চামড়ার এমনই চিত্র পাওয়া গেছে বিভিন্ন এলাকা লোকজনের সঙ্গে কথা বলে।
কাশিপুর গ্রামে হাফিজার রহমান বাংলানিউজকে জানান, গত বছর যতোবড় গরু কোরবানি দিয়েছিলেন এবারও ততোবড় কোরবানি দিয়েছেন।
হাফিজার রহমান একটি ছাগলও কোরবানি দেন। কিন্তু ছাগলের চামড়ার কোনো ক্রেতাই পাননি। অথচ অন্য বছর ক্রেতাদের পদভারে মুখরিত থাকতো গ্রামগুলো।
ক্রেতা না পাওয়ায় সন্ধ্যার দিকে ছাগলের চামড়াটি বাজারে পাঠিয়ে দিয়েছেন। একই তথ্য জানালেন তোফাজ্জল মিয়াও। তার কোরবানির খাসির চামড়ার কোনো ক্রেতার দেখা পাননি। শেষমেষ কোনো ক্রেতা না পেলে বাজারে কসাইয়ের কাছে পাঠাতে চান।
গোপিনাথপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা গোলজার হোসেন জানান, তার গরুর চামড়ার জন্যও কোনো ক্রেতা আসেনি। সন্ধ্যার দিকে ফোন করে একজন চামড়ার ক্রেতাকে ডেকেছেন।
ফলিয়া গ্রামের ফজলু মিয়া বাংলানিউজকে জানান, গতবছরের চেয়ে অর্ধেক দামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। পঁয়ষট্টি হাজার টাকায় কেনা গরুর চামড়া বিক্রি করেছেন পনের'শ টাকায়।
গ্রামের লোকজন চামড়ার হিসেব নিকেশ বুঝেন না। তারা কয়েকজন ক্রেতা যাচাই করে চামড়া বিক্রি করেন। এবার ক্রেতার সংকট দাম যাচাই করার সুযোগ পাননি অনেকে। কেউ কেউ প্রথম ক্রেতার সঙ্গে মুলামুলি করে বসে আছেন দর যাচাই করার জন্য। কিন্তু পরে আর ক্রেতার দেখা পাননি।
বাবনপুর গ্রামের শাহিন মিয়া জানান, গরুর চামড়ার ক্রেতাকে ছাগলের চামড়া দিয়েছেন। কোনো টাকা দেয়নি। যদি বিক্রি হয় তবে দাম দিতে চেয়েছে।
তিনি জানান, গত বছরগুলোতে তাদের গ্রামে পনেরো থেকে বিশজন মৌসুমী চামড়া ক্রেতার দেখা মিলতো। এবার মাত্র দু'জনকে দেখেছেন।
রংপুর অঞ্চলের নিয়ম হচ্ছে কোরবানি শেষ না হতেই ক্রেতারা বাড়ি বাড়ি খোঁজ নিতে শুরু করেন। সেখানে দরদাম করে বেচাকেনা চলে। আবার অনেক ক্রেতা রয়েছেন যারা গরুর হাটেই চামড়ার রফা করে ফেলেন। কোরবানি শেষে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করেন।
তবে এই সংখ্যা খুবই নগন্য। অগ্রিম চামড়া কেনার জটিলতা হচ্ছে, কোরবানির গরুর চামড়া ছাড়ান বেশিরভাগেই আনাড়ি এবং অদক্ষ লোকজন। তারা চামড়া ছাড়তে গিয়ে কেটে ফেলেন বিভিন্ন জায়গায়। এতে মান নষ্ট হয়ে যায় চামড়ার। আর লোকসান গুনতে হয় মৌসুমী চামড়া ক্রেতাদের। সে কারণে হাটে অগ্রিম চামড়া বেচাকেনা কমে যাচ্ছে দিনদিন।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৭
এসআই/বিএস