ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রোজাদারের পছন্দের তালিকায় সুস্বাদু হালিম

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৫ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৮
রোজাদারের পছন্দের তালিকায় সুস্বাদু হালিম হালিম। ছবি: অনিক খান

ময়মনসিংহ: ছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু, খেজুর, বেগুনি, চপ কিংবা জিলাপি। ইফতারির তালিকায় স্বভাবতই রোজাদারদের পাতে থাকে মুখরোচক এসব পদ। কিন্তু আরও একটি পদ ছাড়া ইদানিং ইফতারির কথা ভাবাই যায় না। রসনাতৃপ্তির জন্য মশলাদার এ খাবার বিভিন্ন বয়সী মানুষের কাছেই খুব প্রিয়।

ইফতার বাজারে মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত শ্রেণির ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে গরু ও খাসির মাংসের সুস্বাদু হালিম। এ দুই প্রকার হালিম রোজাদারদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে।

মাটির পাতিলের আকার অনুযায়ী দাম নির্ধারণ হয় হালিমের।

আকার ভেদে প্রতি পাতিল হালিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায়। তবে খানিকটা বেশি হলেও স্বাদ নিতে হালিমের জন্য টাকা খরচা করতে কার্পণ্য করেন না রোজাদাররা।

ময়মনসিংহ নগরের সি কে ঘোষ রোডের সারিন্দা রেস্টুরেন্ট ও নগরীর নতুন বাজার এলাকার রোম থ্রি রেস্টুরেন্টের তৈরি হালিম সান্ধ্যকালীন ইফতারির তালিকায় প্রাধান্য পাচ্ছে।

এসবের পাশাপাশি ওল্ড পুলিশ ক্লাব রোড এলাকার ছোটখাটো কয়েকটি হোটেলের তৈরি হালিমেরও বেশ কদর রয়েছে। হালিম।  ছবি: অনিক খানশনিবার (১৯ মে) বিকেলে নগরের বেশ কয়েকটি ইফতার বাজার হিসেবে পরিচিত এসব রেস্টুরেন্টে উপস্থিত ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো ইফতারে অপরিহার্য উপাদান হিসেবে ঠাঁই করে নেয়া হালিমের।

ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার মিশেলে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে তৈরি হচ্ছে গরু ও খাসির মাংসের হালিম।

নগরের সারিন্দা রেস্টুরেন্টে বড় ডেগচিতে রান্না করা খাসির হালিম বিক্রির উদ্দেশে নিয়ে এসেছেন কারিগররা। এর ঠিক সামনেই রাখা ছোট-বড় মাটির পাতিল।

বিভিন্ন রকমের ডাল, মসলা, ধনিয়া পাতা, আদাকুচি, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ ও বিট লবণের সঙ্গে একেকটি মাটির পাতিলে দেয়া হচ্ছে রান্না করা গরু বা খাসির মাংস।

আর এ পুরো কাজটি দেখভাল করছেন এ রেস্টুরেন্টের তত্ত্বাবধায়ক মো. মিঠুন। বাংলানিউজকে এ বিক্রেতা জানান, ইফতারিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে সারিন্দা রেস্টুরেন্টের তৈরি হালিম।

এ হালিম যেমন স্বাস্থ্যসম্মত, তেমনি গোটা ময়মনসিংহে এর সুনামও রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় শতাধিক পাতিল হালিম বিক্রি হয়। প্রতি পাতিলের দাম ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা।

নগরের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শেষ মোড় এলাকা থেকে হালিম কিনতে এসেছেন গৃহবধূ আবিদা সুলতানা। তিনি জানান, সারিন্দার তৈরি খাসির হালিমের মজাই আলাদা।

স্বাদ আর মানের কারণেই সম্ভবত এ হালিমের চাহিদাও ব্যাপক। তার দু’সন্তানের ইফতারের অন্য আইটেমের সঙ্গে হালিম চাই ই চাই।

এ রেস্টুরেন্টের পাশাপাশি নগরের নতুন বাজার মোড় এলাকার রোম থ্রি রেস্টুরেন্টেও গরুর মাংসের হালিম কিনতে ভিড় করেছেন মানুষজন। এ রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, হালিমের বেশিরভাগ ক্রেতাই মধ্য ও উচ্চবিত্ত।

দাম যেমনই হোক এখানে রোজাদারদের ইফতারে হালিম এক গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ। আকার ভেদে ১৫০ টাকা থেকে ৪শ’ টাকা করে প্রতি পাতিল হালিম বিক্রি হয়।

তিনি আরও জানান, রোজার সময়গুলোতে হালিম বিক্রি করে দম ফেলারও সময় পাওয়া যায় না। সন্ধ্যার আগেই কয়েক ডেগচি হালিম বিক্রি হয়। নগরের মানুষজনের কাছে এ হালিমের চাহিদা ব্যাপক।

নগরীর ওল্ড পুলিশ ক্লাব রোডের ছোটখাটো কয়েকটি রেস্টুরেন্টে আবার এ দুই রেস্টুরেন্টের অর্ধেক দামে হালিম পাওয়া যায়। খাসির তৈরি এ হালিম অন্যসব উপকরণ অনেকটা একই।

তবে দামে ভিন্নতা প্রসঙ্গে এ হোটেলের এক বিক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, তারকা হোটেলে সব জিনিসের দাম এমনিতেই বেশি থাকে।

আমাদের হোটেলের হালিমের কথা শুনলেও ক্রেতার জিভে অটোমেটিক জল চলে আসে। ক্রেতার সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটাতেই আমরা অনেক কম দামে হালিম বিক্রি করি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৮
এমএএএম/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।