বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে রমনার বটমূল ঘুরে দেখা যায়, ইতোমধ্যে প্রায় সব প্রস্তুতিই সম্পন্ন করেছে ছায়ানট। রমনার ঐতিহাসিক বটমূলে প্রস্তুত করা হয়েছে মঞ্চ।
এ মঞ্চে বসেই বর্ষবরণের প্রভাতী অনুষ্ঠানে গান করবেন ছায়ানটের শিল্পীরা। তার আগে শেষ প্রস্তুতি হিসেবে মহড়া দেবেন শুক্রবার (১৩ এপ্রিল) বিকেল ৩টায়।
দীর্ঘকাল ধরে ‘বটমূল’ নামে পরিচিত পাকুড়গাছের ছায়ায় এবার বাঁশির সুরে ভোর সোয়া ৬টায় শুরু হবে পহেলা বৈশাখের প্রভাতী অনুষ্ঠান। পরে গান আর কথায় বাংলা আর বাঙালির অন্তরের কথা ফুটিয়ে তুলবেন শিল্পীরা। ছায়ানট সংগীত বিদ্যায়তনের শিক্ষার্থী-শিক্ষক-শিল্পীরা বাজাবেন, গাইবেন, বলবেন বাঙালির কথা।
প্রস্তুতি সম্পর্কে দুপুরে বটমূলে কথা হয় ছায়ানটের নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ সানাউল্লাহ সানির সঙ্গে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি আজকের মধ্যেই তা ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। এখন শুধু একটু রঙ আর বাইরের দিকে সাজ-সজ্জার কাজটুকু বাকি। শুক্রবার বিকেলে মহড়া থাকায় দুপুরের মধ্যেই সব কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।
আয়োজন সম্পর্কে ছায়ানটের সভাপতি সন্জীদা খাতুন বলেন, নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে রমনার বটমূল, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বাংলা নববর্ষ আজ বিশ্বময় বাঙালির সবচেয়ে বড় মিলনমেলা, একটি জাতীয় উৎসব। এ উৎসব আপামর বাঙালিকে প্রাণিত করে ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধনে। পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান বাঙালিত্বের সাধনা। প্রতিবারের মতো এবারও আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করছি।
‘ইতোমধ্যে প্রায় সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। বাঙালির সংস্কৃতিকে আমাদের তৃণমূলে ছড়িয়ে দিতে হবে। শিল্প-সাহিত্য, নাটক ইত্যাদি নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে যেতে হবে। ’
বিশ্বমানব হওয়ার আগে শাশ্বত বাঙালি হওয়ার প্রত্যয়ে এবার বর্ষবরণের বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে 'বিশ্বায়নের বাস্তবতায় শিকড়ের সন্ধান'।
এ বিষয়ে ছায়নটের নির্বাহী সভাপতি ডা. সারওয়ার আলী বলেন, সৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দু হলো প্রকৃতি ও মানুষ। জল-মাটি-বৃক্ষ এসবই আমাদের প্রকৃতি। এ বিশ্বায়নের যুগে জাতীয় সংস্কৃতি একটু হুমকির মুখে। তবে আমরা চাই আকাশপানে তাকালেও আমাদের পদযুগল যেন বাংলার মাটিতে থাকে। বাঙালি যেন পরিপূর্ণ বাঙালি হয়ে ওঠে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৮
এইচএমএস/এএ