ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

চামড়া কিনে সর্বশান্ত দিনাজপুরের মৌসুমী ব্যবসায়ীরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৭
চামড়া কিনে সর্বশান্ত দিনাজপুরের মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়া সংগ্রহ করছেন ব্যবসায়ীরা-ছবি-বাংলানিউজ

দিনাজপুর: পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়ার ব্যবসা করতে প্রতিবেশির কাছ থেকে টাকা ধার নেন আলাউদ্দিন। ঈদের দিন পশু কোরবানির পর শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ঘুরে নগদ টাকা দিয়ে চামড়া কেনেন। এই চামড়া আড়তে নিয়ে গেলে দাম পেয়েছেন প্রায় অর্ধেক। একদিনের ব্যবসায় আলাউদ্দিন সর্বশান্ত হয়ে পথে বসেছেন। 

অন্যবারের তুলনায় এবার পশু কোরবানি হয়েছে কম। ফলে চামড়া সংগ্রহও হয়েছে কম।

সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ দামে চামড়া কিনেছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। সরকার নির্ধারিত মূল্যের কথা চিন্তা না করে তার চেয়ে বেশি দামে চামড়া কিনেছেন আলাউদ্দিনের মতো মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।  

দিনাজপুর শহরের দক্ষিণ মুন্সিপাড়া গোলকুঠি এলাকার বাসিন্দা আলাউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ধারের টাকা দিয়ে এবার চামড়ার ব্যবসা করতে নেমেছিলাম। ঈদের দিন চামড়া কেনার পর আড়তে গিয়ে প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি করতে হয়েছে।  আমাদের কাছে সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। আমার মতো অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ীই সর্বশান্ত হয়ে পথে বসেছেন। ধারের টাকা পরিশোধ করবো কেমন করে সেই চিন্তাই করছি।  

এ ব্যাপারে দিনাজপুর চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য ও চামড়া ব্যবসায়ী মামুনুর রশিদ বাংলানিউজকে জানান, মহাজনরা বকেয়া টাকা পরিশোধ না করায় পুঁজি সংকটে পড়েছেন স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীরা। এবার নিজেরা মাঠ পর্যায়ে চামড়া সংগ্রহ করতে না পারায় মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেই কিনতে হচ্ছে। তবে এসব চামড়া বিক্রির সময় বিপাকে পড়তে হবে।  

তিনি জানান, এবার ঢাকার বাইরে সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী লবণ মিশ্রিত গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। লবণ মিশ্রিত ছাগলের চামড়া ২০ থেকে ২৫ টাকা। কিন্তু মৌসুমী ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে কিনেছে। যেমন সরকার নির্ধারিত একটি বড় গরুর চামড়ার দাম ৬শ' থেকে ৭শ' টাকা হয়। কিন্তু মৌসুমী ব্যবসায়ীরা সেই চামড়া কিনেছেন ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকায়। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বেশি দামে চামড়া কিনে নিজেদের পাশাপাশি প্রকৃত ব্যবসায়ীদেরও ক্ষতির মুখে ফেলেছেন।  

মামুনুর রশিদ আরও জানান, প্রতি বছর দিনাজপুরে প্রায় লক্ষাধিক গরু-মহিষ ও দেড় লক্ষাধিক ছাগল-ভেড়া কোরবানি দেওয়া হয়। এবার বন্যার কারণে পশু কোরবানি হয়েছে কম। অর্থ সংকটের মধ্যে পড়লেও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চামড়া সংগ্রহ করে মহাজনদের দিতে হবে। ন‍া হলে মহাজনরা বকেয়া টাকা পরিশোধ করবে না।  

বাংলাদেশ সময়: ১১১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৭
আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।