ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কম দামে চাল ছাড়ছেন না ৩৬ মিলমালিক!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৭
কম দামে চাল ছাড়ছেন না ৩৬ মিলমালিক! কম দামে চাল ছাড়ছেন না ৩৬ মিলমালিক; ছবি:আরিফ জাহান

বগুড়া: বগুড়া শহরের চারমাথা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে কিছু দূর পশ্চিমে এগোলে গোদারগাড়ী চালের বাজার। বৃহৎ এ চালের বাজারে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ চাল আসে। কিন্তু গেল ক’দিন ধরে আমদানি বেশ কমে গেছে। তুলনামূলক কমে গেছে বেচাবিক্রিও। খুচরা বিক্রির জন্য খ্যাতি রয়েছে চালের এ বাজারের।

জহুরুল ইসলাম এই বাজারের একজন খুচরা চাল ব্যবসায়ী। চালের দাম বাড়ছে কেন জানতে চাইলে এই ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে বলেন, ‘হামরা চাল কিনি আর বেচি।

হামরা কিছু করবার পারমু না। গেরস্থরা ধান ছাড়ে দাম বাড়লে। মহাজনরা বেশি দামে পাবার জন্য চাল আটকে রাখে। এখন চালের দাম বাড়লে হামরা কি করমু বলেন’।

আরেক ব্যবসায়ী মো. সুমন বাংলানিউজকে বলেন, এক থেকে দেড় সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি চালের দাম রকমভেদে বেড়ে যায় প্রায় ২০ টাকা করে। গত দুই দিনে কেজিপ্রতি চালের দাম কমেছে মাত্র ১-২ টাকা করে। কিন্তু এতে লাভ কি? বেশি দাম হওয়ায় বেচাবিক্রি কমে গেছে।

ক্রেতা সাধারণ যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকু চাল কিনছেন। ফলে তার মতো খুচরা ব্যবসায়ীরাও ভোগান্তিতে রয়েছেন দাবি সুমনের।

কারণ হিসেবে তিনি জানান, পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীরা বেশি দামে চাল কিনে বাজারে ছাড়ছেন। তাদের লাভ আগের মতই রয়েছে। মাঝখান থেকে তাদের বেশি পুঁজি খাটাতে হচ্ছে। আর লাভবান হচ্ছেন চাল উৎপাদনকারী বড় ব্যবসায়ীরা। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তার মত খুদে ব্যবসায়ী আর ভোক্তাদের।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) বগুড়ার গোদাগাড়ী, ফতেহ আলী বাজার, নন্দীগ্রামের ওমরপুর হাট, শেরপুরের বারোদুয়ারী হাট, মির্জাপুর হাটসহ কয়েকটি হাটবাজারের পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন অভিমতই পাওয়া গেল।

এদিকে চালের বাজার উর্ধ্বমুখী হয়ে পড়ায় দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের কঠোর মনোভাবের কারণে আড়তদার ও বড় ব্যাপারীরা চাল কেনা প্রায় বন্ধ রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এতে জেলার দুপচাঁচিয়া ও শেরপুরসহ বিভিন্ন উপজেলায় উৎপাদনকৃত চাল মিল-গুদামে পড়ে আছে বলে গোলাম রব্বানী, শহিদুল ইসলাম, আফজাল হোসেন, জাহাঙ্গীর আলমসহ একাধিক ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে জানান।

অপরদিকে এ জেলায় প্রায় ৩৬টির মত অটোমেটিক রাইস মিল রয়েছে। এসব মিল মালিকরা সম্প্রতি বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের বিরগ্রাম এলাকায় একটি স্থানে বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে শেরপুর উপজেলার তিনটি অটোমেটিক রাইস মিলের মালিকের মধ্যে দু’জন উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়, তারা কোনোভাবেই কম দামে চাল বিক্রি করবেন না। সে অনুযায়ী তারা বেশি দাম পেলেই কেবল একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে (সীমিত আকারে) চাল ছাড়ছেন বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বড় ব্যবসায়ী জানান।

জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক মো. মাইন উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, ইতোমধ্যেই এ জেলায় খোলাবাজারে ওএমএস’র চাল বিক্রি শুরু হয়েছে। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) থেকে মোট ৪৫ জন ডিলারের মাধ্যমে প্রতিদিন ৪৫ মেট্রিক টন চাল বিক্রি হচ্ছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে খাদ্য বিভাগের এই কর্মকর্তা জানান, জেলার ৩৬টি অটোমেটিক রাইস মিল মালিকদের বৈঠকের খবর জানা নেই তার। তবে বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) মিল মালিকদের সঙ্গে চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে আনতে করণীয় নিয়ে আলোচনা হবে। সে আলোচনায় মিল মালিকদের বৈঠকের বিষয়টিও তোলা হবে।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় বাজারগুলোয় খুচরা দর হিসেবে প্রতিকেজি বিআর-২৮ ৫৪ টাকা, বিআর-২৯ ৫৩ টাকা, হিরা (মোটা) ৪২ টাকা, মিনিকেট ৫৮-৬০ টাকা, কাজললতা ৬০ টাকা, কাটারিভোগ ৬৮-৭০ টাকা, এলসি চাল ৫০ টাকা দরে বেচাকেনা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৭
এমবিএইচ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ