ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘লঞ্চের ৮৬ শতাংশ নারী যাত্রী যৌন হয়রানির শিকার’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৮
‘লঞ্চের ৮৬ শতাংশ নারী যাত্রী যৌন হয়রানির শিকার’ সংবাদ সম্মেলনে গবেষণার সমন্বয়কারী ফয়েজ বেলাল/ ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে লঞ্চে যাতায়াতকালে ৮৬ দশমিক ৪ শতাংশ নারী যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

বুধবার (১১ এপ্রিল) বরিশাল প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘গণপরিবহনে নারীদের যৌন নির্যাতন ও হয়রানি’ নিয়ে তরুণদের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।  

বরিশাল ইয়ুথ সোসাইটি (বিওয়াইএস) এবং ইয়ুথ ফর চেঞ্জ বাংলাদেশ নামে দুটি সংগঠন এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

 সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন বরিশাল ইযুথ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও গবেষণার সমন্বয়কারী ফয়েজ বেলাল।

তিনি জানান, উদ্বিগ্নতা থেকেই আমরা নারীর প্রতি সহিংসতা, বিশেষভাবে যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের বিষয়টি জানার চেষ্টা করেছি। একটি সামাজিক সমীক্ষা চালিয়ে। আমরা গণমাধ্যম পর্যবেক্ষন করেছি। সড়ক পথ ও নৌপথে যাতায়াতকারী মোট ৭৮৭ জন নারীর সাক্ষাতকার নিয়েছি। এর মধ্যে ২৮৭ জন নারী সড়ক পথে পরিবহন নিয়ে কথা বলেছেন এবং দক্ষিণবঙ্গের ৫০০ জন নারী বলেছেন নৌ পথ নিয়ে।  

সড়কপথের চিত্র অনুযায়ী শতভাগ নারী বলেছেন তারা গণপরিবহনে যৌন হয়রানির শিকার হন। আর নৌপথ লঞ্চে যাতায়াতকারী ৫০০ জন নারীর মধ্যে ৮৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী বলেছেন তারা যৌন হয়রানির শিকার হয়। তবে ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ নারী এ বিষয়ে উত্তর দেয়নি।

প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, যৌন হয়রানির শিকার নারীদের মধ্যে ৩১ দশমিক ১৫ শতাংশ নারীকে বাজে কথা বলে হয়রানি করা হয়। পাশাপাশি গায়ে হাত দিয়ে হয়রানি করা হয় ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ নারীকে। নারীদের ছবি তোলার মাধ্যমে হয়রানি করা হয় ১৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং বাজে (অশ্লীল) অঙ্গভঙ্গি করে ৩৩ দশমিক ২ শতাংশ নারীকে হয়রানি করা হয়।

লঞ্চে যে সব নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে তাদের মধ্যে ১৮ দশমিক ৪১ শতাংশ নারী মৌখিক প্রতিবাদ করেছে। তবে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি।  

১২ থেকে ৪০ বছর বয়সী নারীদের নিয়ে এ গবেষণার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যৌন হয়রানির শিকার হয়ে যেসব নারী প্রতিবাদ করেছেন। তাদের দেখে পাশা থাকা ১১ শতাংশ যাত্রী প্রতিবাদ করেছে। অন্য ৬০ শতাংশ যাত্রী কোনো প্রতিবাদ করেনি। ২৯ দশমিক ৩ শতাংশ যাত্রী প্রতিবাদকারী নারীর ওপর বিরক্তবোধ করেছে। আবার লঞ্চের কর্মচারীরা ৫ দশমিক ১ শতাংশ নারীকে সাহায্য করেছেন। কিন্তু ৯৪ দশমিক ১ শতাংশ নারী কোনো ধরনের সাহায্য পায়নি।

বিওয়াইএস এবং ইয়ুথ ফর চেঞ্জ বাংলাদেশ এ দুটি পৃথক সংগঠনের তরুণরা বাল্য বিয়ে, লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সমতা ভিত্তিক সমাজের জন্য কাজ করে। এ তরুণরা নারীর প্রতি যৌন নির্যাতন এবং হয়রানি বন্ধ করতে চায়।  

গবেষণার সমন্বয়কারী ফয়েজ বলেন, গবেষণায় অংশগ্রহণকারী নারীদের কাছ থেকে যে সুপারিশ উঠে এসেছে সে গুলোকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি।  

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গবেষণায় সংযুক্ত থাকা ইসরাত জাহান মিতু, সায়মন আক্তার, আবির আহমেদ ও রুম্মান রথি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ যাত্রীবাহী লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বাংলানিউজকে বলেন, যাত্রীবাহী লঞ্চে নারীরা যে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে যৌন হয়রানির শিকার হয় না সে কথা বলা যাবে না। তবে গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী এতো নারী যৌন হয়রানির শিকার হয় না।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৮
এমএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।