তাদের ভাষ্যমতে, ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে বকেয়া টাকা না পাওয়ায় ঈদ মৌসুমে পর্যাপ্ত চামড়া কিনতে পারছেন না তারা। ট্যানারি মালিকরা নিজেরাই দালালের মাধ্যমে কেনার কারণেও তাদের সংগ্রহ কমে গেছে।
রোববার (০৩ সেপ্টেম্বর) ঈদের ২য় দিনের সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর লালবাগের পোস্তা এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, অন্য যেকোনো বারের তুলনায় চামড়ার কেনা-বেচা অনেক কম। উল্লেখযোগ্য হারে চামড়া নিয়ে আসেননি খুচরা বিক্রেতারা। ঢাকার বাইরে থেকেও চামড়া আসার তেমন কোনো লক্ষণ নেই।
বাংলাদেশ হাইডস্ অ্যান্ড স্কিনস্ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আড়তদার হাজী মো. দেলোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ট্যানারি মালিকরা বকেয়া না দেওয়া ও তারা নিজেরা চামড়া সংগ্রহের কারণে লক্ষ্যমাত্রার ৩০ শতাংশ পূরণ হবে না। কোরবানি কম হওয়ায়ও চামড়া কম এসেছে।
আবার অনেক আড়তদার ট্যানারি স্থানান্তর ও আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম কমার কথা বলে কিনছেন কম। তারা বলছেন, ট্যানারি স্থানান্তরের ঝামেলার কারণে বিদেশি বায়াররা আর আগের মতো কিনতে চাচ্ছেন না। গত বছরের অনেক চামড়াও এখনো বিক্রি হয়নি।
পোস্তায় এখনো সরকার নির্ধারিত দামেই চামড়া কেনা-বেচা হচ্ছে বলে দাবি করছেন বড় আড়তদাররা।
তবে পোস্তার ছোট আড়তদার ও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ‘বড় বড় আড়তদাররা এখন সিন্ডিকেটে ব্যবসা করছেন। ফলে আমরা চামড়া পাচ্ছি না। দাম কমানো ও নিজেরাই বেশি চামড়া সংগ্রহের চিন্তা তাদের। আর সে সিন্ডিকেট ব্যবসা টিকিয়ে রাখতেই এখন নানা কথা বলছেন তারা’।
‘তাদের সিন্ডিকেটের কারণেই শনিবার (০২ সেপ্টেম্বর ঈদের দিনের মতো দাম পাওয়া যাচ্ছে না। সেদিন বড় আকারের চামড়া ১ হাজার ৫০০ টাকা, মাঝারি আকারের চামড়া ৮০০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা এবং ছাগলের চামড়া ৬০-৭০ টাকা পিচ দরে বিক্রি হয়েছে। দ্বিতীয় দিনে এসে তা কমে গেছে’।
ছোট আড়তদার মো. ফেরদৌস বাংলানিউজকে বলেন, ‘চামড়া বাজারে আছে ঠিকই, কিন্তু হাজারীবাগ, হেমায়তপুর ও পোস্তার সিন্ডিকেটের কারণে আমরা পাচ্ছি না। টাকা নিয়ে বসে আছি, কিন্তু চামড়া কম। এখন এই যে, চামড়া ও টাকা না থাকার কথা অনেক ব্যবসায়ী বলছেন, সেটি কি আসলেই ঠিক, না সিন্ডিকেট- তা নিয়ে প্রশ্ন আছে’।
মৌসুমী ও খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, চামড়ার দাম কমানোর পাঁয়তারা করছেন আড়তদাররা। রাজধানীর অলিতে-গলিতে চামড়ার স্তুপ রয়েছে। চামড়ার কোনো ঘাটতি নেই। নানা অসুবিধার কথা বলে এমন একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন আড়তদাররা- পরে যেন খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি না হওয়ার ভয়ে পানির দামে ছেড়ে দেন। কেনা-বেচা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আড়তদারদের ওপরে।
মৌসুমী ব্যবসায়ী হামিদ মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের দিন ব্যবসা ভালোভাবেই চলেছে। কিন্তু ২য় দিনে এসে আড়তদাররা দাম কমাতে কিছুটা টালবাহানা করছেন। তারা প্রতি বছরই এটি করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৭
এমএসি/এএসআর