ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

তারাকান্দায় চাল নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের কারসাজি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৮
তারাকান্দায় চাল নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের কারসাজি

ময়মনসিংহের তারাকান্দায় সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি দরের চাল নিয়ে স্থানীয় গালাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক জিয়ার বিরুদ্ধে কারসাজির অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (০২ এপ্রিল) দিনভর এ নিয়ে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে উপজেলা প্রশাসনে তোলপাড় চলে।

নীতিমালা অনুযায়ী প্রতি ইউনিয়নে কার্ড বিতরণের আগে দেওয়ালে এবং ইউনিয়নের ওয়েব সাইটে তালিকা প্রকাশ করার কথা।

কিন্তু চেয়ারম্যান জিয়াউল হক সেটি করেননি। তালিকা প্রকাশ না করায় স্থানীয় হতদরিদ্র দেলোয়ারা খাতুন, রেজি ও ফাতেমা খাতুন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ২২ আগষ্ট ময়মনসিংহ-২ ফুলপুর-তারাকান্দা আসনের এমপি শরীফ আহম্মেদ ২০১১ সালের খাদ্য বান্ধব কার্ড বাতিল করে নতুন তালিকায় কার্ড বিতরণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে ডিও লেটার দেন।

সেই মোতাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ২০১৭ সালের ১০ সেপ্টম্বরের মধ্যে সকল চেয়ারম্যান, সচিব ও আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে নতুন তালিকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু গালাগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে ইউনিয়নের তালিকা হস্থান্তর করেন।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সূত্র জানায়, গালাগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের তালিকা অনুযায়ী চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ৮৮ নং স্মারকে ইউনিয়ন ওয়ারী কার্ড বিতরণের তারিখ নির্ধারণ করে দিলে গত ৪ মার্চ গালাগাঁও ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ওই দিন ১৭’শ কার্ড বিতরণ করেন। এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অবগত করেন যে, গালাগাঁও ইউনিয়নের হতদরিদ্র কার্ড সংখ্যা ২ হাজার ২৬৬টি। এর মধ্যে ১৭’শ কার্ড বিতরণ করা হয়েছে এবং ৫৬৬টি কার্ড বিলি করা হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা রুবাইদুর রানা জানান, এরপর দ্বিতীয় দফায় অবিলিকৃত কার্ড বিলি করার জন্য চেয়ারম্যান জিয়ার কাছে বার বার তারিখ চাইলেও তিনি নানাভাবে কালক্ষেপণ করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশে গত ২৫ মার্চ দিনভর এলাকায় হ্যান্ড মাইকিং করে ৪২২টি কার্ড বিতরণ করা হলেও ১৪৪টি কার্ড অবিলিকৃত থেকে যায়।

রুবাইদুর রানা আরো জানান, ১৪৪টি কার্ডের বিপরীতে এমপি মহোদয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী একশত কার্ড স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের তালিকা অনুযায়ী বিতরণ করা হয় এবং এমপির নির্দেশনা মোতাবেক চেয়ারম্যান ৪৪টি কার্ডের তালিকা না দিলে নীতিমালা অনুযায়ী অবশিষ্ট কার্ড বাতিল হয়ে যায়। এতে চেয়ারম্যান জিয়াউল হক জিয়া ক্ষুব্ধ হয়ে কারসাজি ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে গণমাধ্যমে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।

তবে গালাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক জিয়া বলেন, ১৪৪টি কার্ডের মধ্যে তিনি একশত কার্ড কাকে দিয়েছেন তা আমি অবগত নই। তাছাড়া ৪৪টি কার্ড বাতিল হয়েছে তাও আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিন সুলতানা জানান, আমার জানা মতে কার্ড বিতরণে কোনো অনিয়ম হয়নি। উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা কঠোর পরিশ্রম করে স্বচ্ছতার সাথে কার্ড বিতরণের চেষ্টা করেছেন। তবুও কোনো অভিযোগ থাকলে তদন্ত করে দেখা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৮ 
এমএএএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।