ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

আমি জাতির পিতার মেয়ে, জানি উন্নয়ন কিভাবে করতে হয়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৭
আমি জাতির পিতার মেয়ে, জানি উন্নয়ন কিভাবে করতে হয় বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

রাজশাহী: রাজশাহীতে গত সাড়ে আট বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে তা এর আগের কোনো সরকার করতে পারেনি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি জাতির পিতার মেয়ে, আমি জানি উন্নয়ন কিভাবে করতে হয়’।

বৃহস্পতিবার (সেপ্টেম্বর ১৪) দুপুরে রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিয়ানে অবস্থিত রাজশাহী চিনিকল মাঠে আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের গত সাড়ে আট বছরের শাসনামলে যে উন্নয়ন হয়েছে তা দীর্ঘদিন বিএনপি ক্ষমতায় থাকলেও হয়নি।



এ সময় রাজশাহীর উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি রাজশাহীবাসীর জন্য নতুন উন্নয়ন প্রকল্পের ঘোষণা দেন তিনি।  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'আমি জাতির পিতার মেয়ে, আমি জানি কিভাবে উন্নয়ন করতে হয়। আমার কাছে দাবি করার প্রয়োজন নেই। আমরা সারাদেশের উন্নয়নের জন্য ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। কারণ আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই দেশের উন্নয়ন হয়। আর বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে দেশে আগুন সন্ত্রাস হয়, জঙ্গিবাদ হয়, বাংলা ভাইয়ের জন্ম হয়। মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যায়। এমনকি তারা এতিমের টাকা পর্যন্তও লুটপাট করে খায়।  
প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, বিএনপি সরকারের আমলে একজন প্রতিমন্ত্রীর নিজের লাভের কারণে একটি মোবাইলের দাম ছিল এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। তখন মোবাইলে কথা বলতে প্রতি মিনিটে খরচ হতো ১০ টাকা। আওয়ামী লীগ সরকার মোবাইলের দাম হাজার-বারশো টাকায় নামিয়ে এনেছে। এখন মানুষ সস্তায় কথা বলতে পারছেন।

রাজশাহীতে বিশেষ অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলা হবে ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশে ১১০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছে তার সরকার। রাজশাহীতেও এই বিশেষ অর্থনৈতিক জোন স্থাপন হবে। ইতিমধ্যে সরকার এখানে আইটি পার্ক নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। সেখানে কম্পিউটার, ল্যাপটপসহ নানা ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদন হবে। এ অঞ্চলের কৃষি নিয়ে আরও বেশি গবেষণা করতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েরও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে তার সরকার কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ২০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে সরবরাহ করছে। বিনা পয়সায় দেওয়া হচ্ছে বই। দেশের এক কোটি ৭৩ লাখ শিক্ষার্থী এখন সরকারের বৃত্তি পাচ্ছে। ১ কোটি ৩০ লাখ মায়ের মোবাইলে চলে যাচ্ছে বৃত্তির টাকা। প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় জনতার ভিড়

প্রধানমন্ত্রী তার ৩০ মিনিটের ভাষণে সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন এই জনসভায়। ২০০৮ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুই মেয়াদে রাজশাহীর কি কি উন্নয়ন হয়েছে, তার ফিরিস্তি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি আগামীতেও নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন চাইলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদেরই ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে হবে। তার লক্ষ্য- দেশে শান্তি, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। জাতির পিতার ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণে তিনি ও তার সরকার বর্তমানে কাজ করে যাচ্ছেন। তাই উত্তরবঙ্গে এখন আর কোনো মঙ্গা নেই। রাজশাহীর উন্নয়নে যা যা করা দরকার তার সবই সরকার করবে।

এবারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর তৈরি করে দেয়ার কথা উল্লেখ করে, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোও দ্রুত মেরামত করার কথা জানিয়ে সেসব সড়ক সঠিকভাবে সংরক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া কেউ যেন জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য অভিভাবক, শিক্ষক ও মসজিদের ইমামদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর জনসভার মঞ্চরাজশাহীর পবা উপজেলার মতিহার থানাধীন হরিয়ান চিনিকল মাঠে এই জনসভার আয়োজন করা হয়। সেখানে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহীর সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠাণ্ডু, রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য আবদুল ওয়াদুদ দারা, রাজশাহীর সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বেগম আখতার জাহান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার প্রমুখ।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রথমে হেলিকপ্টারে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সরদহে অবস্থিত বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে আসেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন। পরে বিকেল ৩টায় পবার হরিয়ান চিনিকল মাঠে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী। বক্তব্য শুরু করার আগে প্রধানমন্ত্রী ৬টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ১৭টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৭
এসএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।