ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দুদকে আবারও সময় চাইলেন বেসিকের বাচ্চু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৮ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৮
দুদকে আবারও সময় চাইলেন বেসিকের বাচ্চু

ঢাকা: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তলবে হাজির হননি বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু। এর আগে ও তিনি দু’বার হাজির না হয়ে সময় চেয়ে আবেদন করেন।

দুদকের উপ পরিচালক সামছুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে সময় চেয়ে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে দুই সপ্তাহ সময় দেয়া হয়েছে।  

আগামী ৩০ মে তাকে (বাচ্চু) দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সামছুল আলম।



দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রাষ্ট্রায়াত্ত বেসিক ব্যাংকের গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখা থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়। এরপর দীর্ঘ ৪ বছর অনুসন্ধান শেষে ২০১৫ সালের ২১ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশান, পল্টন ও মতিঝিল থানায় ৫৬টি মামলা দায়ের করে দুদক। বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির মামলাগুলোর ১৫৬ জন আসামির মধ্যে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা ২৬ জন। বাকি ১৩০ জন আসামি ঋণগ্রহীতা ৫৪ প্রতিষ্ঠানের মালিক ও সার্ভে প্রতিষ্ঠানের। এর মধ্যে ব্যাংকের সাবেক এমডি কাজী ফখরুল ইসলামকে ৪৮টি,  ডিএমডি ফজলুস সোবহানকে ৪৭টি, কনক কুমার পুরকায়স্থকে ২৩টি এবং ডিএমডি এ মোনায়েম খানকে ৩৫টি মামলায় আসামি করে দুদক।

এদিকে বেসিক ব্যাংকের অর্থ লোপাটের ঘটনায় দুদকের দায়ের করা ৫৬টি মামলার মধ্যে একটি মামলায় গত ২৬ জুলাই হাইকোর্ট বাচ্চু এবং পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুদককে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। হাইকোর্টের ওই আদেশে বলা হয়েছিল, প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে মামলারতদন্ত শেষ করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে। এছাড়া চলতি বছরের আগস্টে বেসিক ব্যাংক ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় দুদকের দায়েরকৃত ৫৬টি মামলার মধ্যে পাঁচটি মামলার চার্জশিট অনুমোদন দেয় কমিশন। তবে ৫টি মামলার কোনোটির তদন্ত প্রতিবেদনে বাচ্চুর নাম ছিলো না, এমনকি রাখার জন্য সুপারিশও করেনি তদন্ত কর্মকর্তারা। ফলে পাঁচটি মামলার অভিযোগপত্রে থেকে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুর নাম ছিলো না।

এদিকে বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারিতে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুর সংশ্লিষ্টতা কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে বলে ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সংসদে জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

এমনকি চলতি বছরের ২৯ মার্চ এক অনুষ্ঠানেও দুদক চেয়ারম্যানের সামনে অর্থমন্ত্রী বলেন, বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঋণ জালিয়াতিতে অর্থমন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চু জড়িত। আর সেই রিপোর্ট দুদকের কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে পরবর্তীতে দুদক চেয়ারম্যানের কাছে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে তিনি এমন কোনো প্রতিবেদন পাননি বলে প্রতিবেদককে জানান।

এমনকি অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিও বলেছে পৃথক দু’টি অডিট ফার্মের নিরীক্ষা প্রতিবেদনসহ সার্বিক বিবেচনায় শেখ আবদুল হাই বাচ্চু দায় এড়াতে পারেন না। তার দুর্নীতির সব ধরনের তথ্য দুদকের হাতে রয়েছে।

এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি ড. আবদুর রাজ্জাক বেসিক ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি দু’বার মতামত চাইলেও দুদকের পক্ষ থেকে কোনো মতামত পাননি তিনি। এমনকি বেসিক ব্যাংক নিয়ে ৫৬টি মামলা দায়ের করা হলেও কোনো মামলায় নেই বাচ্চুর নাম।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৮
আরএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।