ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দুর্গম পাহাড়ে বন বিভাগের কর্মীরা শত ভাগ পারিবারিক রেশন পাবেন

গাজী জহিরুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১১ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১০
দুর্গম পাহাড়ে বন বিভাগের কর্মীরা শত ভাগ পারিবারিক রেশন পাবেন

ঢাকা : দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় কর্মরত বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য শত ভাগ পারিবারিক রেশন চালু করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়।

বন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।



সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত রেশনিং ব্যবস্থা খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের রেশন প্রাধিকারের তালিকাভূক্ত করতে শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য তার দপ্তরে এর সার-সংক্ষেপ পাঠানো হচ্ছে।

উল্লেখ্য, অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মতো  দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালনকারী বন বিভাগের কর্মকর্তা- কর্মচারীদেরও একই ধরনের সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসছে সরকার।

নতুন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি বনবিভাগের যারা দুর্গম পাহাড়ে কাজ করবেন তারাও শতভাগ পারিবারিক রেশন পাবেন।    

সূত্র জানায়, বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় থেকে দুর্গম এলাকায় দায়িত্ব পালনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য শতভাগ রেশনের পাশাপাশি ৩০ ভাগ ঝুঁকিভাতা ও কর্তব্যকালীন আহত-নিহত কর্মকর্তা-কর্মচারিকে এককালীন আর্থিক অনুদান দেড় লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করারও প্রস্তাব করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত ১.৫২ মিলিয়ন হেক্টর দূর্গম বনাঞ্চলে দশ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।

সরকারি হিসাবে, গত ১০ বছরে কেবল সুন্দরবনেই দায়িত্বপালনকালে হিস্র বন্যপ্রাণী, বনদস্যু ও দুষ্কৃতকারীদের হাতে ১৪ জন বনকর্মী হতাহত হয়েছেন।

মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রত্যন্ত অঞ্চলের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতা, বাসস্থান ও যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাব, সূচিকিৎসা ও ছেলে মেয়ের লেখা পড়ার সুযোগ-সুবিধার অভাবের কারণেই তারা কর্মস্থলে অবস্থান করতে পারে না। ফলে তাদের বৃদ্ধ পিতা-মাতাসহ পরিবারকে একাধিক স্থানে রেখে সাংসারিক ব্যয় বহন করতে হয়। যা তাদের স্বল্প বেতন দিয়ে সংকুলন হয় না। আর একারণে অনিচ্ছা সত্ত্বেও কেউ কেউ অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। বনভূমি ও বনজ  সম্পদ রক্ষায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রস্তাবিত রেশন ব্যবস্থা চালু করতে এখাতে প্রতি বছর আড়াই কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হবে।

প্রস্তাবিত খসড়ায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিডিআর, নৌ-বাহিনী, পুলিশবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং আনসার সদস্যদের মতো  বনবিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সরকারি সম্পদ রক্ষার স্বার্থে দূষ্কৃতকারীদের প্রতিহত করতে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়াও দুর্গম এলাকায় সুচিকিৎসা ও জীবনরক্ষাকারী ঔষধপত্র নেই। এসব এলাকায় ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড, কলেরার মতো মারাত্মক রোগের প্রকোপ অত্যন্ত বেশি। তাই সুচিকিৎসার জন্য তাদের দেশের অন্যান্য এলাকার চেয়ে বেশি ব্যয় করতে হয়। এছাড়াও, দুর্গম বনাঞ্চলে প্রাকৃতিক দুযোর্গ, হিংস্র বন্যপ্রাণী ও বনদস্যুদের মোকাবেলা করে বন কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করতে হয় যা অত্যন্ত ঝঁকিপূর্ণ।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এসব দিক বিবেচনা করেই সরকারের অন্যান্য আইন-শৃক্ষলা বাহিনীর মতো বন বিভাগে দুর্গম এলাকায় কর্মরতদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর সুপারিশ করা হচ্ছে।


বাংলাদেশ স্থানীয় সময় : ১৪৪১ ঘন্টা আগস্ট ২২, ২০১০।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।