ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঐতিহ্যের নগরীতে যান-জটলায় স্থবিরতা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৮
ঐতিহ্যের নগরীতে যান-জটলায় স্থবিরতা! যানজটে স্থবির পুরান ঢাকা-ছবি-কাশেম হারুন

ঢাকা: রাস্তার এক পাশে পণ্য আনা-নেওয়ার ট্রাক ও ভ্যান দাঁড়ানো। রাস্তার অন্যপাশে শত শত রিকশা দাঁড়ানো যাত্রী তোলার জন্য। মাঝখান দিয়ে সামান্য ফাঁকা রাস্তা যা দিয়ে প্রতিদিন চলে হাজার হাজার যানবাহন। অবশ্য যানবাহন চলে বললে কিছুটা ভুলই হবে। কেননা রাজপথ থেকে শুরু করে অলিতেগলিতে সর্বত্রই যানজটের স্থবিরতা! 

রোববার (১৪ জানুয়ারি) ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকাতে সরেজমিনে গিয়ে যানবাহনের এই জটলা দেখা গেছে।

রাজধানীর এই অঞ্চলে রয়েছে সবচেয়ে পুরাতন ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা।

এছাড়া এটি শহরের অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকাও বটে। কিন্তু পুরান ঢাকা মানেই এখন ঐতিহ্য বা বাণিজ্যিক এলাকা নয়, রাজধানীর সব থেকে ভয়াবহ যানজটের এলাকা।

টমটম চলাচলের কারণে যানজট তীব্র হয়-ছবি-কাশেম হারুন
সরেজমিনে দেখা গেছে, পুরান ঢাকার রাজপথ থেকে শুরু করে অলিগলির অর্ধেক অবৈধ স্থাপনা ও যানবাহনের পার্কিংয়ের দখলে। তাছাড়া যেখানে-সেখানে ট্রাক ও ভ্যান থামিয়ে মালামাল উঠানামা করানোতে রাস্তা সব সময় ব্লক হয়ে থাকে।
 
অলিতেগলিতে হাঁটার জায়গা নেই বললেই চলে। আর যতটুকু আছে তাও বিভিন্ন হকারদের দখলে। ফলে রাস্তা দিয়ে রিকশা বা মোটরসাইকেল চলাচল করাই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
 
গুলিস্তান জিপিও, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ও গোলাপ শাহ মাজার এলাকায় দেখা গেছে, তিনটি মোড়েই শত শত যানবাহন দাঁড়িয়ে। প্রতিটি রাস্তারই অর্ধেকের বেশি দখল করেছে হকাররা। গুলিস্তান জিপিও থেকে শুরু করে সদরঘাট পর্যন্ত কার্যত কোনো ট্রাফিক সিস্টেমই কাজ করে না। গুলিস্তান জিপিও থেকে সদরঘাটের ১৫ মিনিটের রাস্তা বাসে বসে পার করতে সময় লেগে যায় ঘণ্টাখানেক!  

পুরান ঢাকায় তীব্র যানজট-ছবি-কাশেম হারুনরাজধানীর অন্য কোনো এলাকায় যানজট হলে মানুষ হেঁটে নিজ গন্তব্যে যেতে পারে। কিন্তু পুরান ঢাকায় হাঁটতে গেলে পথচারীদের আরও বেশি সমস্যায় পড়তে হয়। কেননা ফুটপাত বলতে কিছু নেই। রাস্তা দখল স্থবির গাড়ি ও হকারদের হাতে। তাছাড়া যা কয়েকটি হাঁটার রাস্তা আছে সেখানে চলে মালামাল নেওয়ার প্রতিযোগিতা।  
 
মো. ফখরুল বাসাবো থেকে প্রতিদিন সদরঘাট হকার্স মার্কেটে নিজের দোকানে যান। প্রতিনিয়তই তাকে গুলিস্তান জিপিও মোড় থেকে সদরঘাট পর্যন্ত যান-জটলার ভোগান্তি পোহাতে হয়। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গুলিস্তান জিপিও মোড় থেকে সদরঘাট পর্যন্ত প্রতিদিন অমানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। না চলে গাড়ি, না হাঁটা যায়। এ যেন এক গোলকধাঁধাঁ। নিজের দোকান না থাকলে এই এলাকায় কোনোদিন পা রাখতাম না।
 
শাঁখারি বাজারের বাসিন্দা অর্পন সিংহ বাংলানিউজকে বলেন, পুরান ঢাকায় যানজট নিত্যদিনের সঙ্গী। যানজটের কারণে ব্যবসায়ীদের প্রতি মাসে অনেক টাকা লোকসান হয়। তবে নিরসনের কোনো আশাই দেখা যাচ্ছে না।

পুরান ঢাকার যানজট-ছবি-কাশেম হারুন
তবে অনেকে মনে করেন, পুরান ঢাকার কিছু ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা এলাকার যানজটের অন্যতম কারণ। যেমন টমটম। এই বাহনটি পুরান ঢাকার ঐতিহ্য হলেও এখন এটি গলার কাঁটা। রাস্তায় এই টমটমের জন্য সীমাহীন জটলা তৈরি হয়।
 
গোলাপ শাহ মাজার মোড়ে কর্মরত এক ট্রাফিক পুলিশ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, এই এলাকার মানুষ ট্রাফিক আইন মানে না বললেই চলে। এছাড়া রাজধানীর সব থেকে পুরাতন গাড়িগুলো এই এলাকায় চলাচল করে। এমন যদি অবস্থা হয় তাহলে যানজট হবেই।
  
বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৮
এমএসি/আরআর 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।