ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মাদারীপুরে ঐতিহ্যবাহী কুম্ভমেলা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৬ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৮
মাদারীপুরে ঐতিহ্যবাহী কুম্ভমেলা শ্রী শ্রী গণেশ পাগল সেবাশ্রমের মূল ফটক

মাদারীপুর: প্রতি বছরের মতো এবারও মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি-দীঘিরপাড় মহামানব শ্রী শ্রী গণেশ পাগল সেবাশ্রমে উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী কুম্ভমেলা হয়েছে। 

সোমবার (২৮ মে) সন্ধ্যার পর থেকে এ মেলা শুরু হয়। এক রাতের এ মেলায় কমপক্ষে ২০ লাখ ভক্তের সমাগম ঘটবে বলে দাবি করছেন আয়োজকেরা।

জানা যায়, ১২৮৮ বঙ্গাব্দে (১৮৮১ খ্রি.) অর্থাৎ ১৩৭ বছর আগে ১৩ জন সাধু ১৩ কেজি চাল ও ১৩ টাকা নিয়ে ১৩ জ্যৈষ্ঠ রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ির দীঘিরপাড় ভারতের কুম্ভমেলাকে অনুসরণ করে এ মেলার আয়োজন করেন। সেই থেকে কদমবাড়ীর দীঘিরপাড় শ্রীশ্রী গনেশ পাগল সেবাশ্রমে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এক রাতের মেলা হলেও চলে সকাল থেকে পরদিন ভোর রাত পর্যন্ত। প্রায় ৯ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বাড়ি-ঘর, মাঠ-ঘাট ও ক্ষেত-খামারে রাতভর মুখরিত থাকে মানুষের পদচারণায়।  

আয়োজক কমিটির সদস্যরা জানান, সত্য যুগে দেবতা ও অসুরদের সমুদ্র মন্থনে যে অমৃতসুধা উঠেছিল তা চারটি কুম্ভপাত্রে ভারতের হরিদ্বার, প্রয়াগ, উজ্জয়িনী ও নাসিকের চার স্থানে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনার পর থেকে সাধু-সন্নাসীরা কুম্ভ মেলার আয়োজন করে আসছেন।  

মেলা উপলক্ষে বসেছে বিভিন্ন ধরনের স্টল

ইতোমধ্যে বরিশাল, রাজশাহী, বগুড়া, চিটাগং, রংপুর, যশোর, খুলনা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, গৌরনদীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দলে দলে মানুষ মেলায় আসতে শুরু করেছে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও নেপাল থেকেও বহু ভক্ত, সাধু-সন্নাসীর আগমন ঘটছে। দেশ-বিদেশ থেকে আসা এসব সাধু-সন্নাসী ও ভক্তরা প্রার্থনা, আরাধনা, পূজা-অর্চণা, ধর্মীয় সঙ্গীত, নৃত্য-বাদ্য-বাজনা পরিবেশনের মধ্য দিয়ে রাত অতিবাহিত করেন।
 
এদিকে মেলা উপলক্ষে সাত দিন আগে থেকে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে এসেছেন দোকানিরা। বাঁশ-বেতের শিল্প কারুকাজ খচিত গৃহস্থালী মালামাল, মৃৎশিল্প বা মাটির তৈরী তৈজসপত্র, বাহারী মিষ্টি, দৃষ্টি আকর্ষণীয় খেলনা ও বাহারী প্রসাধনী পণ্য দিয়ে দুই সহস্রাধিক স্টল বসেছে মেলা প্রঙ্গনে।  

মেলা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রণব বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, মেলা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভা হয়েছে। অনুষ্ঠানে আগত ভক্তদের আপ্যায়নের জন্য চিড়া, গুড়, চাল, ডাল ও খিচুড়ি প্রসাদের আয়োজন করা হয়েছে।

রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল মোর্শেদ বাংলানিউজকে বলেন, মেলা শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগ থেকেই কদমবাড়ী মেলার পুরো এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এজন্য পুলিশ প্রশাসন সজাগ রয়েছে।
 
মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ বিভাগ) উত্তম প্রসাদ পাঠক বাংলানিউজকে বলেন, আইনশৃংখলা রক্ষার জন্য তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ডিএসবি, ডিবি, র‌্যাব-৮ এর সদস্য ও সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মেলায় আগত দর্শনার্থীদের তল্লাশি করাসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৮
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।