ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘ইতিবাচক’ আলোচনা, দুপুরে সমঝোতা স্মারক সই

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৭
‘ইতিবাচক’ আলোচনা, দুপুরে সমঝোতা স্মারক সই মাহমুদ আলী ও সু চি

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার জেরে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে অং সান সু চি ও আবুল হাসান মাহমুদ আলীর মধ্যে ‘ইতিবাচক’ আলোচনা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে দেশটির রাজধানী নেপিদো’তে তাদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ৪৫ মিনিট বৈঠক চলে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন। স্থানীয় সময় দুপুর ২টার মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হবে। এরপর তারা ব্রিফিং করবেন। মাহমুদ আলী ও সু চি

সমঝোতা স্মারক সই হলে দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

বুধবার নেপিদো’তে  সমঝোতার খসড়া নিয়ে দিনভর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে আলোচনা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের জানান, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। বৃহস্পতিবার সমঝোতা স্মারক সই হবে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সমঝোতার বিস্তারিত জানা না গেলেও বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নির্দিষ্ট সময়সীমা ও জাতিসংঘের সম্পৃক্ততার প্রস্তাব দিয়েছে। চুক্তির আওতায় দুই দেশের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে। ওয়ার্কিং গ্রুপ মাঠ পর্যায়ে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে পররাষ্ট্র সচিব ছাড়াও মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা রয়েছেন।

প্রত্যাবাসন নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হলে এটা হবে তৃতীয় উদ্যোগ। এর আগে ১৯৭৮ সালে দুই দেশ চুক্তি করেছিল। সেই চুক্তির অধীনে দুই লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা ছয় মাসের মধ্যে ফেরত যায়। পরে ১৯৯২ সালে দুই দেশের মধ্যে আরেকটি সমঝোতা হয়, যার অধীনে ২০০৫ সাল পর্যন্ত দুই লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফেরত যায়।

চলতি বছরের ২৪ আগস্টের পর থেকে অব্যাহত অত্যাচারে এখন পর্যন্ত পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা সাত লাখের বেশি বলে জাতিসংঘ জানাচ্ছে। বেসরকারি হিসেবে সংখ্যাটা আরও লাখ খানেক বেশি। এছাড়া আগে থেকেই চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারে থাকেন। এতে মোট রোহিঙ্গা সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়েছে।

ঘটনার শুরু গত ২৪ আগস্ট। সে রাতে রাখাইনে পুলিশ ক্যাম্প ও সেনা আবাসে বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এর জেরে ‘অভিযানের’ নামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। ফলে লাখ লাখ মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য চলে আসছেন। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিগত দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে নতুন করে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। গত বছরের অক্টোবরেও প্রায় ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে বৈঠকে মাহমুদ আলী-সু চি

বাংলাদেশ সময়: ১১১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৭/আপডেট ১১৩৬ ঘণ্টা
কেজেড/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।