ঢাকা, সোমবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ মে ২০২৪, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পদ্মায় এলো সর্বোচ্চ শক্তির হ্যামার

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৭
পদ্মায় এলো সর্বোচ্চ শক্তির হ্যামার বিশ্বের সবচেয়ে শক্তির অধিকারী এ হ্যামারে গতি আসবে পদ্মাসেতুর কাজে

ঢাকা: তিন হাজার ৫শ’ কিলোজুল শক্তির হ্যামারটি এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বেশি শক্তির অধিকারী। বিশেষ অর্ডারে আনা এ হ্যামারটি পদ্মার ঢেউয়ের ওপর ভাসছে। এ নিয়ে পদ্মাসেতুর কাজে এলো পাঁচটি হ্যামার।

তবে দু’টি হ্যামার নষ্ট অবস্থায় পড়ে আছে। পঞ্চম হ্যামারটিসহ এখন পদ্মাপাড়ে সক্রিয় হ্যামার সংখ্যা তিনটি।


 
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকালে পদ্মাসেতু এলাকায় এসে পৌঁছায় জার্মানির (এমইএনসিকে) তৈরি হ্যামারটি।
 
সেতুর প্রকৌশলীরা জানান, ২৪০০ ও ১৯০০ কিলোজুলের দু’টি হ্যামার অনবরত কাজ করছে। তবে দুই ও তিন হাজার কিলোজুলের দু’টি হ্যামার রয়েছে নষ্ট অবস্থায়। নতুন আনা হ্যামারে পদ্মাসেতুর মাওয়া ও মাঝনদীতে পাইল ড্রাইভে গতি আসবে।
 
সেতু বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, মূল সেতু গড়তে পাইল নদীর গভীরে নিয়ে যাওয়াই চ্যালেঞ্জ।
  
সেতু প্রকল্প সূত্র জানায়, নদীতে মূল সেতুর ২৪০টি পাইলের মধ্যে ৯৩টি পাইল ড্রাইভ হয়েছে। নদীর দুই পাড়ে সেতুতে ওঠার ট্রানজিশন পিলারে ৩২টি পাইলের মধ্যে ১৬টির কাজ শেষ হয়েছে। সব মিলিয়ে ২৭২টি পাইল হবে পদ্মাসেতুতে।
 
নদীতে যে ২৪০টি পাইল, তার মধ্যে জাজিরা পাড়ের কাছে ৩৭ এবং ৩৮ নম্বর পিলারের কাজ শেষ হওয়ার পর প্রথম স্প্যানটি বসানো হয়েছে। এখন ৩৯, ৪০ ও ৪১ নম্বর পিলারের কাজ শেষ পর্যায়ে। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে আরও ৪১ নম্বর পাইল পর্যন্ত ৩টি স্প্যান বসানো হয়ে গেলে জাজিরা পাড়ে আর কাজ নেই। ৩৪ নম্বর পাইল থেকে ৪১ নম্বর পাইল পর্যন্ত ৬টি স্প্যান লাগবে। এ অংশ জাজিরা নদীপাড়ের দিকে।
 
পদ্মাসেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে ২৬টি পিলারের ১৫৬টি পাইলের নকশা (গভীরতা) চূড়ান্ত করা আছে। পুনরায় নকশা প্রক্রিয়াধীন আছে ১৪টি পিলারের ৮৪টি পাইলের। ডিসেম্বরের ১৫ তারিখের মধ্যে এসব ডিজাইন পাওয়া যাবে। নদীর পাইল ড্রাইভ কাজে এখন পর্যন্ত এটিই অগ্রগতি।
 
দ্বিতল পদ্মা বহুমুখী সেতুর পুরোটা হবে স্টিল আর কংক্রিট স্ট্রাকচারে। সেতুর ওপরের তলায় থাকবে চারলেনের মহাসড়ক আর নিচ দিয়ে যাবে রেললাইন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ করে সেতু চালুর কথা রয়েছে।
 
যেভাবে পাইল ও হ্যামার কাজ করে
 
চায়না মেজর ব্রিজের প্রকৌশলীরা পদ্মার পাইল তলদেশে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া বর্ণনা দিয়ে আরও জানান, ‘স্ট্যাক ইয়ার্ড থেকে পাইল নিয়ে আসার পর প্রথমেই তার ভেতর ও বাইরের অংশ পরিষ্কার করা হয়। এরপর এক হাজার টনের ক্রেনের সাহায্যে তা ওঠানো হয় গাইডিং ফ্রেমে। গাইডিং ফ্রেমের হাইড্রলিক জ্যাকের সাহায্যে তা ১/৬ অনুপাতে কোণ করে স্টেবল করা হয়। তারপর ক্রেনের সাহায্য ২৪০০ কিলোজুল ক্ষমতাসম্পন্ন হাইড্রলিক হ্যামার পাইলের উপর স্থাপন করা হয়।
 
হ্যামারের ক্ষমতার ১০ শতাংশ লোড (২৪০ কিলোজুল) প্রয়োগ করে প্রথম হ্যামারিং শুরু করা হয় এবং পাইল মাটির ভেতরে প্রবেশ শুরু করলে আরও বেশি লোডের প্রয়োজন হয়। তখন ধীরে ধীরে হেমারের লোড বাড়িয়ে দিতে থাকেন প্রকৌশলীরা।
 
এভাবে হ্যামারের লোড ২০ শতাংশ, ৩০ শতাংশ বাড়তে বাড়তে ১০০ শতাংশের কাছাকাছি বাড়িয়ে পাইল ড্রাইভ করা হয়।
 
পাইলিংয়ের পর পিলার বানানোর কাজ শেষ হলে তার ওপরে স্ল্যাব (ছাদ) ও ট্রাস বসানো হবে। এ কাজগুলো শেষ হয়েছে শুধুমাত্র ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে। এ কারণে এ দু’টি পিলারের ওপর এখন স্প্যান বসানো রয়েছে। কাজ এগিয়ে আছে ৩৯ নম্বর পিলারের, ৪০ ও ৪১ নম্বরের কাজও শেষ পর্যায়ে।
 
 বাংলাদেশে সময় ১৪০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৭/আপডেট: ১৫২২ ঘণ্টা
এসএ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।