ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শেবাচিমে রোগীর মৃত্যু-ভাঙচুর, ইন্টার্নদের কর্মবিরতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০১ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৮
শেবাচিমে রোগীর মৃত্যু-ভাঙচুর, ইন্টার্নদের কর্মবিরতি শেবাচিমে রোগীর মৃত্যু-ভাঙচুর, ইন্টার্নদের কর্মবিরতি

বরিশাল: বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে।

হামলার বিচার ও যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতের দাবীতে বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টা থেকে কর্মবিরতিতে যায় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

ইন্টার্ন ডক্টরস এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি চিকিৎসক রাজু আহমেদ বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

তিনি জানান, সন্ধ্যায় খাদিজা আক্তার নামে এক প্রসূতি রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে স্বজনদের হামলায় ৩ ইন্টার্ন চিকিৎসক আহত হয়েছেন।

তিনি বলেন, চিকিৎসকরা কখনোই চান না কোনো রোগী মারা যাক, কিন্তু ওই রোগীর অবস্থা আগে থেকেই সংকটাপন্ন ছিলো। চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েও তাকে বাঁচাতে পারেনি। তারপরও রোগীর স্বজনরা ইন্টার্নদের মারধর করেছে এবং অপারেশন থিয়েটারে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে।

তিনি বলেন, এ রকম ঘটনা প্রায়ই ঘটছে, তাই কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ওপর হামলার বিচারের দাবিতে রাত সাড়ে ১১টায় কর্মবিরতির ডাক দেয় সাধারণ ইন্টার্নরা। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে ইন্টার্ন ডক্টরস এ্যাসোসিয়েশন।

দাবি না মানা পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে জানিয়ে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবারের হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হবে পাশাপাশি খাদিজা আক্তারের দাফন হলে হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবী জানানো হয়েছে।

এদিকে ইন্টার্ন ডক্টরর্স এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসক নাহিদ হাসান জানান, শনিবার ইন্টার্নরা তাদের দাবি নিয়ে হাসপাতাল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন। প্রয়োজনে দাবি আদায়ে পরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে।  

এদিকে মৃত খাদিজার স্বামী মোহাম্মদ শাকিল বাংলানিউজকে জানান, ২৬ মার্চ তার স্ত্রীর সন্তান প্রসবের তারিখ ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) সকালে খাদিজা অসুস্থ হয়ে গেলে ভোলার স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বেলা ১২টার বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় তলার লেবার ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।

তিনি বলেন, ভর্তির পর থেকে চিকিৎসকরা যা বলেছেন তাই করা হয়েছে। খাদিজার অবস্থা তেমন একটা ভালো না থাকায় বেলা ৩টার দিকে অপারেশেন নেওয়ার কথা থাকলেও তাকে নেওয়া হয়নি। অনেক অনুরোধের পর খাদিজাকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে পঞ্চম তলার অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার কথা বলেন ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা।
সেখানে গিয়ে কোনো চিকিৎসক না পেয়ে তৃতীয় তলায় লেবার ওয়ার্ডে এসে চিকিৎসকদের ওপরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানাই। এ সময় চিকিৎসকরা দেরি করতে থাকলে তাদের সঙ্গে বাকবিতন্ডা হয়। এক চিকিৎসককে ওপরে যাওয়ার জন্য টান দিলে তাৎক্ষণিক অন্য চিকিৎসকরা আমাকে মারধর শুরু করে। শত অনুরোধেও তারা আমাকে মারধর বন্ধ করে রোগীর কাছে যায়নি।  

ঘটনাচক্রে খাদিজা পেটে সন্তান নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। খাদিজার মৃত্যুর খবর শুনে আমার শ্যালক রিয়াজ উদ্দিন ক্ষুদ্ধ হয়ে অপারেশন থিয়েটারের সামনের একটি দরজার গ্লাস ভেঙে ফেলে। তারপর শত অনুরোধেও শিশু সন্তানটিকেও বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি চিকিৎসকরা।

বাংলাদেশ সময়: ০৩০১ ঘন্টা, মার্চ ২৩, ২০১৮
এমএস/এসআই/এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।