ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

লক্ষ্মীপুর শিশু একাডেমির ক্লাস জেলা পরিষদের বারান্দায়!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৭
লক্ষ্মীপুর শিশু একাডেমির ক্লাস জেলা পরিষদের বারান্দায়! লক্ষ্মীপুর শিশু একাডেমির ক্লাস জেলা পরিষদের বারান্দায়

লক্ষ্মীপুর: ১৯৯৩ সালে লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদ ভবনের নিচ তলা ভাড়া নিয়ে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু দীর্ঘ ২৪ বছর পার হলেও নিজস্ব ভবন নির্মাণ হয়নি লক্ষ্মীপুর শিশু একাডেমির।

শিশুরা জেলা পরিষদ কার্যালয়ের বারান্দার মেজেতে বসে ক্লাস করছে। বছরের পর বছর রোদ-বৃষ্টি ও ধুলাবালির মধ্যে শিশু একাডেমির কার্যক্রম চলে এলেও যেন কারও নজরে আসছে না।

 

এতে ব্যাহত হচ্ছে শিশু বিকাশ এবং সরকারের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য। এনিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং সচেতন মহল অসন্তুষ্ট।
 
শিশুদের মানসিক, সাহিত্য, সাংস্কৃতিক ও বিনোদনমূলক উন্নয়ন ও সুপ্ত প্রতিভার বিকাশের লক্ষ্যে শিশু একাডেমি বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।  

এখানে শিশু বিকাশ ও প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা, সঙ্গীত, চিত্রাংকন, নৃত্য ও আবৃত্তিসহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বিভিন্ন দিবসে একাডেমির শিশুরা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এছাড়াও রয়েছে গ্রন্থাগার সেবা, জাদুঘর ভিত্তিক প্রদর্শনী এবং বই-পত্রিকা বিক্রয়মূলক কার্যক্রম। কিন্তু নিজস্ব ভবন না থাকায় এসব কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
 
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদ কার্যালয়ের বারান্দার মেজেতে শিশুদের চিত্রাংকন ক্লাস চলেছে।  

এর আগে, সকালে হয়েছে বৃষ্টি, বারান্দা ভেজা বৃষ্টির পানিতে তবুও শিশুরা চিত্রাংকনের ক্লাসে অংশ নেয়। বছরের অন্য সময়ে বারান্দায় বসে রোদে পুড়তে হয় এসব শিশুদের।
লক্ষ্মীপুর শিশু একাডেমির ক্লাস জেলা পরিষদের বারান্দায়! 
লক্ষ্মীপুর শিশু একাডেমি সূত্রে জানা গেছে, এখানে সাড়ে তিন বছরের শিশুদের- বিকাশ এবং চার বছর বয়সী শিশুদের-প্রাক প্রাথমিক শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়।

এতে ৪০জন শিশু ভর্তি রয়েছে। তাদের ক্লাস সপ্তাহের শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার।  

এছাড়াও সঙ্গীত, চিত্রাংকন, নৃত্য ও আবৃত্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে ১৯০জন শিশু শিক্ষার্থীর ক্লাস শুক্রবার সকালে ও শনিবার বিকেল হয়ে থাকে।  
 
আল আমিন, রাফসান, যিয়ানসহ শিশুরা বাংলানিউজকে বলে, বারান্দায় বসে ধূলাবালি ও রোদ-বৃষ্টিতে কষ্ট করে তাদের ক্লাস করতে হয়।
 
অভিভাবকরা বাংলানিউজকে বলেন, এমন পরিবেশে শিশুদের মানসিক ও সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ সম্ভব নয়। প্রয়োজন শিশু একাডেমির নিজস্ব ভবন ও শিশুদের জন্য উপযোগী সুন্দর-মনোরম পরিবেশ। এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন অভিভাবকরা।
 
চিত্রাংকনের শিক্ষিকা সুলতানা মাছুমা রিতু বাংলানিউজকে বলেন, নিজস্ব ভবন না থাকায় বারান্দায় অনেক কষ্ট করে শিশুরা ক্লাস করছে। এমন পরিবেশে ক্লাস নেওয়ার উপযোগী নয়। এতে শিশুদের মনযোগ থাকে না।
 
লক্ষ্মীপুর জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল জব্বার বাংলানিউজকে বলেন, নিজস্ব ভবন না থাকায় জেলা পরিষদ ভবনের নিচ তলার চারটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম চলছে। স্থান সংকুলান না হওয়ায় দীর্ঘদিন থেকে বারান্দায় ক্লাস নিতে হচ্ছে।  

তিনি আরও বলেন, শহরের উপর লক্ষ্মীপুর শিশু একাডেমির নিজস্ব ১৬ শতাংশেরও বেশি জমি রয়েছে। ওই জমি নিয়ে মামলা সংক্রান্ত জটিলতা থাকায় নিজস্ব ভবন করা যাচ্ছে না।  
 
লক্ষ্মীপুর শিশু একাডেমির জমি বেদখল থেকে উদ্ধার করে নিজস্ব ভবন নির্মাণ খুবই জরুরি এ ব্যাপারে প্রশাসন প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেবেন এমনটাই প্রত্যাশা সচেতন মহলের।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৭
আরআইএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।