ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সৈয়দপুরে আবাদি জমিতে গড়ে উঠছে ইটভাটা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৮
সৈয়দপুরে আবাদি জমিতে গড়ে উঠছে ইটভাটা ইটভাটার ধোঁয়‍া নির্গমনের চিমনি তৈরি করা হচ্ছে

নীলফামারী: দক্ষিণ দিকে স্কুল-কলেজ ও ডাকঘর। পাশেই বসতবাড়ি। উত্তরে সেনানিবাস ও বিমানবন্দর। এর মধ্যেই কৃষি জমিতে গড়ে উঠছে ইটভাটা।

সৈয়দপুর উপজেলার বাঙালিপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর গ্রামের সৈয়দপুর-বদরগঞ্জ সড়কের পাশেই গড়ে উঠছে ইটের ভাটাটি।  

এলাকাবাসী জানান, ইটভাটাটি প্রভাবশালী এক ব্যক্তির।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, ধোঁয়া নির্গমনের চিমনি তৈরি হচ্ছে ভাটাটির। সামনে ধানি জমির বুক চিড়ে ইট গাঁথা হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে কিলন (ইট পোড়ানোর চুল্লি)।  

ভাটা তৈরিতে নিয়োজিত শ্রমিক আবুল হোসেন জানান, ভাটাটি এলাকার সোহরাব আলীর। তার নির্দেশে শতাধিক শ্রমিক ইটভাটার নানা কাজে নিয়োজিত।

ভাটাটির খুব কাছে লক্ষণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক হেলেনা খাতুন জানান, আমাদের স্কুলে কোমলমতি শিশুরা লেখাপড়া করে। ইটভাটায় উৎপাদন শুরু হলে ভয়াবহ পরিবেশ দুষণ হবে। বাতাসে ছড়িয়ে পড়বে কয়লা পোড়ানো কার্বন। এতে শিশু শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে। ভাটাটি বন্ধে তিনি প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দেবেন বলে জানান।
কাঁচা ইট বানিয়ে রাখা হয়েছে পোড়ানোর অপেক্ষায়হঠাৎ দেখি কৃষি জমিতে ভাটা তৈরি হচ্ছে। অথচ এ ধরনের পরিবেশে সরকারি অনুমোদন পাওয়ার কথা নয়। কথাটি বললেন লক্ষণপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ। তিনি ভাটাটি বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।  

এ নিয়ে কথা হয় এসএমএন ইটভাটার (নির্মাণাধীন) মালিক সোহরাব আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ইটভাটা তৈরির সব অনুমতি পেয়েছি। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও ছাড়পত্র নিয়েছি। কিন্তু এর অনুকূলে কোনো কাগজপত্র তিনি দেখাতে পারেননি।

কথা হয় বাঙালিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রণোবেশ বাগী ওরফে দুলাল বাবুর সঙ্গে। তিনি জানান, কৃষি জমিতে ভাটা করার কোনো অনাপত্তিপত্র দেওয়া হয়নি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে। তবে কাকে বাধা দেবেন বলেন? টাকা পেলে আজকাল সবাই ম্যানেজ হয়ে যায়। তিনি ভাটার নির্মাণ বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন বলে জানান।  

লক্ষণপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের কয়েক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সোহরাব আলী অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি। তার বিত্ত বৈভব রয়েছে। ফলে কেউ সোচ্চার নন তার বিরুদ্ধে। এমনকি আমাদের শিক্ষকরাও টু শব্দটি করছেন না। আমরা ভাটাটি বন্ধের দাবিতে আন্দোলনে যাবো, উপজেলা পরিষদ ঘেরাও করবো। আমরা আবাদি জমিতে ইটভাটা চাই না।  

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বজলুর রশীদ জানান, কৃষি জমিতে ইটভাটা হচ্ছে জানতাম না। খোঁজ নিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০০১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৮ 
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।