয়শিয়াতে পালিয়েছে। কিছু কিছু ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মগোপন করেছেন। তারপরও আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি।

র‌্যাব-৭ কক্সবাজার কোম্পানি কমান্ডার মেজর রুহুল আমিন বলেন, মাদকের বিস্তার বা পাচার বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলবে। মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের দেওয়া আল্টিমেটাম বাস্তবায়ন করা হবেই।

এবিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল বলেন, আগের তুলনায় পাচার অনেকাংশে কমেছে। এখন দরকার জন সচেতনতা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যদি জনগণ সহযোগিতা করে তবে মাদক নির্মূল করা সময়ের ব্যাপার মাত্র।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০১৮
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।