ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সংসদে সেনানিবাস আইন উত্থাপন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৭
সংসদে সেনানিবাস আইন উত্থাপন

সংসদ ভবন থেকে: ১৯২৪ সালের তৈরি ক্যান্টনমেন্ট আইন আরও যুগোপযোগী করতে ‘সেনানিবাস আইন ২০১৭’ নামে একটি বিল সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে সংসদ কার্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন। পরে তা যাচাই বাছাই ও পরীক্ষা করতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

এজন্য কমিটিকে সময় দেয়া হয়েছে ৩০ দিন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশন বিলটি উত্থাপনের আগে আপত্তি জানান জাতীয় পার্টি দলীয় এমপি ফখরুল ইমাম। পরে তার আপত্তি কণ্ঠভোটে নাকচ হয়।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ক্যান্টনমেন্ট এ্যাক্ট ১৯২৪’ দ্বারা সেনানিবাসসমূহের প্রশাসন পরিচালিত হয়ে আসছে। দেশে প্রচলিত ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে ইংরেজি ভাষা প্রণীত আইনসমূহ বাংলায় ভাষান্তর সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার নির্দেশনা বাস্তবায়ন এবং সময়ের ব্যাপ্ত পরিসরে পরিবর্তিত পরিপ্রেক্ষিতে ও প্রেক্ষাপটে বিবেচানায় বিদ্যমান ‘ক্যান্টনমেন্ট এ্যাক্ট ১৯২৪’ হালনাগাদ করে ‘সেনানিবাস আইন,২০১৭’ এর খসড়া প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে-২০১৫ সালের ২৬ আগস্ট,১৬ সেপ্টেম্বর ,১০ নভেম্বর,১৮ নভেম্বর এবং ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার মতামতের আলোকে ‘সেনানিবাস আইন ২০১৭’ শীর্ষক আইনের একটি খসড়া চূড়ান্ত করা হয়।

এতে বলা হয়েছে, ‘বিদ্যমান আইনে ২৯২টি ধারা রয়েছে। যার কতিপয় ধারা অনাবশ্যক বিবেচনায় বর্জন করা হয়েছে। কতিপয় নতুন ধারা আবশ্যক বিবেচিত হওয়ায় সংযোজন করা হয়েছে। ’ এভাবে প্রস্তাবিত ‘সেনানিবাস আইন ২০১৭’ এ ১৬টি অধ্যায়ে মোট ২১৮টি ধারা রাখা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে-প্রস্তাবিত আইনের খসড়া দ্বারা প্রধানত বিদ্যমান আইনকে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত নতুন আইনে অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে সামরিক ভূমি ও সেনানিবাস অধিদপ্তরকে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। সামরিক আবাসিক প্রকল্পকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং ৯০ বছর আগে নির্ধারিত বিভিন্ন ফি ও জরিমানার পরিমাণসমূহ বর্ধিত করা হয়েছে। এদিকে বিলটি সংসদে উত্থাপনের আগে এ নিয়ে আপত্তি জানান জাতীয় পার্টি দলীয় এমপি ফখরুল ইমাম।

তিনি বলেন, ‘বিলের নামটি স্পর্শকাতর। তাই বেশি কথা বলা যাবে না। বিলটি ঘণ্টাখানেক আগে পেয়েছি। তাই পুরোটা পড়ার সময় পাইনি। যতটুকু দেখেছি তাতে দেখেছি এ রকম একটি বিল রহিত না করে, সংশোধন না করে কেবল সমন্বয় করা হয়েছে। এটা কিভাবে সম্ভব তা আমার বোধগম্য নয়। আইনমন্ত্রী বিষয়টি আরও ভালো জানেন। নতুন এই বিলের কয়েকটি ধারা তুলে ধরে বলেন,এগুলোর যৌক্তিকতা সম্পর্কে আমি বোধগম্য নই। ’

জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, ‘বিলটি আগে ইংরেজিতে ছিলো। এখন তা বাংলায় ও যুগোপযোগী করা হয়েছে। বিলটি রহিত করারও বিধান রয়েছে। তাই এ নিয়ে উনার যে দুঃশ্চিন্তা তা দূর করতে পেরেছি বলে মনে হয়। তিনি বলেন, বিলটি সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হবে। সেখানে তিনি আপত্তি উত্থাপন করতে পারেন। সেখানে আমরা জবাব দিতে পারবো। ’

বিলে সেনানিবাস এরিয়া কমান্ডারের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘তিনি সেনানিবাসে কর্মরত একজন সামরিক কর্মকর্তা যিনি এক বা একাধিক সেনানিবাস বা এক বা একাধিক সামরিক স্থাপনা বা ইউনিটের সমন্বয়ে গঠিত কোন সামরিক এলাকার সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং ক্ষেত্রমত,নৌ অঞ্চল প্রধান বা বিমান ঘাঁটি প্রধানও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন। ’

একইভাবে স্টেশন কমান্ডার এর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘তিনি একজন সামরিক কর্মকর্তা যিনি কোন সেনানিবাসের এক বা একাধিক ইউনিটের সমন্বয়ে গঠিত একটি প্রশাসনিক ইউনিটের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা এবং যিনি এরিয়া কমান্ডারের নিকট জবাবদিহি করিয়া থাকেন। ’

এদিকে গতকাল সংসদে ১৯১০ সালের তৈরি ‘ইলেকট্রিসিটি এ্যাক্ট’ রহিত করে সংশোধনসহ ‘বিদ্যুৎ বিল-২০১৭’ নামে একটি বিল উত্থাপন করা হয়। বিদ্যুৎ,জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিলটি উত্থাপন করেন। ওই বিলেও আপত্তি জানান ফখরুল ইমাম। তিনি বিলটিকে ‘কালো আইন’ বলে উল্লেখ করেন। পরে কণ্ঠভোটে তার আপত্তি নাকচ হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৭
এসএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।