মঙ্গলবারের (১৫ মে) মতো বুধবারও (১৬ মে) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর ব্রিজ থেকে কুমিল্লার চান্দিনার মাধাইয়া পর্যন্ত প্রায় ৬৫ কিলোমিটার অংশে যানজট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এছাড়া কুমিল্লার দাউদকান্দি টোলপ্লাজা থেকে চান্দিনার মাধাইয়া পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটার অংশে যানজট রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, চান্দিনার মাধাইয়া, দাউদকান্দির গৌরিপুর, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া, মদনপুর এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে অসংখ্য যানবাহন আটকে আছে।
গোমতী ও মেঘনা সেতু টোলপ্লাজায় ওজন স্কেলে একটি মালবাহী যানবাহন কমপক্ষে ১০/১৫ মিনিট আটকে রাখা হয়। সেখানে ট্রাক চালক ও হেলপারের সঙ্গে টোলপ্লাজা কর্তৃপক্ষের টাকা নিয়ে বাক-বিতণ্ডার চিত্র নিত্য ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
টোলপ্লাজায় মালবাহী যানবাহন আসা মানেই দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা দিতে হবে টোলপ্লাজার কর্মকর্তাদের। এ টাকার লেনদেন নিয়ে অনেক সময় অতিবাহিত হয়। ফলে টোলপ্লাজাগুলোতে মালবাহী ও যাত্রীবাহী যানবাহনের ভিড় জমতে থাকে। এতে টোলপ্লাজা কর্তৃপক্ষের সৃষ্টি কৃত্রিম যানজটে নাকাল হয় যানবাহন ও যাত্রীরা। সূত্র আরও জানায়, গত কয়েকদিন ফেনীর ফতেহপুর ওভারপাস এলাকার যানজট ছিল। সোমবার (১৪ মে) দুপুরের পর থেকে তা কমতে শুরু করে। অপরদিকে, ঢাকামুখী কুমিল্লার দাউদকান্দিতে যানজট তীব্র হয়। মঙ্গলবার ভোর রাত থেকে দাউদকান্দি টোলপ্লাজা অংশে শুরু হওয়া যানজট এখনও তীব্র আকার ধারণ করে আছে।
দাউদকান্দি টোলপ্লাজায় যানজটে আটকে থাকা ট্রাক চালক সিদ্দিক মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, টোলপ্লাজার কর্মকর্তারা যেকোনো মালবাহী ট্রাক দেখলেই কমপক্ষে দুই হাজার টাকা আদায় করেন। কিন্তু রসিদ দেন মাত্র পাঁচশ টাকার। তাদের জন্য যানজট সৃষ্টি হয়।
মদনপুর এলাকায় যানজটে আটকা থাকা ঢাকা থেকে কুমিল্লাগামী ব্যবসায়ী শাহ ইমরান বাংলানিউজকে বলেন, এক জায়গায় আড়াই ঘণ্টা আটকে আছি। চার লেন মহাসড়ক এখন গলার কাঁটা। টোলপ্লাজার কর্মকর্তাদের দুর্নীতি বন্ধ না হলে আমাদের মতো সাধারণ যাত্রীরা দিনের পর দিন এ ভোগান্তি নিয়েই চলাচল করতে হবে।
রয়েল বাসের যাত্রী কুমিল্লা নগরের বাসিন্দা মেহেদী বাংলানিউজকে বলেন, দুই ঘণ্টা ধরে আটকে আছি টোলপ্লাজা এলাকায়। ছোট বাচ্চা দু’টো সঙ্গে আছে। তাদের বাথরুমের প্রয়োজন হয়েছে। কিন্তু কি করবো।
ফেনী যানজটমুক্ত হওয়ায় যানবাহনগুলো দ্রুত গতিতে এসে জড়ো হয় সেতুর টোলপ্লাজায়। সেখানে কিছুটা বিলম্বিত হয়। এরপর সেতুতে ওঠাকালীন যানবাহনের গতি অন্তত ৮০ ভাগই কমে আসে। আর চার লেনের গাড়িগুলো দুই লেনের সেতুতে চলাচলে ধীর গতির ফলে মূলত এ যানজট।
এছাড়া কুমিল্লার দাউদকান্দি টোল প্লাজা থেকে চান্দিনার মাধাইয়া পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটার অংশে যানবাহন ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে থেমে আছে। যানজটে আটকে আছে হাজার হাজার যাত্রী। কুমিল্লা থেকে ঢাকা যেতে সময় লাগছে আট থেকে নয় ঘণ্টা।
দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে জানান, মহাসড়কে অতিরিক্ত গাড়ির চাপ আর টোলপ্লাজায় ধীরগতির কারণে যানজট নিয়ন্ত্রণে আসছে না। যানজট নিরসনে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।
**ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৮ কিলোমিটার যানজট
বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৮
আরবি/