ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

শাহজালালে অভিযোগের পর যাত্রী পেলেন ১০ হাজার টাকা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৩ ঘণ্টা, মে ১, ২০১৮
শাহজালালে অভিযোগের পর যাত্রী পেলেন ১০ হাজার টাকা জরিমানার এক চতুর্থাংশ হিসেবে ১০ হাজার টাকা বুঝে পান যাত্রী জলিল। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ব্যাগ র‌্যাপিংয়ের নামে যাত্রীর কাছ থেকে বাড়তি অর্থ হাতিয়ে নিতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন একটি র‌্যাপিং কোম্পানির এক অপারেটর। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ যাওয়ার পর বিমানবন্দরের ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই কোম্পানিকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। আর এই অর্থের এক চতুর্থাংশ হিসেবে ১০ হাজার টাকা পেয়েছেন সেই যাত্রীও।

মঙ্গলবার (১ মে) রাতে নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে ঘটনাটি তুলে ধরেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বানসুরি এম ইউসুফ।  

দণ্ডিত র‌্যাপিং কোম্পানির নাম মেসার্স ফাহারিয়ার এন্টারপ্রাইজ, আর অপরাধী অপারেটরের নাম মন্জুরুল হাসান।

অভিযোগের পর সুফল পাওয়া যাত্রীর নাম জলিল। মানিকগঞ্জের এ বাসিন্দা সৌদি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে সৌদি আরব যাচ্ছিলেন।

ঘটনাটির বর্ণনা দিয়ে ইউসুফ তার ফেসবুকে লেখেন, “মানিকগঞ্জের জলিল যাচ্ছিলেন সৌদি আরব। এয়ারপোর্টে ঢুকতেই র‍্যাপিং মেশিনের এক অপারেটর ডেকে নিয়ে বললেন, র‍্যাপিং ছাড়া এয়ারলাইন্স ব্যাগ বুকিং নেয় না, বাধ্যতামূলক র‍্যাপিং করতে হবে (মিছা কথা)!

জলিলের অনিচ্ছা সত্ত্বেও অপারেটর দুইটি ব্যাগ র‍্যাপিং করে ৬০০ টাকা চার্জ চাইলেন। পকেটে আছে মাত্র চার’শ টাকা। সেগুলো রেখে দিয়ে বাকি দু’শ টাকার জন্য জলিলকে বিকাশ নাম্বার ধরিয়ে দিলেন।

সৌদি এয়ারলাইন্সের এক সহৃদ অফিসার ঘটনা শুনে জলিলকে নিয়ে এলেন। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে সংশ্লিষ্ট র‍্যাপিং কোম্পানির চল্লিশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং অপারেটরের কার্ড সীজ করে প্রজেক্ট টুকিটাকির আওতায় আনা হয়। তারে কত কঠিন বই দেওয়া যায়, ভাবছিলাম।

এই দিকে জরিমানার এক চতুর্থাংশ তথা ১০ হাজার টাকা হাতে পেয়ে জলিল কয়েকবার গুণলেন। তারপর বললেন, একটা পাঁচ’শ টাকা নোটের খুচরা হবে?
আমি অবাক দৃষ্টিতে জিজ্ঞাসা করলাম, কেন?
তিনি বললেন, র‍্যাপিং চার্জের বাকি দু’শ টাকা দিতে হবে তো!

প্রথমে ভাবছিলাম, আদর করে কঠিন একটা ধমক দেই, এত বোকাও মানুষ হয়! বহু কষ্টে মেজাজ কন্ট্রোলে এনে আস্তে করে পাঁচ'শ টাকার খুচরা বাইর করে দিলাম। থাক না, তার বোকামি তার কাছে। আমার কাছে যেটা বোকামি, তার কাছেতো সেটা সততা। ”

‘প্রজেক্ট টুকিটাকি’ বিমানবন্দরের ছোটখাটো অপরাধ রোধে অভিনব এক শাস্তির ব্যবস্থা। এ ধরনের অপরাধীকে পাকড়াও করার পর একটি বই পড়তে বাধ্য করা হয় এবং সেই বইয়ের ওপর রিভিউও দিতে হয় দণ্ডিতকে। আদালতের দণ্ড অনুযায়ী, র‌্যাপিং অপারেটর মন্জুরুল হাসানকেও এই অভিনব শাস্তি ভোগ করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০১২২ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১৮
এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।