সোমবার (২৮ মে) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়।
এদিকে ফুটপাত দখলমুক্ত এ অভিযানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপরে থাকা সাইনবোর্ড ভাঙার কারণে নগরের উত্তর চকবাজার ও কাটপট্টি এলাকার প্রায় আড়াইশ’ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দুপুর ১টা থেকে বন্ধ করে দেয় দোকান মালিক ও কর্মচারীরা।
বরিশাল মহানগরের দোকান কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি স্বপন দত্ত জানান, রোববার (২৭ মে) রাত ৮টার দিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে থাকা ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে বলা হয়।
সে নির্দেশনা অনুযায়ী সোমবার সকালে উত্তর চকবাজার ও কাটপট্টি এলাকার ব্যবসায়ীরা ফুটপাত দখলমুক্ত রেখেই দৈনন্দিন কার্যক্রম শুরু করে। আজ কোনও দোকানের সামনে ভ্যান গাড়ির ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের থাকতে দেয়া হয়নি।
সকাল ১০টা থেকে কোতোয়ালি থানা পুলিশ অভিযানে এসে ফুটপাত দখলমুক্ত করার পাশাপাশি দোকানের ওপরের অংশে থাকা সাইনবোর্ডও ভাঙচুর শুরু করে। এর প্রতিবাদ করে কোনও লাভ না হলে ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেয়।
পাশাপাশি দোকান মালিকরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে যান। সেখানে পুলিশ প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে ঈদের পর বসবেন এমন আশ্বাসের ভিত্তিতে দোকানপাট খুলে দেয়া হয়।
বরিশাল নগরের চকবাজার এলাকার ব্যবসায়ী দিলীপ সাহা জানান, ফুটপাত দখলমুক্ত করার নামে পুলিশের অভিযানে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানের ওপরে থাকা সাইনবোর্ড ভাঙচুর করে। প্রতিবাদ করে কোনও লাভ হয়নি। তাদের সঙ্গে সিটি কর্পোরেশনের কিছু লোকও ছিল।
তিনি বলেন, চকবাজারের রাস্তা অনেকটাই সংকুচিত ছিল। সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরনের সময় ব্যবসায়ী ও ভবন মালিকরা মিলে করপোরেশনকে জায়গা দিয়ে রাস্তা প্রশস্ত ও ফুটপাত নির্মাণের সহায়তা করে। তারপরও যদি আমরা অবৈধভাবে দখল করে থাকি তবে সাত দিন আগে নোটিশ দিতো, আমরা সরিয়ে নিতাম। কোনও নোটিশ ছাড়াই এ অভিযানে আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ চকবাজারে জেলা পরিষদের একটি মার্কেট রয়েছে যা সড়কের ওপর নির্মিত। সেখানকার সব সাইনবোর্ড রাস্তা দখল করে থাকলেও সেখানে কোনও অভিযান চালানো হয়নি।
ব্যবসায়ী সমিতির নেতা মৃনাল কান্তি সাহা জানান, ফুটপাত দখলমুক্ত করার অভিযানের সময় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনের বেশ কিছু ছোট-বড় সাইন বোর্ড ভেঙে ফেলা হয়। ফুটপাত দখলমুক্ত করার বিষয়ে কোনও অভিযোগ নেই ব্যবসায়ীদের। তবে প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ভাঙচুর করায় ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্দ হয়েছেন।
তিনি বলেন, ফুটপাতের ওপরে যদি কোনও সাইনবোর্ড থাকে তবে ব্যবসায়ীদের সময় বেধে দেয়া হোক, তা সরিয়ে নেয়া হবে। ঈদের আগে এ ধরনের অভিযানে আতঙ্কিত হয়ে ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেয়।
বরিশাল মেট্রোপলিটনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার শাহানাজ পারভীন বলেন, ঈদে সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক কর্মযজ্ঞ হয় চকবাজার কাটপট্টি এলাকায়। এখানে শুধু নগরের নয়, দূর-দূরান্ত থেকেও মানুষ এসে পণ্য ক্রয় করেন। রাস্তাটি সংকুচিত হওয়ার পাশাপাশি এর পাশের ফুটপাতও অবৈধভাবে দখল করে রাখা হয়েছিল। পুলিশের পক্ষ থেকে আগে থেকে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে আজ এ অভিযান। পুরোপুরি অবৈধ স্থাপনা দখলমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৮
এমএস/আরবি