খুলনা মহানগরীর শেরে বাংলা রোডের পাওয়ার হাউস মোড়ের সবচেয়ে প্রাচীন ও বড় চামড়া পট্টির ব্যবসায়ীরা এসব কথা জানান।
তারা মনে করেন, ফড়িয়াদের দৌরাত্ম্যে ব্যাপারীরা চামড়া কিনতে না পারলে বাছাইকৃত ভালো ও বড় চামড়াগুলো পাচার হয়ে যাবে।
তারা জানান, মৌসুমী ক্রেতারা ভ্যানে ও টলি যোগে পাড়া-মহল্লায় ঘুরে বেশি মূল্যে চামড়া কিনছে।
শেখপাড়া চামড়া পট্টির ব্যবসায়ী মো. শহীদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, সরকারের নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে ফড়িয়া ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়া কেনায় তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন। খুলনা জেলা কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম ঢালী বাংলানিউজকে বলেন, সরকারিভাবে ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ধরা হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। এ ছাড়া প্রতি বর্গফুট বকরির চামড়ার দাম ২০ থেকে ২২ টাকা এবং খাসির চামড়ার দাম ১৫ থেকে ১৭ টাকা নির্ধারণ করা হলেও ফড়িয়া ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা তার চেয়ে বেশি দামে কিনছে।
তিনি জানান, এবারও এক শ্রেণীর অসাধু ফড়িয়া ও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কাছে কোণঠাসা মূল ব্যবাসয়ীরা। ফড়িয়া ও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের মাধ্যমেই পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চামড়া পাচার হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
খুলনা জেলা কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে পাওনা টাকা আদায় করতে না পারায় চরম অর্থসঙ্কটে পড়তে হয়েছে ব্যবসায়ীদের।
এছাড়া খুলনায় কাঁচা চামড়ার জন্য নির্ধারিত মার্কেট না থাকায় বিপাকে পড়তে হয় ব্যবসায়ীদের। পাচারের রুট সম্পর্কে তিনি বলেন, সাতক্ষীরা ও বেনাপোলের সীমান্ত দিয়ে চামড়া পাচারের আশঙ্কা রয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, চামড়া ব্যবসায়ীদের পুঁজি স্বল্পতার সুযোগে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা সীমান্ত এলাকায় ফড়িয়াদের হাতে তুলে দিচ্ছে অর্থ। পাশাপাশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে পাচারকারী দলের সদস্যরাও।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নগরীর শেখ পাড়া চামড়া পট্টিতে সরেজমিন দেখা গেছে, ভ্যান, মিনি পিকআপ ভ্যানে করে চামড়া স্তূপ করা হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে লবণ। সবাই ব্যস্ত যে যার কাজে। গরুর চামড়ার চেয়ে ছাগলের চামড়া কম।
একাধিক ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, খুলনায় চামড়া ব্যবসায়ীদের শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল। পরবর্তীতে সীমান্ত পথে কম মূল্যে চামড়া ভারতে পাচার, ট্যানারি মালিকদের কাছে চামড়া বিক্রি করলেও তার টাকা সময় মতো না পাওয়া, ব্যাংক ঋণ না পাওয়ার কারণে খুলনায় এখন চামড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমে গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৭
আরআইএস