ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সড়ক সংস্কার কাজের মান নিয়ে অসন্তোষ স্থানীয়দের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০৭ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৮
সড়ক সংস্কার কাজের মান নিয়ে অসন্তোষ স্থানীয়দের সংস্কার কাজ চলছে পাবনার বিভিন্ন সড়কে

পাবনা: ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আগামী ৮ জুনের মধ্যে সব ভাঙা সড়ক মেরামতের নির্দেশনা দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পাবনায় সড়ক বিভাগ নির্ধারিত সময়ে মেরামতের কাজ সঠিকভাবে শেষ হবে দাবি করলেও তা নিয়ে সংশয় রয়েছে স্থানীয়দের। এছাড়া কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার মানুষ। 

পাবনা সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় মোট ১৩৪ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক রয়েছে। মহাসড়ক সংস্কার কাজ শেষ করে এখন আঞ্চলিক ও জেলা মহাসড়কের কাজ চলছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঐতিহ্যবাহী পাবনা জেলা শহরে প্রবেশের জন্য রয়েছে চারটি প্রবেশমুখ। এই প্রবেশমুখের দুইপ্রান্ত পাবনা-ঢাকা মহাসড়ক আর অপরদিকে রয়েছে পাবনা-রাজশাহী ও পাবনা-কুষ্টিয়া মহাসড়ক। গত বছরের জুন থেকে শুরু হওয়া কাজে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯৮ লাখ টাকা।
 
ঢাকা থেকে পাবনা প্রবেশের সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে বাঘাবাড়ি থেকে। বাঘাবাড়ি-নগড়রবাড়ি জাতীয় মহাসড়কের ৩০ কিলোমিটার রাস্তার যেখানে খানাখন্দ আর বেহাল দশা হয়েছিলো তার অনেকটা মেরামতের কাজ করেছে সড়ক বিভাগ। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বাজার এবং মোড়গুলোর এখনও বেহাল দশা। স্থানীয়দের দাবি, শুধু লোক দেখানো আর অর্থ লোপাটের জন্যে এই কাজ করছে সড়ক বিভাগ।  

এদিকে শুধু মুলাডুলি থেকে যে সড়কটি পাবনা, ঈশ্বরদী ও কুষ্টিয়া ভাগ হয়েছে সেই দাশুড়িয়া মোড়ে ইতোমধ্যে বেশ কয়েক ধাপে কাজ করলেও সেখানে তৈরি হয়েছে আগের অবস্থা। একটু বৃষ্টি হলেই সড়ক পরিণত হচ্ছে ডোবা নালায় আর মরণ ফাঁদে আটকে থাকছে দূরপাল্লার যানবাহন।  

এই সড়ক দিয়ে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের যাত্রীবাহী বাস এবং মালবাহী যানবাহন চলাচল করে। দাশুড়িয়া থেকে মুলাডুলি পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার সড়কে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। মাঝে মধ্যেই গাড়ি বিকল হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। দাশুড়িয়া থেকে লালন শাহ সেতু পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সড়ক যান চলাচলের জন্য এখন তৈরি রয়েছে। যতটুকু কাজ রয়েছে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে যান চলাচলের উপযোগী করার আশ্বাস দিয়েছে পাবনা সড়ক বিভাগ।

ঢাকা থেকে পাবনা চাটমোহর থেকে রেল হয়ে সড়কপথে টেবুনিয়া-চাটমোহর সড়কের কাজ শেষ হয়েছে। অপরদিকে চাটমোহর থেকে ফরিদপুর হয়ে বাঘাবাড়ি রাস্তার ৩০ কিলোমিটার সড়কে মেরামত কাজ চলছে।

এখানে পাবনা থেকে কাশিনাথপুর ৪৫ কিলোমিটার সড়কে কিছুটা হলেও সংস্কার কাজ করেছে সড়ক বিভাগ। আর কাশিনাথপুর থেকে কাজিরহাটের রাস্তার কাজ নির্দিষ্ট সময়ে ঈদের আগে শেষ হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, জাতীয় মহাসড়ক, জেলা মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশাপশি পৌর শহরের বিভিন্ন রাস্তারও বেহাল দশা। পাবনা শহরে প্রবেশের দুইপাশে এসব রাস্তায় প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। শালগাড়িয়া ও দক্ষিণ রাঘবপুর মোজাহিদ ক্লাব এলাকা দিয়ে যাওয়া সড়ক বিভাগের রাস্তা ও রাধানগর এলাকা দিয়ে যাওয়া রাস্তা ভোগান্তির অন্যতম কারণে পরিণত হয়েছে। ইতোপূর্বে বেশ কয়েকবার সংস্কার কাজ করা হলেও টিকছে না কোনমতেই। কাজের নিম্নমান এবং লোক দেখানো কাজ করা হয়েছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছে। ঈদকে সামনে রেখে আবারও সড়ক বিভাগ নতুন বাজেটে কাজ করছে।  

এ বিষয়ে কথা বলেন সরকার ট্রাভেলস-এর পরিচালক এম এ কাফি সরকার। তিনি বলেন, সড়ক বিভাগ যে টাকা ব্যয় করে এই উন্নয়ন কাজ করছে তাতে আমরা হতাশ হচ্ছি। অল্প ক’দিনের জন্য হইতো গাড়ি ভালো চলবে, তারপরে সেই একই অবস্থা। বর্তমানে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ পাবনা-নগরবাড়ি মহাসড়ক। এই সড়কের অবস্থা খুব খারাপ। আমরা চাই খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে এই সড়কের যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে সংস্কার করবে কর্তৃপক্ষ।

পাবনা এক্সপ্রেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল এহসান খান রিয়ন জানান, তবে সড়কের উপর সপ্তাহে চারদিন বিভিন্ন স্থানে হাট-বাজার বসানো হয়। বাস যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে হাটগুলোকে সড়ক থেকে অপসারণ করতে হবে।

পাবনা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সমীরন রায় জানান, চলতি অর্থবছরে কম লোকবল দিয়ে খুব স্বল্প সময়ে কাজ করছি। আশা করছি সরকারের দেওয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে। তবে আমরা কাজের মান ঠিক রাখার চেষ্টা করছি। এবারে ঈদে পাবনার সবগুলো সড়ক যান চলাচলের সম্পূর্ণ উপযোগী থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৬ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৮
আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।