ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মাদকসেবীদের আখড়া বেনাপোল আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনাল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৮
মাদকসেবীদের আখড়া বেনাপোল আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনাল বেনাপোল স্থলবন্দরের টার্মিনালের ভিতরের চারপাশে ছড়িয়ে আছে ফেনসিডিলের খালি বোতল। ছবি: বাংলানিউজ

বেনাপোল (যশোর): বেনাপোল স্থলবন্দরের আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনালটি এখন মাদকসেবীদের নিরাপদ আখড়া। বিভিন্ন সংস্থার প্রশাসনিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলতে থাকলেও সংশিষ্ট কারো বিষয়টি নিয়ে মাথাব্যাথা নেই। যোগাযোগ করলে একে অন্যের উপর দোষ চাপানোয় ব্যস্ত ছিলেন দায়িত্বশীলরা।

রোববার (২৫ মার্চ) সকালে সরেজমিনে চেকপোস্ট আন্তর্জাতিক বাসটার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, টার্মিনালের ভিতরের চারপাশে ছড়িয়ে আছে শতাধিক ফেনসিডিলের খালি বোতল। আর্মড ব্যাটালিয়ন ব্যারাকের পিছন ও টর্মিনালের প্রবেশদ্বারের পাশেই ফেনসিডিলের বোতলের স্তূপ দেখা যায়।

অথচ টার্মিনালে আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশ ক্যাম্প ও আনসার সদস্যদের সার্বক্ষণিক প্রহরা রয়েছে।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, বখাটের আড্ডা রয়েছে টার্মিনাল এলাকায়। এরা মাদকসেবীদের কাছে ফেনসিডিল সরবরাহ করে। পরে মাদকসেবীরা টার্মিনালের ওয়াশরুম ও অলি-গলিতে ঢুকে ফেনসিডিল সেবন করে। সেখানে নিরাপত্তাকর্মীরা থাকলেও রহস্যজনক কারণে এ নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যাথা নেই। অথচ এই টার্মিনাল দিয়ে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের মানুষ যাতায়াত করে। তাদের কাছে এই অবস্থা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।

টার্মিনাল সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকলে এখানে অপরাধীরা প্রবেশে ভীত থাকতো বলে মত অনেকের।

ভারতগামী যাত্রী আশরাফুল বাংলানিউজকে বলেন, ওয়াশরুমগুলোতে ফেনসিডিলের বোতলের ছড়াছড়ি। ঢুকতেও লজ্জা লাগে। টয়লেট থেকে বেরোনোর পর যিনি পরবর্তীতে ঢোকেন তিনি ভাবেন হয়তো ওই ফেনসিডিল আগেরজন খেয়েছে। বন্দরের বাস টার্মিনালের নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে এমন অবস্থা বলে দেয় এ স্থানটি মাদকসেবীদের নিরাপদ আখড়া। বেনাপোল স্থলবন্দরের টার্মিনালের ভিতরের চারপাশে ছড়িয়ে আছে ফেনসিডিলের খালি বোতল।  ছবি: বাংলানিউজটার্মিনালের পরিচ্ছন্নকর্মী সঞ্জয় বলেন, প্রতিদিনই তারা এসব ফেনসিডিলের বোতল পরিষ্কার করেন। বন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরা চাইলে এখানে মাদক সেবন প্রতিরোধ করতে পারেন।

আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনালে কর্তব্যরত আনসার ব্যাটালিয়নের পিসি মহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, তাদের জনবল সংকট থাকায় তারা ওই দিকটায় (মাদকসেবন প্রতিরোধ) কাজ করতে পারে না। তবে টার্মিনালটিতে যেহেতু আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশের ব্যারাক রয়েছে। তাই বিষয়টি তারাও নজর রাখতে পারেন।  

বন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইরশাদ আলী মৃধা বাংলানিউজকে বলেন, এটা দেখার দায়িত্ব নিরাপত্তাকর্মী আনসার সদস্যদের। সারাদিন ঘুষ বাণিজ্যে ব্যস্ত থাকে তারা। দায়িত্ব পালন করবে কীভাবে?

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) রেজাউল করিম রোববার সকালে বাংলানিউজকে জানান, বিষয়টি তার জানা ছিল না। তবে ঘটনা যদি সত্যি হয় তবে তা খারাপ। এমন কার্যকলাপ এড়াতে এখনই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদশে সময়: ০৬৩১ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৮
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।