কক্সবাজারের পর্যটন জোন বলে পরিচিত কলাতলীর প্রধান সড়ক, টেকপাড়া, ফুলবাগ সড়ক, বার্মিজ স্কুল রোড, রাখাইন পাড়ার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসব এলাকায় বৃষ্টি হলেই দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। গ্রীষ্মের বৃষ্টিপাতেই যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তাতে বর্ষা মৌসুম নিয়ে এখন থেকেই দুশ্চিন্তা বাড়ছে কক্সবাজারবাসীর।
এসব এলাকা ঘুরে দেখা যায়, একদিকে ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার কার্যক্রমের ফলে সড়কে জমে আছে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ, অন্যদিকে অলি-গলির কোনও পাশেই নেই ড্রেনেজ ব্যবস্থা। সে কারণে হালকা বৃষ্টির পানিও জমে আছে সড়কে। সেজন্য অলি-গলিতে গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটেও যাতায়াত কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে এলাকাবার বাসিন্দাদের জন্য।
সুগন্ধা পয়েন্টের একটি কফি শপের মালিক সায়মন আমিন বাংলানিউজকে বলেন, দু’ঘণ্টার বৃষ্টিতে রাস্তায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। পানি জমে যায় হাঁটু পরিমাণ। কিন্তু এটাই নাকি পর্যটনের শহর। লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। রাস্তার দু’পাশে নেই কোনও ড্রেনেজ ব্যবস্থা। অবস্থা এভাবে থাকলে ভবিষ্যতে ব্যবসায় চরম ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। ঢাকার ধানমন্ডি থেকে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা জহির-শম্পা দম্পতি বলেন, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের শহর কক্সবাজার এসেছিলাম হানিমুন করতে। কিন্তু রাস্তাঘাটের যে অবস্থা, হোটেল থেকেই বের হতে পারছি না।
কক্সবাজার বাচাঁও আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, পাহাড় কাটা রোধ করা না গেলে, বৃষ্টির পানি চলাচলের জন্য নালা নির্মাণ করা না হলে এবং মাটির রাস্তাগুলো উন্নত করা না হলে বহির্বিশ্বে সার্ফিং সিটি কক্সবাজারের সুনাম ক্ষুণ্ন হবে। সরকারও হারাবে রাজস্ব।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি ওমর সুলতান কোম্পানি বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্বের অন্যান্য পর্যটন শহরগুলো স্বচ্ছ, চকচকে। কিন্তু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই কক্সবাজারের চিত্র উল্টো। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে দিনে দিনে এখানে বিদেশি পর্যটকের আনাগোনা কমছে।
পৌরসভা অফিস সূত্রে জানা যায়, পুরো শহরে ড্রেনেজের কাজ চলছে। বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধাতা সৃষ্টি হয়েছে। স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য ড্রেন নির্মাণ অতি দ্রুত সম্পন্ন হবে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, পর্যটন জোনের সড়ককে উন্নীতকরণ, রাস্তার দু’ধারে নর্দমা নির্মাণের কাজ চলছে। এছাড়া পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডের ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার করা হচ্ছে। এই কারণে সাময়িক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। উন্নয়ন কাজগুলো শেষ হলে আগামী পর্যটন মৌসুমের আগে কক্সবাজার পৌরসভার চেহারাই পাল্টে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৯ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৮
টিটি/এইচএ/