ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

৬ হাজার টাকার ভাগবাটোয়ারায় সেই ৪ খুন!

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১২ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৮
৬ হাজার টাকার ভাগবাটোয়ারায় সেই ৪ খুন! খুন করে ধানক্ষেতে ফেলে রাখা হয় চার মরদেহ

বগুড়া: মাদকের ৬ হাজার টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় চারজনকে খুন করে ধানক্ষেতে ফেলে রাখা হয়েছিলো। টাকা দেওয়ার কথা বলে ওই চারজনকে ফোন করে ডেকে নিয়ে খুন করা হয় বলে পুলিশকে জানিয়েছেন গ্রেফতার হওয়া আসামিরা।

রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার দিকে চারজনকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। হত্যার সময় উপজেলার চন্দনপুর তালুকদারপাড়ার আব্দুস সামাদের ছেলে আবুল কালাম আজাদ পাহারাদারের কাজে নিয়োজিত ছিলেন।

পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া আরেকজন একই উপজেলার কাঠগাড়া চকপাড়ার রফিকুল শেখের ছেলে জুয়েল শেখ সরাসরি চারজনকে গলা কেটে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডে আরো ৬ জন প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে সহায়তা করেছেন বলেও জানান গ্রেফতাররা।

সোমবার (১৪ মে) ও রোববার (১৩ মে) ভোর রাতে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কাঠগাড়া, গণেশপুর ও কিচক এলাকায় অভিযান চালিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী উপজেলার ডাবইর গ্রামের মৃত আবু বক্করের ছেলে মো. রুবেল, তালুকদারপাড়ার আব্দুস সামাদের ছেলে আবুল কালাম আজাদ এবং কাঠগাড়া চকপাড়ার রফিকুল শেখের ছেলে জুয়েল শেখকে গ্রেফতার করে।
পুলিশের হাতে আটক চার খুনে জড়িত তিন আসামিতবে খুনের ঘটনায় জড়িত অপর ৬ জনকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

দুপুরে জেলার পুলিশ সুপারের সভাকক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়াদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী এসব তথ্য তুলে ধরেন জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আলী আশরাফ ভূঞা।

তিনি বলেন, মাদকের পাওনা টাকা নিয়ে বিবাদের জেরে প্রথমে শিবগঞ্জ উপজেলার আটমূল ইউনিয়নের কাঠগাড়া গ্রামের আছির উদ্দিনের ছেলে পানের দোকানি শাবরুল ইসলাম সাবু ও একই গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে রং মিস্ত্রী জাকিরুল ইসলামকে প্রথমে গলা কেটে হত্যা করা হয়।

এ দুইজনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দেখে ফেলায় আরো দু’জন খুনের শিকার হন। তারা হলেন- জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার নান্দাইল গ্রামের স্যাম্পুর ছেলে খবির ওরফে বাউশা ও পুনট গ্রামের আজাহার উদ্দিনের ছেলে হেলাল উদ্দিন। তারা মাদকের চালান নিয়ে একই পথ দিয়ে নিজ গন্তব্যে যাচ্ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের শিকার  চারজনই মাদকসেবন ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলেও জানান এসপি আলী আশরাফ ভূঞা।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর ৬ জনকে গ্রেফতারে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি-না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মকবুল হোসেন, আব্দুল জলিল, সনাতন চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন।

গত সোমবার (০৭ মে) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার আটমূল ইউনিয়নের আলিয়ারহাটের উত্তরে ও গাঙ্গনই নদীর পশ্চিমে ডাবইর এলাকার একটি ধানক্ষেতে চারজনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ চারটি উদ্ধার করে।

মঙ্গলবার (০৮ মে) রাতে নিহত পানের দোকানি শাহরুল ইসলাম সাবুর বাবা উপজেলার আটমূল ইউনিয়নের কাথগাড়া গ্রামের আছির উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৮
এমবিএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।