স্বাস্থ্যসম্মত এই খাবারটি সিলেটের প্রতিটি রেস্টুরেন্ট এমনকি বাসা-বাড়িতেও ব্যাপক জনপ্রিয়। সেইসঙ্গে ইফতারের অনুষঙ্গ আখনি (সিলেটিদের বিশেষ প্রক্রিয়ায় রান্না তেহারি) থাকবেই।
সারাদিন উপবাসের পর ইফতারে ভাজাপোড়া খেলে এসিডিটির সমস্যায় ভোগার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই স্বাস্থ্যসম্মত খাবার হিসেবে খিচুড়ি সিলেটের সবার কাছেই সমাদৃত। চাহিদা থাকায় ইফতারে খিচুড়ি বিক্রির ধুম পড়ে এ জেলার রেস্টুরেন্টগুলোতে। আর বাসা-বাড়িতে ইফতারের আয়োজনে গৃহিণীরা জনপ্রিয় পাতলা খিচুড়ি রাঁধতে ভুলেন না। এছাড়া মাদরাসা ও এতিমখানাগুলোতেও ইফতারের সময় খিচুড়ি-আখনি পরিবেশন করা হয়। দেহের জন্য সহনীয় ও কম মশলাদার হওয়াতে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছে খাবারটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতি কেজি (এক বাটি) খিচুড়ির মূল্য ১০০ টাকা। এক কেজি আখনির ২২০ টাকা। নগরের পানসী, পাঁচভাই, ভোজন বাড়ি, পালকী, সাম্পান রেস্টুরেন্ট ঘুরে দেখা যায়, সব রেস্টুরেন্টেই খিচুড়ি ও আখনি বিক্রি হচ্ছে। তবে দামে সহনীয় হওয়ায় ইফতার সামগ্রী হিসেবে খিচুড়িই প্রথম পছন্দ সব শ্রেণির মানুষের।
জিন্দাবাজারের পানসী রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী আবু বকর সিতু বাংলানিউজকে বলেন, রোজাদারদের জন্য খিচুড়ি স্বাস্থ্যসম্মত। সারা দিন অভুক্ত থেকে ইফতারের সময় খিচুড়ি বেশি পছন্দ এ অঞ্চলের মানুষের। ডাল-চাল ছাড়াও খিচুড়িকে সুস্বাদু করে তুলতে বিভিন্ন প্রকারের সবজি ও মশলা দেওয়া হয়। এছাড়া আখনি মোরগ, পোলাও ও গরুর মাংসের এই তিন ধরনের হয়।
পাঁচভাই রেস্টুরেন্টের আব্দুল কাইয়ুম বাংলানিউজকে বলেন, রোজাদারদের স্বাস্থ্যের বিষয়টি চিন্তা করে প্রতিনিয়ত ইফতারের অন্যসব আইটেমের পাশাপাশি খিচুড়িও থাকে। দামে কম হওয়ায় বিক্রিও ভাল।
পাঁচভাই থেকে খিচুড়ি কিনে নিতে আসা নগরের মিরের ময়দান অধিবাসী মাছুম আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, রেস্টুরেন্টের খিচুড়িতে বিভিন্ন উপকরণ দেওয়া হয়। তাছাড়া এসব খিচুড়ি কখনও বাসি বিক্রি হয়না। তাই প্রতিদিন রেস্টুরেন্ট থেকেই খিচুড়ি কেনা হয়।
চিকিৎসকদের মতে, সারাদিন রোজা রাখার পর খালি পেটে শক্ত খাবার পড়লে অনেকসময় তা শরীরের জন্য অসহনীয় হয়ে ওঠে। এতে এসিডিটি বেড়ে যায়। এদিকে খিচুড়ি সহজে হজম হয়। কেননা, এটি তরল খাবার, শরীরের জন্যও ক্ষতিকারক নয়।
ড. হারুনুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, যাদের আলসার সমস্যা এবং দীর্ঘদিন ধরে এসিডিটিতে ভুগছেন কেবল তাদের বেলায় পাতলা খিচুড়ি খণ্ডকালীন সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে। অন্যদের জন্য সারাদিন রোজা রাখার পর এ খবারটি ক্ষতিকর নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১১ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৮
এনইউ/এনএইচটি