ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

যমুনার ভাঙা-গড়ায় লড়ে বাঁচেন তারা

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১৮
যমুনার ভাঙা-গড়ায় লড়ে বাঁচেন তারা যমুনার ভাঙা-গড়া

সিরাজগঞ্জের কাজীপুর থেকে: সিরাজগঞ্জের কাজীপুর। একটি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত উপজেলা। এরমধ্যে ১০টি ইউনিয়ন হিংস্র যমুনা নদীবেষ্টিত। তার মধ্যে আবার ৬টি ইউনিয়ন চরাঞ্চল হিসেবে খ্যাত। প্রত্যেক বছর এসব ইউনিয়নে চলে ভাঙাগড়ার খেলা। যমুনা গর্ভে বিলীন হয় গ্রামের পর গ্রাম। কিন্তু পৈতৃক ভিটেমাটি ছাড়তে চান না সিংহভাগ মানুষই।

যমুনার তাণ্ডব মেনে নিয়েই এসব ইউনিয়নে বসবাসকারী মানুষগুলো ভিটেমাটি আঁকড়ে রয়েছেন যুগের পর যুগ। আবার অনেকের মাথা গোঁজার শেষ সম্বলটুকু যমুনার পেটে চলে যাওয়ায় অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

এরপরও চর জেগে উঠলে অনেকেই প্রাণের টানে পৈতৃক ভিটেমাটিতে ছুটে আসেন। এভাবে যমুনার সঙ্গে রীতিমত যুদ্ধ করে নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্নে বিভোর থাকেন চরাঞ্চলের মানুষগুলো।

শুক্রবার (৬ এপ্রিল) সিরাজগঞ্জের যমুনা নদী ভাঙন কবলিত কাজীপুর উপজেলার চরাঞ্চলের একাধিক মানুষের সঙ্গে কথা হলে ওঠে আসে এমনই তথ্য।

যমুনাবেষ্টিত ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে নাটুয়ারপাড়া, খাসরাজবাড়ি, টেকানী, নিশ্চিন্তপুর, চরগিরিশ ও মুনসুর নগর চরাঞ্চল হিসেবে খ্যাত। উপজেলার প্রায় ৩ লাখ মানুষের মধ্যে এসব চরাঞ্চলেই প্রায় অর্ধেকের মতো মানুষ বসবাস করে। যারা যুগের পর যুগ ধরে হিংস্র যমুনার সঙ্গে সংগ্রাম করে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন।

এসব চরাঞ্চলের মানুষ কৃষি কাজ, মাছ ধরা, নৌকা চালানো, দিনমজুর, বিভিন্ন ধরনের ছোট-খাটো ব্যবসা বাণিজ্য করে জীবিকা নির্বাহ করেন। আবার জীবিকার প্রয়োজনে পরিবারের কোনো না কোনো ব্যক্তি ঢাকার বিভিন্ন গার্মেন্টে চাকরি করেন। বন্যা মৌসুমে চরের অনেক মানুষ জীবিকার সন্ধানে শহর অঞ্চলে কাজের জন্য পারি জমান। তবে শত ঝক্কি-ঝামেলা সামলে নিয়েও চরাঞ্চলের মানুষগুলো নিজেকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতেও বেশ সচেতন।

সরেজমিনে দেখা যায়, যমুনার পশ্চিমপাশে মেঘাই খেয়াঘাটের পশ্চিমে সদর, সোনামুখি, চালিতাডাঙা ও মাইজবাড়ী ইউনিয়ন। এরমধ্যে সদর ও মাইজবাড়ীসহ ১০টি ইউনিয়ন যমুনা নদীবেষ্টিত। মেঘাই খেয়াঘাটের পূর্বে মধ্যে নাটুয়ারপাড়া, খাসরাজবাড়ি, টেকানী, নিশ্চিন্তপুর, চরগিরিশ ও মনসুর নগর এবং দক্ষিণে গান্ধাইল ও শুভগাছা ইউনিয়ন।

তখন বেলা ১২টার মতো হবে। মেঘাই খেয়াঘাটে চরাঞ্চলের ৬টি ইউনিয়নে মানুষ যাওয়ার জন্য একাধিক নৌকা ঘাটে ভিড়ানো আছে। আবার একইভাবে ওইসব ইউনিয়ন থেকে নৌকাযোগে নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ এসে এই খেয়াঘাটে নামছেন। আর খেয়াঘাট থেকে পূর্ব-উত্তর-দক্ষিণের দিকে তাকালে থৈ থৈ করছে পানি। কখনও পানি গর্জন হাঁকছে। যা দু’চোখের দৃষ্টিসীমাকেও ছাপিয়ে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৮
এমবিএইচ/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।