ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাজধানীতে বিকেলের ব্যস্ততা ইফতার ঘিরে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৯ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৮
রাজধানীতে বিকেলের ব্যস্ততা ইফতার ঘিরে জমে উঠেছে ইফতার বাজার

ঢাকা: সকাল থেকে প্রাত্যহিক ঢাকার জ্যামটা আছে আগের মতোই। সবাই আর সবদিনের মতো ব্যস্ত নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে। এরপর দুপুরের রোদটা মাথার উপর থেকে একটুখানি সরেছে কি সরেনি; হঠাৎ করেই যেন শহরের বাতাসে লাগলো অন্যরকম ব্যস্ততা। বদলে গেলো প্রতিদিনের জীবনযাত্রার রুটিন। তোড়জোড় শুরু হয়ে গেলো ইফতারের।

শনিবার (১৯ মে) দুপুর দেড়টা পর্যন্তও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার দোকানিদের মধ্যে তেমন ব্যস্ততা দেখা যায়নি। নামমাত্র খোলা হয়েছে তাদের দোকানগুলো।

তেমন কোনো বেচাকেনা নেই। বেশকিছু দোকানে শাটারও লাগানো। কিন্তু দুপুর ২টা বাজতে না বাজতেই চিত্র একদম ভিন্ন। ইফতারের বেচাকেনাকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত হয়ে পড়েন দোকানিরা।

দিনের শুরু থেকে হোটেল, রেস্তোরাঁ, ফুটপাতের খাবারের দোকানগুলো ঝাঁপ ফেলা অবস্থায় থাকলেও দুপুর গড়াতেই বদলে যেতে থাকে দৃশ্যপট। খাবারের দোকানের সামনে, বাণিজ্যিক এলাকার ফুটপাতে, পাড়া-মহল্লার মোড়ে মোড়ে টং দোকানিরা টেবিল সাজিয়ে বসে যায় ইফতারের পসরা নিয়ে। কোনো কোনো দোকানে টাঙানো হয়েছে ‘খোশ আমদেদ মাহে রমজান’ লেখা ব্যানারও।

জমে উঠেছে ইফতার বাজাররাজধানীর চকবাজার মসজিদের সামনে বসেছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ইফতারের বাজার। এখানেই বাংলানিউজের কথা হয় ইফতার বিক্রেতা রুবেল আহমেদের সঙ্গে। দুপুর গড়াতে না গড়াতেই বিভিন্ন পদের ইফতার নিয়ে হাজির হয়েছেন তিনি।

রুবেল বলেন, আসরের নামাজের পর থেকেই ইফতারের প্রস্তুতি নিতে থাকেন রোজাদাররা। সেজন্য আরও আগে থেকেই তৈরি হতে হয় আমাদের। বিকেলের হাওয়াটা লাগতেই দোকানগুলোতে বাড়তে থাকে ক্রেতাদের সমাগম। এরপর থেকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেচাকেনার ব্যস্ততাও বেড়ে যায়। এ ব্যস্ততা চলে একদম ইফতারের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত।

জমে উঠেছে ইফতার বাজার-ছবি-দেলোয়ার হোসেন বাদলবিকেল ৩টা থেকে শুরু করে ইফতারের সময় পর্যন্ত এখানকার ইফতার-বাজারে সবচেয়ে বেশি যে বাক্যটি শোনা যায় তা হলো- 'বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙ্গায় ভইরা লইয়া যায়। ' ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ এর বিক্রেতা মোহাম্মদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, দুপুরের পর থেকে দোকান চালু করলেও ইফতার তৈরির মূল কাজ শুরু হয় মূলত সকাল থেকেই। বিভিন্ন মশলা, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে ইফতার তৈরি করে তারপর দুপুরে আসি দোকানে। কেননা দুপুরের পর থেকেই মূলত ইফতারের বিক্রিটা শুরু হয়।

ইফতারের দোকানগুলোকে ঘিরে এ ব্যস্ততা পবিত্র রমজান মাসের চিরচেনা দৃশ্য। সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতার তৈরির কাজটি বেশ কষ্টকর হয়ে যায় অনেকের কাছেই। বিশেষ করে চাকরিজীবীদের একটু বেশিই চাপে থাকতে হয়। সেজন্য তারা ইফতার কিনে নেওয়াটাকেই বেশি প্রাধান্য দেন। পাশাপাশি মাথায় রাখেন স্বাদ আর ঐতিহ্যের বিষয়টিও।

জমে উঠেছে ইফতার বাজার-ছবি-দেলোয়ার হোসেন বাদলকথা হয় ইফতার ক্রেতা জুলকার নাঈমের সঙ্গে। আসরের আজানেরও বেশ আগে তিনি চকবাজার এসেছেন ইফতার কিনতে। তিনি বলেন, রমজানে স্বাভাবিকভাবেই ব্যস্ততা বেড়ে যায় বহুগুণ। সেহেরি, ইফতার তৈরি, ইবাদত-বন্দেগী নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয় সবাইকে। সময়মতো সেহেরি ও ইফতার তৈরি করে তারপর আবার পরিবারের সবাই মিলে একসঙ্গে ইফতার করা চাট্টিখানি কথা নয়!

তিনি বলেন, আগে থেকে কিছু কাজ গুছিয়ে না রাখলে হিমশিম খেতে হবেই। যদি কিছু কাজ আগেভাগে শেষ করে রাখা যায় তবে সময় বাঁচবে বেশ কিছুটা। তাই এখনই বাসার জন্য ইফতার কিনে নিয়ে যাচ্ছি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৮ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৮
এইচএমএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।