ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এক মাসেও খোঁজ মিললো না সেই তিন যুবকের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১০ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৮
এক মাসেও খোঁজ মিললো না সেই তিন যুবকের সালাউদ্দিন, মহরম আলী ও বাহার মিয়া

খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ির মহালছড়ি থেকে তিন যুবক নিখোঁজ হওয়ার দীর্ঘ একমাস পেরিয়ে গেলেও তাদের হদিস মেলেনি এখনও। অপহরণকারীরা তিনজনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর মুক্তিপণ হিসেবে পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরও তাদের মুক্তি না দেওয়ায় অনিশ্চয়তা, উদ্বেগ আর দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে স্বজনদের। অবশ্য পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার ‘ঘটনাটি খতিয়ে দেখা’র কথা বলা হচ্ছে।

গত ১৬ এপ্রিল মহালছড়ির মাইসছড়ি থেকে কাঠ কিনতে যাওয়ার পর নিখোঁজ হন মাটিরাঙ্গার নতুন পাড়া এলাকার খোরশেদ আলমের ছেলে মো. সালাউদ্দিন (২৮), একই এলাকার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে মহরম আলী (২৭) ও আদর্শ গ্রামের বাসিন্দা ট্রাক চালক বাহার মিয়া।  
 
স্বজনরা জানান, সেদিন ১০টার দিকে একটি মোটরসাইকেলে করে কাঠ কেনার জন্য ওই তিনজন মাইসছড়িতে যান।

দুপুরে তারা খাগড়াছড়ি শহরে আনোয়ার নামের একজনকে মোবাইল ফোনে কাঠের দাম বাবদ টাকা পাঠাতে বলেন। টাকা পাঠানোর পর থেকে তিনজনের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। বন্ধ হয়ে যায় তাদের মোবাইল নম্বরও।
 
এ বিষয়ে আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সেদিন আমার মোটরসাইকেল নিয়ে তিনজন মাইসছড়িতে গাছ কিনতে যায়। আর গাছ কেনার টাকা পাঠানোর জন্য আমাকে খাগড়াছড়ি রেখে যায়। বিকেল ৪টার দিকে তারা ফোন করে আমার কাছে থাকা ৭৫ হাজার টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠাতে বলে। আমি তাদের কথা মতো পাঁচটি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকউন্টের নম্বরে টাকা পাঠানোর পর থেকে আর যোগাযোগ করতে পারিনি। কিন্তু পরে কাঠবোঝাই করার জন্য নিয়ে যাওয়া ট্রাকটি লেমুছড়ি এলাকায় পাওয়া যায়।
 
এ ঘটনায় মাটিরাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।  

দু’দিনের মাথায় ১৮ এপ্রিল অপহৃত সালাউদ্দিনের মোবাইল থেকে তার বাবা খোরশেদ আলমের কাছে অপহরণকারীরা ফোন দিয়ে তিনজনের মাথাপিছু দেড় লাখ টাকা দাবি করে। টাকা পাঠালে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। ওই দিন রাতেই অপহরণকারীদের কাছে দেড় লাখ টাকা পাঠানো হয়। কিন্তু এরপর ফের সালাউদ্দিনের মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়।
 
খোরশেদ আলম বলেন, আমি ছেলের (সালাউদ্দিন) সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি। অপহরণকারীরা বলেছে টাকা পাওয়ার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে। তখন নাকি সালাউদ্দিন নিজেই আমাকে ফোন দেবে। রাতে ১০টায় দেড় লাখ টাকা পাঠানোর পর থেকে সালাউদ্দিনের মোবাইল আবার বন্ধ হয়ে রয়েছে।
 
এদিকে দীর্ঘ এক মাসেও নিখোঁজ তিনজনের কোনও হদিস না মেলায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন স্থানীয়রা। এরইমধ্যে হরতাল, বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন, সাংবাদিক সম্মেলন, সমাবেশের মতো কর্মসূচিও পালন করেছে প্রতিবাদী লোকজন। ঘটনার পর থেকে অপহৃত তিনজনের পরিবারে চলছে কান্নার রোল। স্বজনদের ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনছেন তারা।

এ বিষয়ে মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী বলেন, সম্ভাব্য সবখানে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। প্রশাসন বারবার আশ্বস্ত করলেও তাদের তেমন তৎপরতা দেখছি না।  

অপহৃতদের উদ্ধারে চিরুনি অভিযান চালানোর কথাও বলেন মোহাম্মদ আলী
 
যোগাযোগ করা হলে খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার (এসপি) আলী আহম্মেদ খান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রযুক্তির সহতায়তায় আমরা ঘটনার অনেক কাছে পৌঁছে গেছি। আমাদের টিম মাঠে কাজ করছে। আশা করি খুব শিগগির এ রহস্য উদঘাটন করতে পারবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, ১৬ মে, ২০১৮
এডি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।