ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আরো ৬৭ অ্যানথ্রাক্স রোগীর সন্ধান

জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১০
আরো ৬৭ অ্যানথ্রাক্স রোগীর সন্ধান

সিরাজগঞ্জ: পাবনার বাঘাবাড়ি ও সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ এবং বেলকুচি উপজেলায় রোববার অ্যানথাক্স আক্রান্ত আরও ৬৭ রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে।

এর মধ্যে কামারখন্দে ৩৩, বাঘাবাড়িতে ১৯, বেলকুচিতে ১৫ জন।

গত কয়েক দিনে এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা একশ’ ৩ জনে দাঁড়ালো।

প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকায় আক্রান্তের খোঁজ পাওয়ায় স্বাস্থ্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগসহ ঢাকার রোগতত্ত্ব ও রোগ নির্ণয় (আইইডিসিআর) ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি)’র প্রতিনিধি দল এক ধরনের মানসিক চাপে রয়েছে। পাশাপাশি আতঙ্কিত হতে শুরু করেছে অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত এলাকার সাধারণ মানুষ।

তবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়ায় আতঙ্ক দানা বাঁধতে পারছে না। কিন্তু গ্রামবাসীদের মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ ও ক্ষোভে দেখা গেছে।

জানা গেছে, সাঁথিয়া উপজেলার নাগডেমরা ইউনিয়নের বাঘাবাড়ি দুগ্ধ অঞ্চলের বড় পাথালিয়া গ্রামের ১৯ জন নতুন করে অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত হয়। গত সোমবার স্থানীয় খামারী আকরাম হোসেনের অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গরুর মাংস খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে তারা।

অসুস্থদের মধ্যে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ মিলেছে বলে জানান পাবনা জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. আশরাফুজ্জামান।

সিভিল সার্জনসহ আইইসিডিআর ও আইসিডিডিআরবি’র বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও গবেষণা কর্মীরা পাথালিয়া গ্রামে গিয়ে রোগীদের চিকিৎসা দিয়েছেন। সেইসঙ্গে আতঙ্কিত গ্রামবাসীকে অভয় দিয়েছেন বলেও জানান ডা. আশরাফ।

পাশাপাশি তারা পরীক্ষা করার জন্য ১৫ রোগীর রক্তের নমুনাসহ জবাইয়ের স্থান, গরুর হাঁড়গোড় ও গোয়াল ঘরের মাটি সংগ্রহ করেছে।

গরু জবাই, মাংস কাটা, রান্না ও খাওয়াসহ অন্যান্য কাজে প্রায় ৬০ গ্রামবাসী জড়িত ছিল। এদের কেউ আক্রান্ত হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখছে অনুসন্ধান দল।


এদিকে, সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. নূরল ইসলাম তালুকদার জানান, কামারখন্দ উপজেলার ধোপাকান্দি গ্রামে সকালে আরও ৩৩ রোগীর খোঁজ পাওয়া গেছে। এসব রোগীও অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গরুর মাংস খেয়ে বা সংস্পর্শে এ রোগে আক্রান্ত হয়।

দুপুরে সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. শরিফুল ইসলাম ও কামারখন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাক জেলা সেনেটারি ইন্সপেক্টর রামচন্দ্র সাহাকে সঙ্গে নিয়ে ওই গ্রামের ২৬ রোগীকে চিকিৎসা দেন। বিনা মূল্যে সিপ্রোফোক্সিন গ্রুপের ঔষধ দেন। বাকি ৭ রোগী আগেই স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছিল।  

সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার জানান, দুপুরে উপজেলার আদাচাকী উত্তরপাড়া গ্রামে তারা আরও ১৫ অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পেয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছেন।

 তিনি বলেন, ‘এলাকার গরুর খামারী মো. আবু বকর সিদ্দিকের একটি অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গরুর মাংস খেয়ে এরা আক্রান্ত হয়েছে। ’

রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগসহ আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআরবি প্রতিনিধি দল।

আইইডিসিআর’র মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. সুবোধ কুমার কুণ্ডু বলেন,‘আমরা ভাবতে পারেনি এত রোগীর দেখা মিলবে। স্বভাতই আমরা মানসিক চাপে আছি। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ