ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ইউনেস্কো মহাপরিচালককে পাঠানো ধন্যবাদপত্রে যা আছে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৭
ইউনেস্কো মহাপরিচালককে পাঠানো ধন্যবাদপত্রে যা আছে

ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের অনন্য-অসাধারণ ভাষণকে ইউনেস্কো কর্তৃক ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণিক দলিল’ হিসেবে নিবন্ধিত করায় মহাপরিচালককে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয়েছে। 

শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশ থেকে ইউনেস্কো মহাপরিচালকের কাছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি ধন্যবাদ পত্র পাঠানো হয়।

এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই ধন্যবাদ পত্রটি সমাবেশে পাঠ করেন।

এরপর সমাবেশে উপস্থিত বাংলাদেশে ইউনেস্কোর কান্ট্রি ডিরেক্টরের কাছে এই ধন্যবাদ পত্রটি হস্তান্তর করেন ওবায়দুল কাদের।
 
ধন্যবাদ পত্রে বলা হয়, আজ ১৮ নভেম্বর, ২০১৭ অপরাহ্নে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (প্রাক্তন রেসকোর্স ময়দান) দেশের গণ্যমান্য ও বরেণ্য ব্যক্তিবর্গের এক বিশাল সমাবেশ হয়। এতে উপস্থিত দেশের অগ্রগামী ব্যক্তিবর্গ আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের অনন্য-অসাধারণ ভাষণকে ইউনেস্কো কর্তৃক ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণিক দলিল’ হিসেবে নিবন্ধিত করায় আপনাকে এবং আপনার পূর্বসূরি ইরিনা বোকোভা-কে হৃদয়-উৎসারিত ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছে।

বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ সম্ভবত: পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র ভাষণ, যা একটি জাতি-রাষ্ট্র, বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছে। তার এ কালজয়ী ভাষণ সেদিনের সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে বিপুলভাবে আলোড়িত ও আন্দোলিত করেছিল এবং দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণ মৃত্যুভয়কে তুচ্ছ করে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কৃষ্ণ রাতে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর নিরস্ত্র জনতার ওপর স্মরণাতীতকালের নির্মম গণহত্যার বিরুদ্ধে যার যা-কিছু হাতে ছিল তা নিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এবং পরিশেষে অগণিত শহীদের জীবন ও মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমাদের দেশ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন করে।

পাকিস্তানি সামরিক জান্তার নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর সশস্ত্র যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়ার পূর্বপর্যন্ত আমাদের মহান নেতা সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় বাঙালির জাতীয় মুক্তির দীর্ঘ সংগ্রাম চালিয়ে আসেন। তাই ইতিহাসের এই মহানায়কের আন্দোলন-সংগ্রাম ছিল ১৯৪৮ সালে ১০ই ডিসেম্বর জাতিসংঘ ঘোষিত সার্বজনিন মানবাধিকার সনদের আদর্শের সঙ্গে সম্পূর্ণ সঙ্গতিপূর্ণ। আমরা আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি যে, আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ কেবল মাত্র বাংলাদেশের মানুষকেই নয়; বিশ্বের দেশে দেশে নির্যাতিত-নিপীড়িত, শোষিত-বঞ্চিত মানবজাতি-জনগোষ্ঠীকে সুবিচার, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ও শান্তির পক্ষে যুগেযুগে অনুপ্রাণিত করবে।

আমরা, বাংলাদেশের নাগরিকরা ইউনেস্কোর শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান বিষয়ক সব কর্মকাণ্ডের প্রতি জাতির জনকের কন্যার নেতৃত্বে আমাদের আন্তরিক সমর্থন জ্ঞাপন করছি, যা পৃথিবীর সকল দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যরে সেতুবন্ধন তৈরি করবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।

আমরা, আপনার সুস্থ জীবন ও শান্তি কামনা করি। পাশাপাশি এ প্রত্যয় ব্যক্ত করছি যে, আপনার সুযোগ্য নেতৃত্বে ইউনেস্কো আরো উন্নতির পথে এগিয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময় ১৯৪০ ঘন্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৭ 
এসকে/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।