ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

১২ দিন পর লাশ হয়ে বাড়িতে ফিরল পিয়াস রায়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৮
১২ দিন পর লাশ হয়ে বাড়িতে ফিরল পিয়াস রায় ১২ দিন পর লাশ হয়ে বাড়িতে ফিরল পিয়াস রায়

বরিশাল: ১২ দিন পর নিজ বাড়িতে ফিরে এসেছেন পিয়াস রায়। তবে পায়ে হেঁটে কিংবা গাড়ীতে করে নয়, কফিনবন্দি হয়ে থাকা তার নিথর মরদেহ এসেছে।

বিদেশ ভ্রমণে যাওয়ার আগে মা পূর্ণা রানী মিস্ত্রী লঞ্চঘাটে দিয়ে এসেছিলেন ছেলে পিয়াস রায়কে। মা যার সঙ্গে হেঁটে গিয়ে লঞ্চে তুলে দিয়ে এসেছিলেন।

সেই টগবগে যুবক ছেলেকে বাবা বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে নিয়ে এলেন কফিনে করে।

রাত ৩টায় যখন গোটা বরিশাল শহরে পিনপতন নিস্তব্ধতা। ঠিক তখন পিয়াস রায়কে বহনকারী গাড়িটি সাইরেন বাতি জ্বালিয়ে প্রবেশ করে শহরে। গফুর লেনের বাড়ির সামনে লাশবাহী গাড়িটি পৌঁছা মাত্র স্বজন ও প্রতিবেশীরা বাকরুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকেন।  

লাশবাহী গাড়িটি রাখা হয় বাড়ির নীচতলার গ্যারেজে। গাড়ির ভেতরে থাকা কফিনটি গ্লাসের জানালা দিয়ে এক নজর সবাইকে দেখতে দেওয়া হলেও নিশ্চুপ হয়ে চোখের জল ফেলেছেন বাবাসহ স্বজনরা। পাগল প্রায় মাকে ঘরের ভেতরেই ধরে রেখেছেন স্বজনরা।

 ১২ মার্চ নেপাল যাত্রার প্রাক্কালে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সর্বশেষ ছেলের সঙ্গে তার কথা হয়। তখন পিয়াস জানিয়েছিলো, সে কিছুক্ষণের মধ্যে বিমানে উঠবে। ওই কথাই ছিলো তার শেষ কথা।

দুর্ঘটনার চারদিন পর ১৬ মার্চ দুপুরে সুখেন্দু বিকাশ রায় নেপালের গেলেও ছেলের মৃতদেহ সনাক্ত করতে পারেননি। পরে মৃতদেহ সনাক্তের প্রাথমিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে ১৯ মার্চ বাবা সুখেন্দু বিকাশ রায় দেশে ফিরে আসেন।

১৯ মার্চ বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ২৩ বাংলাদেশির মরদেহ দেশে আনা হলেও পরিচয় সনাক্ত না হওয়ায় ৩ জনের মরদেহ নেপালে থেকে যায়। যার মধ্যে বরিশাল নগরের নতুন বাজার সংলগ্ন গফুর লেনের বাসিন্দা পিয়াস রায়ের মরদেহও ছিলো। ২১ মার্চ পিয়াস রায়সহ তিনটি মরদেহ সনাক্ত হয়। ২২ মার্চ বিকেলে নেপাল থেকে দেশে আনা হয় মরদেহগুলো। এরপর মরদেহগুলো বুঝে নেয় স্বজনরা।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পিয়াস রায়ের মরদেহ বুঝে নেওয়ার পর তা ঢাকা থেকে সরাসরি বরিশালে নিয়ে আসার কথা ছিলো। তবে সহপাঠী ও শিক্ষকদের অনুরোধে রাত ১২টার দিকে পিয়াসের মরদেহ প্রথম নেওয়া হয় গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে। সেখানে পিয়াস রায়কে শেষ বিদায় জানায় সহপাঠী, শুভাকাঙ্ক্ষী ও শিক্ষকরা।

এদিকে পিয়াসের বোন জামাই হিমাদ্রি সরকার শুসময় জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পিয়াসের মরদেহ বরিশাল সরকারি জিলা স্কুলে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানিয়ে সকাল ১০টার দিকে বরিশালের  মহাশ্মশানে নেওয়া হবে পিয়াস রায়ের মরদেহ। এখানেই তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৮
এমএস/এসআই/এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।