ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বকেয়া পরিশোধের ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন ট্যানারি মালিকরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৭
বকেয়া পরিশোধের ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন ট্যানারি মালিকরা বকেয়া পরিশোধের ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন ট্যানারি মালিকরা

গাইবান্ধা: উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ চামড়ার বাজার গাইবান্ধার পলাশবাড়ী হাট। প্রতিবছরের মতো এবার হাটে চামড়া কিনতে আসেননি ট্যানারি মালিকরা। গত বছর ব্যবসায়ীদের বকেয়া টাকা পরিশোধ করতে না পারায় এবার হাটে ট্যানারি মালিকদের দেখা মিলছে না।

হাটে বড় ব্যবসায়ী বা ট্যানারি মালিকরা না আসলেও স্থানীয় মহাজনদের চামড়া কিনছেন। কিন্তু চামড়ার সঠিক দাম না পাওয়ায় হতাশা আর বড় ধরনের লোকসান গুনছেন ক্ষুদ্র ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ঢাকার ট্যানারি মালিকরা গত বছরের বকেয়া টাকা পরিশোধ করেনি। একারণে তারা এবার হাটে আসেনি। এখন স্থানীয় মহাজন ও বড় ব্যবসায়ীদের কাছে কমদামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তবে স্থানীয় মহাজনদের কাছে কম দামে চামড়া বিক্রি করলেও তা নগদে বিক্রি করতে পারায় খুশি অনেক ব্যবসায়ী।

রংপুর থেকে আসা মৌসুমী ব্যবসায়ী আজহারুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, ২০০ পিস গরুর চামড়া হাটে এনেছি। কিন্তু সকাল থেকে এ পর্যন্ত দুই/এক জন ট্যানারি মালিক চামড়া দেখেছেন। তারা যে দাম করছেন, এতে চামড়া বিক্রি করলে অর্ধেক লোকসান গুনতে হবে। এছাড়া বিগত বছরগুলোতে ট্যানারি মালিকদের কাছেই সব ব্যবসায়ী বাকিতে চামড়া বিক্রি করেছেন। গত বছরের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় হাটে এ বছর ট্যানারি মালিকরা প্রবেশ করেনি। এজন্য কম দামে স্থানীয় মহাজনদের কাছে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।

এদিকে, উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ এ হাটে ২০ কোটি টাকার চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। একদিকে চামড়ার মূল্য খারাপ অন্যদিকে লবনের দাম বৃদ্ধি। এছাড়া ঢাকার ট্যানারি মালিকরা হাটে চামড়া কিনতে না আসায় লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক পূরণেও বাধা সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন অনেকেই।

এ বিষয়ে একাধিক ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে জানান, ঈদের দিন থেকে ৬০০ থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা দরে পশুর চামড়া কিনেছেন। এছাড়া খাসির চামড়া কিনেছেন ১০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে। এরপর চামড়া প্রক্রিয়াজাত ও পরিবহন খরচ দিয়ে হাটে আনা পর্যন্ত চামড়া প্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু ট্যানারি মালিকদের বেধে দেওয়া দাম ও লবণের দাম বেশি হওয়ায় এ বছর চামড়ার সঠিক দাম পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।

বকেয়া পরিশোধের ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন ট্যানারি মালিকরা

পলাশবাড়ী উপজেলার চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলতাফ হোসেন মোল্লা বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর পলাশবাড়ী হাটে চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০ কোটি টাকা। তবে ঢাকার ট্যানারি মালিকরা গত বছরের পাওনা টাকা পরিশোধ করতে না পারায় অনেকেই হাটে চামড়া কিনতে আসেননি। এতে করে ব্যবসায়ীদের বড় ধরনের লোকসান গুনতে হবে। তবে স্থানীয় মহাজনরা সঠিক দামে চামড়া কিনছেন বলে দাবি করেন তিনি।

জেলা পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বাংলানিউজকে জানান, হাটে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৭
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।