ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এবার দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আসছে ৪০ ইলেকট্রিক রেল ইঞ্জিন

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৭
এবার দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আসছে ৪০ ইলেকট্রিক রেল ইঞ্জিন এবার দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আসছে ৪০ ইলেকট্রিক রেল ইঞ্জিন

ঢাকা: বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ২০টি ব্রডগেজ ডিজেল-ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো রেলপথ মন্ত্রণালয়। তবে বর্তমানে রেলকোচের সংখ্যা বৃদ্ধি, যাত্রী চাহিদা পূরণের জন্য নতুন ট্রেন পরিচালনার উদ্দেশে এক সঙ্গে ৪০টি ইঞ্জিন কিনবে সরকার। 

ইঞ্জিনগুলো একই সঙ্গে ডিজেল এবং ইলেকট্রিকের মাধ্যমে পরিচালনা করা যাবে। আধুনিক নিরাপদ ও গুনগতমান সম্পন্ন ইঞ্জিন ব্যবস্থাপনাও চালু করা হবে।

প্রতিটা ইঞ্জিন কেনা হবে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে।
 
৪০টি ব্রডগেজ ডিজেল ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) কিনতে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৯৩১ কোটি টাকা। মোট ব্যয়ের মধ্যে ১ হাজার ৫১০ কোটি  টাকা ঋণ দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। ঋণের ৫০ শতাংশ হবে কনসেশনাল আর বাকি ৫০ শতাংশ হবে বাজারভিত্তিক। বাজারভিত্তিক ঋণে সুদ হবে লাইবর প্লাস পয়েন্ট ৫০ শতাংশ। আর কনসেশনাল ঋণে সুদের হার হবে ২ শতাংশ। ইঞ্জিনেরমাধ্যমে রেলপথে আধুনিক, নিরাপদ ও উন্নত গুণগত সম্পন্ন রেল পরিচালনা করা সম্ভব হবে।  যাতে করে পুরাতন ও মেয়াদ উত্তীর্ণ  ইঞ্জিন প্রতিস্থাপন করা যায় এবং ব্রড গেজ সেকশনে রোলিং স্টকের স্বল্পতা দূর করা যায়।


প্রতিটা রেল ইঞ্জিন বাবদ ব্যয় ৪৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা। তবে প্রাথমিকভাবে প্রতিটা ইঞ্জিনের গড় একক দাম নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৩৬ কোটি টাকা। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া থেকে কেনা কোচ বাবদ খরচ অধিক পড়ছে। এছাড়া লোকোমেটিভ হাই কনফিগারেশনের জন্য ২০ শতাংশ মূল্যবেশি করে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো ক্যাপিটাল অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স স্পেয়ারস সংগ্রহের জন্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ কোটি টাকা। শুরু থেকে প্রসেস করতেই তিন বছর সময় লাগবে ইঞ্জিন পেতে। তাই এখন থেকে ইঞ্জিন কেনার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোফাজ্জেল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা নতুন করে ৪০টি ব্রডগেজ রেল ইঞ্জিনের সংগ্রহ করবো। আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে এগুলো সংগ্রহ করা হবে। ইঞ্জিন কেনার প্রক্রিয়া চলমান রাখতে হয়। নতুন নতুন ইঞ্জিন বহরে যোগ করতে হয় তানাহলে আগেরগুলো একসঙ্গে বাতিল হয়ে যায়। এটা কন্টিনিউয়াস প্রসেস। কেনা বন্ধ করলে সংকট হয়ে যাবে। কারণ ইচ্ছা করলেই কম সময়ে ইঞ্জিন পাওয়া যাবে না। প্রসেস করতেই দেড় দুই বছর সময় লাগে। এখন শুরু করলে তিন থেকে সাড়ে তিন বছর সময় লাগবে ইঞ্জিন পেতে। তবে কোরিয়ান ইঞ্জিন অনেক বেটার। ’


তিনি বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ৪০টি ব্রডগেজ ডিজেল ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ  সংগ্রহ প্রকল্পের আওতায় কেনা হবে। চলতি সময় থেকে জুন ২০২১ মেয়াদে সমস্ত ইঞ্জিন কোরিয়া থেকে দেশে আসবে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনায় সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ে প্রকল্পটি একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে।
 
ইঞ্জিন কেনার পরবর্তী তিন বছর মেরামত বাবদ সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ দেওয়া হবে। এখাতে ব্যয় হবে ৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। বিদেশি ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ দেওয়া হবে ইঞ্জিন মেরামতে। এখাতে ব্যয় করা হবে ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা।

বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়েতে ২৭৫টি ইঞ্জিন রয়েছে। এর মধ্যে ১৮১টি মিটার গেজ এবং ৯৪টি ব্রডগেজ। এসব ইঞ্জিনের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ বছর। অথচ ইতোমধেই ১৫৫টি ইঞ্জিনের বয়স ৩০ বছর অতিক্রম করেছে।

চাহিদার কারণে ব্যয়বহুল মেরামত এবং অধিক জ্বালানি ব্যয়ের মাধ্যমে মেয়াদ উত্তীর্ণ এসব রেল ইঞ্জিন চলমান রাখা হয়েছে। এছাড়া অনেক পুরাতন মডেল হওয়ার কারণে মেরামতের সময় প্রয়োজনীয় খুচরা যন্ত্রাংশও পাওয়া যাচ্ছে না। রেল ইঞ্জিনসমূহের বহর থেকে এসব পুরাতন ইঞ্জিন প্রত্যাহার করা জরুরি বলে মনে করে মন্ত্রণালয়।

এডিবি’র ঋণে কেনা হচ্ছে ৪০ ইঞ্জিন। লোকোমোটিভ সংগ্রহ করা হলে মেয়াদ উত্তীর্ণ পুরাতন জরাজীর্ণ ৪০টি ইঞ্জিন প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হবে বলে জানায় রেলপথ মন্ত্রণালয়।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৭
এমআইএস/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।