ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাসে ভরসা নাই, ওয়াটার ট্যাক্সিতে ১৫ মিনিট!

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১৮ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৮
বাসে ভরসা নাই, ওয়াটার ট্যাক্সিতে ১৫ মিনিট! কম সময়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানো যায় বলে রাজধানীবাসীর কাছে জনপ্রিয় হয়েছে ওয়াটার ট্যাক্সি। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানীর গুলশান-১ নম্বর লিংক রোডে হাতিরঝিল ওয়াটার ট্যাক্সির টার্মিনালে সারিবদ্ধ মানুষের ভিড়। রমজানমাসের শুরু থেকেই বিকেল ৪টার পর এ অবস্থা। বিশেষ করে অফিস ছুটির পর ভিড় শুরু হয় এখানে। 

গুলশান-১ নম্বর টার্মিনালের মতোই এফডিসি ও রামপুরা ব্রিজ এলাকায় ট্যাক্সির টার্মিনালে যাত্রীদের ভিড়। ইফতারির আগে বাসের ঝামেলা এড়িয়ে বাড্ডা, গুলশান, রামপুরা, খিলগাঁও, কারওয়ান বাজার, মগবাজার, দিলু রোড, ইস্কাটন, বাংলামোটর, তেজগাঁও এলাকার মানুষ ওয়াটার ট্যাক্সির সেবা নিচ্ছেন।

লাইনে দাঁড়াতে হলেও তাতে স্বস্তি রয়েছে নির্ঝঞ্জাট বাড়ি ফিরতে পারার কারণে। গুলশান লিংক রোড টার্মিনালের টিকিট কাউন্টার থেকে কিছুটা দূরে লাইনে দাঁড়িয়ে আহনাফ হোসেন রাব্বী। বেসরকারি কোম্পানির চাকরি সূত্রে নিয়মিত তাকে ‍গুলশান-১ নম্বরে যাতায়াত করতে হয়। সপরিবারে বসবাস করেন গ্রিনরোড কমফোর্ট হাসপাতালের সামনে।

বাস ছেড়ে ওয়াটার ট্যাক্সির যাত্রী হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পঞ্চম রোজায় অফিসের টুকিটাকি কাজ শেষে গুলশান-১ নম্বর থেকে বাসে চড়েছিলাম। কিন্তু বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে ইফতারের সময় পেরিয়ে যায়। পথেই মাগরিবের আজান পেয়েছি। মহাখালী, বিজয় সরণী, ফার্মগেট সব জায়গায়তেই জটলা। বিশেষ করে ইফতারির আগ মুহূর্তে যেন গাড়ি গড়েই না। অফিস শেষে গুলশান-১ নম্বর থেকে বাসে চড়লে পরিবারের সঙ্গে ইফতার করতে পারবো কি? এ বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু ওয়াটার ট্যাক্সিতে ১৫ মিনিটেই এফডিসি পৌঁছে যাবো। এরপর বাসায় পৌঁছে পরিবারের সঙ্গে ইফতার করতে পারবো। তাই রমজান মাসে ওয়াটার ট্যাক্সিতে চড়ি, বাসে কোনো ভরসা নাই।

ভিন্ন লাইনে দাঁড়িয়ে আরিফুল ইসলাম। তিনি রামপুরার যাত্রী। গুলশানে একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। অফিস করেই তিনি ওয়াটার ট্যাক্সির টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছেন। তিনি বলেন, গুলশান-১ নম্বর থেকে ১০ মিনিটেই রামপুরা পৌঁছানো যায়। কিন্তু ইফতারির আগ মুহূর্তে বাসে অনেক সময় এক ঘণ্টাও লেগে যায়।

কম সময়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানো যায় বলে রাজধানীবাসীর কাছে জনপ্রিয় হয়েছে ওয়াটার ট্যাক্সি।  ছবি: বাংলানিউজ

হাতিরঝিল কর্তৃপক্ষ জানায়, রমজানে ইফতারের আগে ওয়াটার ট্যাক্সিতে যাত্রী সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এখন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই সেবা চালু আছে। রমজান মাসে বিকেল ৪টা থেকে ইফতারির আগ মুহূর্তে গুলশান লিংক রোড থেকে রামপুরায় প্রায় দেড় হাজার এবং এফডিসি’তে এক হাজার যাত্রী যাতায়াত করছেন।

প্রতি যাত্রীর ভাড়া গুলশান-১ থেকে এফডিসি ৩০ টাকা এবং গুলশান-১ থেকে রামপুরা টার্মিনাল ২৫ টাকা। ইফতারির ১৫ মিনিট আগ থেকে টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়।   এবং ইফতারের ১০ মিনিট পর আবারও যাতায়াত শুরু হয় বলেও জানান তিনি।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে চালুর পর থেকে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সির বহরে যুক্ত হয়েছে আরও তিনটি জলযান। এ নিয়ে হাতিরঝিলের এফডিসি প্রান্ত থেকে রামপুরা ও বাড্ডা লিংক রোড পর্যন্ত চলাচলকারী ওয়াটার ট্যাক্সির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩টিতে। শুরুতে বহরে ওয়াটার ট্যাক্সির সংখ্যা ছিল মাত্র চারটি। ট্যাক্সিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়টির আসন সংখ্যা ৮০। এছাড়া অন্যগুলোর গড়ে ৪২ থেকে ৫০ জন বসার ব্যবস্থা আছে।

গুলশান লিংক রোড টার্মিনালের ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, ৪টার পর থেকে ইফতারির আগ মুহূর্তে যাত্রী সংখ্যা বাড়তে থাকে। কারণ ওয়াটার ট্যাক্সিতে উঠলেই নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানো যায়, কিন্তু বাসে জটলায় পড়ে থাকে হয়। ইফতারির আগে সবার তাড়া থাকে তাই জটলাও বেশি।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৬ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৮
এমআইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।